ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

সাহস না থাকলে ‘জীবন থেকে নেয়া’ লিখতে পারতেন না 

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৩:২৯, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১
সাহস না থাকলে ‘জীবন থেকে নেয়া’ লিখতে পারতেন না 

অভিনেতা, লেখক, চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন। চলচ্চিত্র পরিচালনার পাশাপাশি কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখে প্রশংসিত হয়েছেন। লেখালেখির মাধ্যমে সৃজনশীল জীবন শুরু করেন তিনি। তাঁর প্রথম কবিতা ছাপা হয় বিখ্যাত ‘দেশ’ পত্রিকায়। তাঁর কলমে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গল্প ও উপন্যাস। যদিও চলচ্চিত্রকার হিসেবেই তিনি সমধিক পরিচিত।

আমজাদ হোসেন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন সাজ্জাদ হোসেন দোদুল। দেশের সাধারণ মানুষের মতো বাবাকে নিয়ে তার গর্বও কম নয়। দোদুল বলেন, ‘বাবাকে নিয়ে অবশ্যই গর্বিত আমি। কিন্তু খারাপও লাগে যখন দেখি আমজাদ হোসেনের মতো এই দেশের জন্য যারা অবদান রেখে গেছেন, তাঁদের অনেকের খবর এখন আর কেউ রাখেন না। শামসুর রাহমান ‘স্বাধীনতার কবি’ হয়েও আজ বিস্মৃতপ্রায়। তাঁদের জন্মদিন বা মৃত্যুবার্ষিকীও ঠিকমত পালিত হয় না। তাঁদের লেখা নিয়ে গবেষণা হয় না। তাঁদের লেখা ইংরেজিতে অনুবাদ হয় না। আমজাদ হোসেন চর্চা কেন্দ্র থেকে আমি সেই কাজগুলো করবো। বাংলাদেশে এখনও কেউ সাহিত্যে নোবেল পায়নি। এটা আমাকে খুব ভাবায়।’ 

বাবা আমজাদ হোসেনকে নিয়ে দোদুলের কোনো অপ্রাপ্তি নেই। দোদুল বলেন, ‘আমার কোনো আক্ষেপ নেই। তিনি নিজের প্রতিভা প্রকাশের জন্য নিজেকে তৈরি করেছেন, নিজেই শ্রম দিয়েছেন। এখন তাঁকে আমাদের লালন করা দায়িত্ব।’

বাবার সন্তান হিসেবে নিজেকে কতাটা তৈরি করতে পেরেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে দোদুল বলেন, ‘আমি সবসময় বাবার সন্তান হিসেবে নিজেকে তৈরি করায় ব্যস্ত রাখি। হয়তো আপনি বলতে পারেন- আপনি তো সিনেমা নির্মাণ করেননি। সিনেমার বাজার নষ্ট হয়ে যাওয়াতে এখনও সিনেমা নির্মাণ করতে পারিনি। তবে নতুন বছর আমি একটি সিনেমার কাজ শুরু করবো। কষ্ট হলেও নিজেই অর্থ সংগ্রহ করবো। জমি বিক্রি করে হলেও সিনেমাটি বানাবো। সিনেমাটি মুক্তি পেলে বুঝতে পারবেন আমজাদ হোসেনের সন্তান হিসেবে নিজেকে কতটা তৈরি করতে পেরেছি।’

দেশের কাছে অনেক পেয়েছেন উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেন, ‘আমার বাবা বাংলাদেশের মানুষের কাছে যে ভালোবাসা পেয়েছে তা অভাবনীয়! তাঁকে শেষবার দেখার জন্য জাতীয় শহীদ মিনারে যে জমায়েত হয়েছিল তা ইতিহাস। একবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা আপার সঙ্গে রোকেয়া আপা পরিচয় করিয়ে দেন। তখন আপা আমাকে বলেন, ‘তুমি কোন বাবার সন্তান জানো- যে ‘জীবন থেকে নেয়া’ লিখতে পারে; তোমার বাবার বুকভরা সাহস। আর সাহস না থাকলে জীবন থেকে নেয়া ওই সময়ে তিনি লিখতে পারতেন না।’

ঢাকা/তারা

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়