প্লাস্টিক প্রস্তুতকারীদেরই পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে:  মেয়র

‘প্লাস্টিক বোতল প্রতিনিয়ত পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। বিশেষ করে বেভারেজ কোম্পানিগুলো কোমল পানীয় বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করছে। তারা ব্যবসা করে পরিবেশের দূষণ করবে এটা হতে পারে না। প্লাস্টিক দূষণ রোধ করতে প্রস্তুতকারীদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।’

শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মহাখালী টিঅ্যান্ডটি মাঠে প্লাস্টিক দূষণরোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পরিত্যক্ত প্রায় অর্ধ কোটি প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি করা নানা প্রতিকৃতি প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে ঢাকা উত্তর সিটি কর‌পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন Save Earth Save Bangladesh শিরোনামে ৯ দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। প্রদর্শনী চলবে ৭ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত।

প্রদর্শনী উ‌দ্বোধনকা‌লে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ড্রেন বা লেক পরিষ্কার করতে গেলে আমরা বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য পাই। এসব প্লাস্টিকের কারণে ড্রেনগুলো ব্লক হয়ে যায়। ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও সুয়ারেজ লাইনে পয়ঃবর্জ্যের লাইন দেয়া হয়েছে। ৪ জানুয়ারি গুলশান, বনানী, নিকেতন ও বারিধারা এলাকায় অভিযান চালা‌নো হবে।’

মেয়র বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা মানুষের প্রয়োজনেই জলজ প্রাণী, কচ্ছপ, মাছ, বৃক্ষ সবই সৃষ্টি করেছেন। এগুলো পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অথচ আমরা নির্দয় হয়ে এগুলো ধ্বংস করছি। যারা ধ্বংস করছে তারা চিন্তা করেন না আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের, তারা চিন্তা করেন না লাল-সবুজের পতাকার। তারা চিন্তা করেন না কষ্টার্জিত এই দেশটার। দেশপ্রেম থাকলে কেউ দেশের ক্ষতি করতে পারে না।’

এ সময় মেট্রোরেলে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার আহবান জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিজয়ের মাসে আমাদের মেট্রোরেল উপহার দিয়েছেন৷ এটি জনগণের সম্পদ। তাই একে পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সকলের। দয়া করে মেট্রোরেল পরিষ্কার রাখুন, ট্রেন, বাথরুম, প্লাটফর্ম পরিষ্কার রাখুন। আমরাই এর ব্যবহার করবো এবং সুফলতো আমরাই পাব। তাই এটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাও আমাদের দায়িত্ব।’

বিডি ক্লিনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘বিডি ক্লিন শুধু নামে বা কথায় না, কাজের মাধ্যমে, ত্যাগের মাধ্যমে, কষ্টের মাধ্যমে তাদের অবস্থান প্রমাণ করেছে। বিডি ক্লিনের সদস্যরা নিজেদের খেয়ে পরের মোষ তাড়িয়ে পরিবেশের জন্য কাজ করছে। এই ছেলেমেয়েরা মাদকাসক্ত না হয়ে, ঘরে বসে স্মার্ট ফোনে সময় নষ্ট না করে দেশকে, শহরকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে যা সত্যিই প্রশংসনীয়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে বিডি ক্লিন বর্তমানে একটি ব্র‍্যান্ড। এটি ইতিমধ্যে সুনাম অর্জন করেছে। এই সুনাম ধরে রাখতে হবে।'

এ সময় বিডি ক্লিনকে দশ লক্ষ টাকা অনুদান দেয়ার ঘোষণা দেন ডিএনসিসি মেয়র। সবশেষে তিনি দেশের আইন মেনে দেশসেবার জন্য বিডি ক্লিনের সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিডি ক্লিনের প্রতিষ্ঠাতা ফরিদ উদ্দিনসহ অন্যান্যরা।