‘ফেল করে ভেঙে পড়লে হবে না’
সচিবালয় প্রতিবেদক : শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, এবারের পরীক্ষায় যারা ফেল করেছে তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। একটি পরীক্ষায় পাস না করলে জীবনের সব কিছু পাল্টে যায় না। আগামীতে আরও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ আসবে। ফেল করে ভেঙে পড়লে চলবে না, চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সফলতা অবশ্যই আসবে।’
এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে রোববার দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফেল করা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার খাতা ভালভাবে মূল্যায়নের কারণে এমন ফলাফল হয়েছে। তবে এতে আমরা বিস্মিত হইনি। মূলত খাতা মূল্যায়নে এবং ফলাফল নিয়ে যাতে কোনো প্রকার প্রশ্ন না ওঠে এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় খাতা মূল্যায়নে বাংলাদেশ এক্সামিনেশন ডেভেলপমেন্ট ইউনিটকে দায়িত্ব দেয়। তারা সঠিকভাবে খাতা মূল্যায়ন করায় পরীক্ষার ফলাফলে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। ধীরে ধীরে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ বলেন, আগে পরীক্ষার খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হতো না বলে অভিযোগ পেতাম। যার ফলে দেখা যেত ভালো ছাত্ররা খারাপ আর খারাপ ছাত্ররা ভালো ফলাফল পেত। খাতার ওজন দেখে নম্বর দেওয়ার অভিযোগও শুনেছি। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ এক্সামিনেশন ডেভেলপমেন্ট ইউনিট গঠন করে দেওয়া হয়। গত তিন বছর ধরে তারা কাজ করছে। শিক্ষক ও হেড এক্সামিনার ঠিকমতো খাতা দেখছেন কিনা এই কমিটি আবারো খাতা দেখে মূল্যায়ন করে থাকে।
শিক্ষার মান বেড়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে শিক্ষার মান বেড়েছে। তবে গুণগত মান বৃদ্ধিই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নানা সমস্যা কাটিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা চেষ্টা করছি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আগে পরীক্ষা অনিশ্চিত ছিল। এ বিষয়টি আমরা শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে এসেছি। পরীক্ষা শেষের ৬০ দিনের মধ্যে আমরা এখন ফলাফল প্রকাশ করে থাকি। এ বছর ২৩ এপ্রিল পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। ২৫ মে শেষ হয়েছে। ৫৯তম দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হলো।
প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রতিরোধে সফলতার দাবিও করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র রক্ষা করা একটা কঠিন কাজ। কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে এমন কঠিন কাজেও আমরা সফল হয়েছি। প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে এ কাজ সম্ভব হয়েছে।
শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ তুলে ধরেন নাহিদ। তিনি বলেন, আগের বছরের ঝরেপড়া ও ফেল করা শিক্ষার্থীরা গত বছরের মূল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল বলে সংখ্যা বেশি ছিল। এ বছর ঝরে যাওয়া ও ফেল করা ছাত্র কম ছিল, তাই সংখ্যা কমেছে।
বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিগত সময়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কমে যাওয়ায় আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয় ছিল। এজন্য আমরা পদক্ষেপ নিই। এ বিষয়ে ক্যাম্পেইন করা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং যন্ত্রপাতিও কেনা হয়েছে। ফলে এ বছর বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী বেড়েছে।
কুমিল্লার ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফলাফল মূল্যায়ন না করে বলা ঠিক হবে না।
আগের পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হবে বলেও জানান তিনি।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জুলাই ২০১৭/নঈমুদ্দীন/মুশফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন