ঢাকা     শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২১ ১৪৩১

নবীনগরে রাতে জলাশয় ভরাটের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ১৩ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৯:৩০, ১৩ মার্চ ২০২৪
নবীনগরে রাতে জলাশয় ভরাটের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে প্রভাবশালী মহল রাতের আঁধারে জলাশয় ভরাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের অভিযানের পরও জলাশয় ভরাট বন্ধ হয়নি। তবে অভিযুক্তরা বলছেন, প্রশাসনের অভিযানের পর আর ভরাট করেননি।  

এ ঘটনায় গত ৪ মার্চ জালশুকা গ্রামের মো. শওকত, আলী মিয়া, রহিম মিয়া, নান্টু মিয়া ও খবির উদ্দিন জলাশয় ভরাট বন্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সিএস, আরএস ও বিএসসহ সকল কাগজপত্রে উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামে পানি প্রবাহিত হওয়ার খাল বিদ্যমান রয়েছে। এক সময় এই খাল দিয়ে পুরো ইউনিয়নের লোকজন কৃষি পণ্য নৌকা দিয়ে জমি থেকে বাড়িতে আনা-নেয়া করত। স্থানীয় প্রভাবশালীরা খালটির বিভিন্ন অংশে দখল করেছেন। উপজেলার জালশুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের জলাশয় ভরাটের দায়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নবীনগর উপজেলার তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানকালে অভিযুক্তদের ১ জনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি। অভিযানের সময় বালু ভরাট কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম পাইপ নষ্ট করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের ১ সপ্তাহ পর থেকে জলাশয়টি ব্যক্তি মালিকানার জায়গা দাবি করে রাতের আঁধারে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। জালশুকা গ্রামের আবেদ হোসেন ও তার ভাই মো. রহমান জলাশয়টি ভরাট করছেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, জালশুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে জলাশয় রয়েছে। ওই জলাশয়ের নিচের দিকে বেশিরভাগ অংশ বালু ফেলে ভরাট করা হয়েছে। এর দক্ষিণদিকে গোকর্ণ-কৃষ্ণনগর সড়ক সংলগ্ন খাল রয়েছে। তবে ওই খালেরও অনেকটা জায়গা বালু ফেলে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। ভরাট করার পরও কিছু অংশে পানি দেখা যায়। ওই জায়গা বেশ কিছু শিশু শিক্ষার্থীকে খেলা করতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের নায়েব মো. রাসেল জানান, অনুমতি না নিয়ে জলাশয় ভরাটের অভিযোগে জরিমানা করা হয়। তবে যতদূর জানি জরিমানা করার পর জায়গাটিতে আর বালু ফেলা হয়নি।

ভরাটের সঙ্গে যুক্ত আবেদ হোসেন বলেন, ‘প্রশাসনের অভিযানের পর আমরা আর বালু ফেলিনি। জায়গাটি আমাদের নিজস্ব। স্কুলের মাঠের জন্য এখান থেকে মাটি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন জলাশয় হয়ে যাওয়ায় অনুমতি না নিয়ে ভরাটের কারণে প্রশাসন অভিযান চালিয়েছে। তারা বলছে, ভরাটের অনুমতি লাগবে।’ 

এ ব্যাপারে মো. রহমান বলেন, ‘এটি খাল বা জলাশয় নয়। পৈতৃকসূত্রে পাওয়া এখানে আমাদের ৪০ শতক জমি রয়েছে। আমাদের জমির মাটি বিদ্যালয়ের মাঠ এবং গোকর্ণঘাট-কৃষ্ণনগর সড়ক নির্মাণের জন্য দেয়া হয়েছে। খালের কোনো জায়গা ভরাট করা হয়নি। বরং আমাদের জমির উপর দিয়ে সেচের পানির নালা গিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এলাকায় থাকি না। একটি চক্র আমাদের জমি ভরাটকে জলাশয় ভরাটের নাম দিচ্ছেন।’ 

এ ব্যাপারে বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি শুনেছি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর থেকে জলাশয় ভরাট বন্ধ রয়েছে। তবে আমি যতদূর জানি, এটি তাদের ব্যক্তিগত জায়গা। এক সময় জমি ছিল। স্কুলের মাঠ ও রাস্তা নির্মাণের সময় তাদের জমি থেকে মাটি নিয়েছিল। এটাকে এলাকায় মরা ডোবা বলে। বর্তমানে ভরাট বন্ধ আছে।’ 

নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদের সঙ্গে যোগাযোগগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
 

রুবেল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়