ঢাকা     মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৬ ১৪৩১

জার্নি ফিভারসহ ঠান্ডা-রুচিহীনতায় ভুগছে হাটের গরু

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৯, ১৪ জুন ২০২৪   আপডেট: ১২:২১, ১৪ জুন ২০২৪
জার্নি ফিভারসহ ঠান্ডা-রুচিহীনতায় ভুগছে হাটের গরু

পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর হাটে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে গরু আনা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কারণে গরুগুলোর শরীর ব্যথাসহ জ্বর (জার্নি ফিভার) দেখা দিয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার বৃষ্টিতে দীর্ঘ সময় ভেজার কারণে অনেক গরুর ঠাণ্ডার সমস্যা দেখা দিয়েছে। 

হাটে যেসব গরু অসুস্থ হচ্ছে, তার মধ্যে এই সব সমস্যাই বেশি। পাশাপাশি হাটে অবস্থানরত গরুগুলোর শারীরিক দুর্বলতা, বদহজম, রুচিহীনতা, পেট ফাঁপা, আমাশয় ও রক্ত আমাশয় দেখা দিচ্ছে।

রাজধানীর বিভিন্ন হাটে এমন সব সমস্যা নিয়ে দায়িত্বরত পশু চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হচ্ছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। চিকিৎসক ওষুধ দিলেও ঈদের আগে পশুগুলোর অসুস্থতার কারণে দুশ্চিন্তায় তাদের কপালে ভাঁজ পড়েছে।

শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর মেরাদিয়া ও শাহজাহানপুর হাটে দায়িত্বরত পশু চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

চিকিৎসকরা জানান, জ্বর বা শরীর ব্যথার ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল, ঠাণ্ডা লাগার ক্ষেত্রে এন্টিহিস্টামিন, শারীরিক দুর্বলতার ক্ষেত্রে গ্লুকোজ, রুচিহীনতার ক্ষেত্রে ভিটামিন, পেট ফাঁপা বা গ্যাসের ক্ষেত্রে ডমপেরিডন বা এসিডিটির ওষুধ এবং আমাশয় বা রক্ত আমাশয়ের ক্ষেত্রে মেট্রোনিডাজল বা এন্টিবায়োটিকও দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে জ্বর, ঠাণ্ডা ও রুচির ওষুধের বেশি চাহিদা রয়েছে খামারিদের।

শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে চুয়াডাঙ্গা থেকে মেরাদিয়া হাটে দীর্ঘ সময় ধরে ট্রাকে দাঁড়িয়ে আসার কারণে একটি গরু অসুস্থ হয়ে রাস্তায় বসে থাকতে দেখা গেছে। আর গরুটির ক্লন্তি দূর করতে হাত পাখা ও পোর্টেবল ফ্যান দিয়ে খামারি ও ব্যাপারিকে বাতাস করতে দেখা গেছে। তারা জানায়, ক্লান্ত হয়ে গরুটি রাস্তায় বসে পড়েছে। তাই গরুটিকে হাত পাখা ও ফ্যান দিয়ে বাতাস দেওয়া হচ্ছে।

রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার অস্থায়ী মেরাদিয়া পশুর হাটে দায়িত্বরত পশু চিকিৎসক আব্দুর রহিম রাইজিংবিডিকে বলেন, দূরদূরান্ত থেকে পশুগুলোকে ট্রাকে করে হাটে আনা হয়। পশুগুলো ট্রাকে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকে। এতে তাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়। একপর্যায়ে তা ব্যথায় রূপ নেয়। আমরা এ সমস্যাকে জার্নি ফিভার বলে থাকি। এখন পর্যন্ত জার্নি ফিভার সমস্যা নিয়ে খামারিরা আমাদের কাছে বেশি আসছেন। তবে পশুদের ঠাণ্ডা লাগা, শারীরিক দুর্বলতা, বদহজম, রুচিহীনতা, পেট ফাঁপা, আমাশয় ও রক্ত আমাশয় সমস্যা নিয়েও আমাদের কাছে আসছেন অনেকে। খামারি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পশুদের সমস্যার কথা শুনে ওষুধ দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বড় সমস্যা পাইনি। হাটে জায়গার স্বল্পতা থাকে। অনেকগুলো পশু একসাথে থাকার কারণে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় দেখা দেয়।

কুষ্টিয়া থেকে মেরাদিয়া হাটে পশু নিয়ে আসা খামারি বলেন, তিনদিন আগে ৬টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। আমার দুইটি গরুর ঠাণ্ডা লেগেছে। আর একটির জ্বর রয়েছে। তাই ওষুধ নিতে এসেছি। হাটে আসার পর গরুগুলোর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আর বৃহস্পতিবার গরুগুলো অনেকক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজেছে। তাই গুরুগুলো ঝিম ধরে আছে।

জামালপুর থেকে মেরাদিয়া হাটে পশু নিয়ে আসা খামারি বলেন, আমার কয়েকটা গরু খাচ্ছে না। সে জন্য ভিটামিন ও স্যালাইন নিতে এসেছি। ওষুধ খেয়ে যদি গরুর শরীর ভালো না হয় তাহলে ভালো দামে গরু বিক্রি করতে পারব না।

/টিপু/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়