হামের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সতর্ক করলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, জরুরি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি দেশ হামের প্রাদুর্ভাবের উচ্চ বা খুব উচ্চ ঝুঁকিতে পড়বে।
সংস্থাটির তথ্যমতে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে হামে আক্রান্তের হার বেড়েছে ৭৯ শতাংশ। জরুরি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে ২০২৪ সালে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে মোড় নেবে।
২০২০ সালে করোনা মাহামারি শুরু হওয়ার পর প্রথম দুই বছর বিশ্বের অধিকাংশ দেশে শিশুদের হামসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগের টিকাদান কর্মসূচি থেমে গিয়েছিল বা স্থবির পর্যায়ে ছিল। বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চলে হামের প্রাদুর্ভাবের যে উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রধান কারণ এটিই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হাম ও রুবেলা বিষয়ক জ্যেষ্ঠ টেকনিক্যাল উপদেষ্ঠা নাতাশা ক্রোক্রফ্ট মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘গত দুই বছরে স্বাভাবিক টিকাদান কর্মসূচিতে বড় একটি শুন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত টিকা দিয়ে সেই শুন্যতা পূরণ না করলে, হাম ঝাঁপিয়ে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘ডেটা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি দেশ চলতি বছরের শেষ নাগাদ হামের প্রাদুর্ভাবের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকবে।’
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভাইরাসজনিত রোগ হাম খুবই ছোঁয়াচে এবং বাতাসের মাধ্যমে এটি ছড়ায়। পাঁচ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী শিশুরা এই রোগের আক্রমণের শিকার হয়। দুই ডোজের একটি টিকা হাম থেকে সুরক্ষা দেয়।
নাতাশা বলেন, ‘ইতোমধ্যে অনেক দেশে হামের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে হামের মহামারির ঝুঁকি অনেক বেশি। আমরা উদ্বিগ্ন যে, ২০২৪ সাল ২০১৯ সালের মতো হতে যাচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে হামে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২ লাখ ৭ হাজার ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালে হামে মৃত্যুর পরিমাণ বিগত ২৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। এ প্রসঙ্গে সেসময় সিডিসির মহামারি বিশেষজ্ঞ রব লিংকিন্স বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে হামে যে বিপুল সংখ্যক মৃত্যু দেখা গেছে তা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নাজুক অবস্থা এবং অপর্যাপ্ত টিকাদানেরই নিদারুণ ফল। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, শিশুরা এমন একটি রোগে মারা যাচ্ছে যা প্রতিরোধে একটি কার্যকর টিকা ৫০ বছর ধরেই আছে।’
/ফিরোজ/