হাওরে হাসছে সূর্যমুখী
রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা। যেখানে বর্ষায় হাওরের অথৈ জলরাশি, আর শুকনো মৌসুমে হাওরের বুকে সবুজ ধানের সমরোহ। সেখানে প্রতিকূল পরিবেশে সূর্যমুখী ফলিয়ে তাক লাগিয়েছেন চাষি মিয়া হোসেন।
নিকলী উপজেলা পরিষদের ঠিক কাছাকাছি যেতেই হঠাৎ চোখে পড়বে হাওরের বুকে সবুজের মাঝে মিয়া হোসেনের সূর্যমুখী ফুলের হাসি। সবুজের মাঝে যেন হলুদ রঙের বিছানো চাদর। সকালের সোনা রোদে পাপড়ি মেলে সূর্যমুখী। দিগন্ত বিস্তৃত ক্ষেতে সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য যে কারো মনে দোলা দিয়ে যায়।
তাছাড়া সরিষা এবং সোয়াবিনের চেয়ে সূর্যমুখীর তেল গুণগত মানসম্পন্ন। বাজারে যেমন রয়েছে এর চাহিদা, তেমনই রয়েছে বাজার মূল্যও। ফলে হাওর এলাকায় দিন দিন বাড়তে পারে সূর্যমুখীর চাষ।
কৃষি সম্প্রসারণের তথ্য মতে, এ বছর সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে ৩৩৫ হেক্টর জমিতে প্রথমবারের মতো পুরো জেলায় সূর্যমুখী চাষ হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে তাদেরকে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে প্রতিটি গাছে ফুল ধরেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সূর্যমুখী চাষে সফলতা আসবে।
চাষি মিয়া হোসেন বলেন,‘আমি প্রায় ১ একর জমিতে সূর্যমুখীর ফলন ফলাইছি। সরকারি বীজ ও সার আমি মাগনাই পাইছি। এইডা দেখতেও সুন্দর আর খুবই বাম্পাইরা ফল। চাষে যদি ২০ হাজার টেহা খরচ অয়। তাইলে ৬০ থেইক্যা ৭০ হাজার টেহা লাভ করতারবাম। আগামীতে আম্বই এইহানো আরও তিনডা ক্ষেত বাড়াইবাম।’
এদিকে প্রতিদিন বিকেলে শহরসহ আশেপাশের এলাকা থেকে সৌন্দর্য পিয়াসুরা দল বেঁধে আসেন এই সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে। অনেকেই বাগানে ঢুকে শখ করে ছবি তোলেন।
মিয়া হোসেন বলেন, ‘শহর থেইক্যা তিনারা আইয়া ছবি তুলে, আমি তো নিষেধ করিনা, কিন্তু আমার বাগানডা পাড়াইয়া অনেক ক্ষয়ক্ষতি করে।’
নরসিংদী জেলার মনোহরদী থেকে ফেসবুকে ছবি দেখে ঘুরতে এসেছেন রাকিবুল হাসান। তিনি বলেন, হাওরের বুকে অন্যান্য ফসলের মাঝে সূর্যমুখী ফুলের এমন বাগান আমি কখন আগে দেখিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ মুহাম্মদ মতিয়ার রহমান বলেন, কিশোরগঞ্জে সূর্যমুখীর আবাদ এর আগে ছিলনা। এবছর প্রথম সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে ৩৬৫ হেক্টর জমিতে জেলায় সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। আশা করি আগামীতে সূর্যমুখীর আবাদ অনেক বাড়বে।
কিশোরগঞ্জ/টিপু
আরো পড়ুন