ঢাকা     সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

রাতারগুল থেকে নৌকাভর্তি বর্জ্য অপসারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৫, ২২ মে ২০২১  
রাতারগুল থেকে নৌকাভর্তি বর্জ্য অপসারণ

বনের অভ্যন্তরের ছোট খালে ভাসছে পানির বোতল, চিপস আর বিস্কুটের খালি প্যাকেট, ওয়ানটাইম গ্লাস-থালাসহ নানা ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য। বেড়াতে আসা পর্যটকের ফেলে যাওয়া এসব বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন রাতারগুলের পরিবেশ। বনের মধ্যে হেঁটে চলার পথেও যেখানে সেখানে পড়ে আছে প্লাস্টিক বর্জ্য। এতে ঘটছে সৌন্দর্যহানি।

এমতাবস্থায় শনিবার (২২ মে) দিনব্যাপী বনে পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। এতে সাতটি নৌকায় করে পুরো বনের খাল চষে বেড়ান অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবী। একযোগে তারা পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে নৌকাবোঝাই করে বর্জ্য অপরসারণ করা হয়েছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, উপজেলার পর্যটন উন্নয়ন ও পরিবেশ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে বনের ভেতরে খাবার গ্রহণ নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপরও বনের পরিবেশ প্রকৃতি রক্ষায় প্রশাসন এবং স্থানীয়দের পাশাপাশি আগত পর্যটকদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি এও বলেন, বনের পরিবেশ ও প্রকৃতির সংরক্ষণে বনবিভাগের তদারকি আরও বাড়াতে হবে। বনের ব্যবস্থাপনা কমিটিকেও তাদের কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে পর্যটকরা যাতে যেখানে সেখানে তাদের ব্যবহৃত বর্জ্য ফেলতে না পারেন, সেই দিকে নৌকার মাঝিদের কড়া নজর রাখতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘ইউএনও গোয়াইনঘাট’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ঘোষণা দিয়ে বনে এ অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকালে রাতারগুল জলারবনে জড়ো হন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া, নৌকার মাঝি, স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দা এবং বনবিভাগের কর্মকর্তারা। পরে তারা পরিচ্ছন্ন অভিযানে অংশ নেন।

দেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেস্ট বা জলার রাতারগুলের অবস্থান সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে। সিলেট নগর থেকে রাতারগুলের দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। করোনা মহামারির কারণে এ বনেও বর্তমানে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

বছরের চার থেকে সাত মাস পানির নিচে থাকা বিশাল এ বনে রয়েছে হিজল-করচ-বরুণগাছের পাশাপাশি বেত, ইকরা, খাগড়া, মূর্তা ও শণসহ জলসহিষ্ণু প্রায় ৭৩ প্রজাতির উদ্ভিদ। এছাড়াও বনে সাপের মধ্যে নির্বিষ গুইসাপ, জলঢোড়া ছাড়াও গোখরাসহ বিষাক্ত অনেক প্রজাতির সরীসৃপ, শতাধিক প্রজাতির পাখি এবং উভচর প্রাণীর অস্থিত্বও রয়েছে।

বনবিভাগের তথ্য অনুসারে, এ বনের আয়তন ৩ হাজার ৩২৫ দশমিক ৬১ একর। এর মধ্যে ১৯৭৩ সালে ৫০৪ একর বনকে বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। তবে, এর বাইরে বেদখলে রয়েছে বেশিরভাগ ভূমি। এর মধ্যে ২০১৭ সালের নভেম্বরে নতুন করে ১৩১ একর জায়গা উদ্ধার করে জলসহিষ্ণু নানা প্রজাতির বৃক্ষরোপণ করে বনায়নের আওতায় নিয়ে আসে বনবিভাগ।

নোমান/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়