পিটিয়ে হত্যা: চাকরি চান সেই জুয়েলের স্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর || রাইজিংবিডি.কম
আবু ইউসুফ মো. শহিদুন্নবী জুয়েলের স্ত্রী ও দুই সন্তান
আবু ইউসুফ মো. শহিদুন্নবী জুয়েল ছিলেন রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের গ্রন্থাগারিক। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে গোছানো সংসার ছিল তার। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে কিছু দিন আগে চাকরি হারাতে হয়েছিল তাকে। সম্প্রতি উন্মত্ত জনতার পিটুনিতে প্রাণও হারাতে হয় জুয়েলকে। অভিভাবককে হারিয়ে এখন দিশেহারা তার পরিবারের সদস্যরা। দুই সন্তান ও নিজের ভবিষ্যতের জন্য একটি চাকরি খুঁজছেন জুয়েলের স্ত্রী জেসমিন আক্তার মুক্তা।
গত ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারিতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। পরে মৃতদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলে তারা।
শনিবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরীর শালবন এলাকায় জুয়েলের বাসায় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। জুয়েল হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে জেসমিন আক্তার মুক্তা বলেন, ‘এমন হত্যাকাণ্ড নজিরবিহীন। স্বামীকে হারিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে আমি বড় অসহায়। প্রধানমন্ত্রী যদি একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে ছেলে-মেয়ে দুটোকে মানুষ করতে পারব। আমি আর্থিক সহায়তা চাই না, একটি চাকরি চাই। সেই সঙ্গে আমার স্বামীকে হত্যার দ্রুত বিচার চাই।’
রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন জুয়েলের মেয়ে জেবা তাসনিয়া অনন্যা। তিনি বলেন, ‘আব্বা খুব ধার্মিক মানুষ ছিলেন। তার সঙ্গে এমনটা করা হবে, এটা কল্পনাও করা যায় না।’
জুয়েলের ১২ বছর বয়সী ছেলে ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আবু তাহের মো. আশেক উন নবী বলে, ‘আব্বাকে হারিয়ে আমরা এতিম হয়ে গেছি। এখন আমাদের কে দেখবে?’
শনিবার (৭ নভেম্বর) ভোরে জুয়েল হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল হোসেন ওরফে আলী হোসেনকে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এদিকে, জুয়েল হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ অব্যাহত আছে।
নজরুল/রফিক
আরো পড়ুন