শিল্পী সমিতির পিকনিকে হাতাহাতি, থানা-পুলিশের দ্বারস্থ ভুক্তভোগী!
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বার্ষিক বনভোজন। এবারের বনভোজনে খাবারে অব্যবস্থাপনা, তারকা শিল্পীদের অনুপস্থিতি, জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিলসহ নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এমনকি হাতাহাতি-মারামারির মতো ঘটনাও ঘটেছে; যা থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে!
ভুক্তভোগীর মা, অভিনেত্রী নিশুর দাবি, তিনি মামলা করেছেন। শিল্পী সমিতির সদস্য নিশু জানান, তার মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। প্রথমে শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ জানান। কিন্তু একদিন পার হওয়ার পরও সমাধান পাননি। এরপর মামলা দায়ের করেন নিশু।
এ বিষয়ে নিশু বলেন, ‘বিষয়টি আমি শিল্পী সমিতিকে অবগত করেছি। এ নিয়ে নিপুণকে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। শাহনূর ও জেসমিন আমাকে কল করেছিল। তারা বলেছিলেন, আমরা দেখছি। তারপর আর খবর নেই। একদিন পার হয়ে গেছে। নিপুণ একবার ফোন করতে পারত। কিন্তু করেনি। এটা আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে।’
মামলা দায়ের করার বিষয়টি উল্লেখ করে নিশু বলেন, ‘আমি বিচার চেয়ে মামলা করেছি। এ নিয়ে আগামীকাল সংবাদ সম্মেলন করব, তখনই বিস্তারিত বলব। আজ আমি ঈদের একটি নাটকের শুটিংয়ে ব্যস্ত আছি, যে কারণে কথা বলতে পারছি না।’
আক্ষেপ করে এই শিল্পী বলেন, ‘ঘটনা ঘটার একদিন পার হয়ে গেলেও কেউ আমাকে সহযোগিতা করেনি। মামলা করার পর সবাই এখন সহযোগিতা করতে চাচ্ছে। আমি এখন আর তাদের সহযোগিতা নেব না। শিল্পী সমিতি আমাকে সহযোগিতা করেনি।’
কোন থানায় এবং কার কার নামে মামলা করেছেন, তা আগাম জানাতে চাননি এই শিল্পী। সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সেদিনকার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিশু বলেন, ‘বড়রা সবাই চেয়ার খেলা খেলতেছিল। সেখানে রাখা চেয়ারে গিয়ে আমার মেয়ে বসে পড়ে। মেয়েকে না করেছিলাম ওখানে যেতে। কিন্তু ও খেলার জন্য যায়। ছোট মানুষ অতটা বুঝে না, শখ করে গিয়েছিল খেলতে। পেছনে আঁখি নামের একজন ভদ্র মহিলা ছিলেন, আমি তাকে চিনি না। আর ছিলেন স্বপ্না। আমার বাচ্চা চেয়ারে বসা মাত্রই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। ফেলে দেওয়ার জন্য আমার মেয়ে উচ্চ স্বরে কথা বলা মাত্রই থাপ্পড় দেয়। এরপর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। আমি এগিয়ে গেলে আমাকে মাথায় পেছন দিয়ে আঘাত করে ওরা। তখন আমার মেয়ে ওদের ধরতে এগিয়ে যায়। তারপর আবার আমার মেয়ের গায়ে হাত দেয় আঁখির ছেলে। ৩৫ বছরের এক যুবক আমার বাচ্চা মেয়ের গায়ে হাত দেয়। যিনি গায়ে হাত দিয়েছেন, তিনি শিল্পী সমিতির সদস্য না। কিন্তু আমার মেয়ের দুটি পরিচয়। প্রথমত নায়িকা নিশুর মেয়ে, দ্বিতীয়ত শাবনূরের ভাতিজি। আমি শিল্পী সমিতির একজন সদস্য হওয়া সত্ত্বেও সমিতি থেকে বিচার পাইনি।’
গত ২ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় শিল্পী সমিতির বনভোজন। পিকনিকে হাতাহাতির ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। ৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক কিশোরীর সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা বলছেন এক ব্যক্তি। এরপর পরিস্থিতি মোড় নেয় ঝগড়ায়, তারপর তা হাতাহাতিতে গড়ায়। এসময় উপস্থিত অন্যান্যরা ঝগড়া ও হাতাহাতি ঠেকাতে এগিয়ে যান। গতকাল রাতে ভিডিওটি নেট দুনিয়ায় প্রকাশ হওয়ার পরই তা ছড়িয়ে পড়ে।
ভাইরাল ভিডিওতে নিশুকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বাচ্চা এমন একটি জায়গায় অসম্মানিত হবে তা আসলে মেনে নেয়া যায় না। আমার মনে হয় না শিল্পী সমিতি এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেবে। আমার সিনেমা দরকার নেই, আমার বাচ্চা আগে। আমি ভুলে যাব আমার ২২ বছরের সিনেমার ক্যারিয়ার। শিল্পী সমিতির কাছে আমার কোনো প্রত্যাশা নেই। কারণ ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর আমি নিপুণকে কল দিলাম কিন্তু সে কল ধরল না।’
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
আরো পড়ুন