ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

এক বছরে সাবমেরিন ক্যাবলের মুনাফা আড়াইশ কোটি টাকা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৩, ৩ ডিসেম্বর ২০২২  
এক বছরে সাবমেরিন ক্যাবলের মুনাফা আড়াইশ কোটি টাকা

রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৪১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা আয় করেছে। কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার ৫৬ কোটি টাকা লভ্যাংশ পেয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে অর্থাৎ পাঁচ বছর আগে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির রাজস্ব আয় ছিল ১ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে উল্লিখিত তথ্য জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজম আলী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগাযোগমন্ত্রী সাবমেরিন ক্যাবলকে দেশের অত্যন্ত অপরিহার্য টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো বলে উল্লেখ করেন। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানিকে সময়োপযোগী প্রযুক্তিতে দক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশ ও জনগণের প্রতি সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির দায় আছে। ২০০৮ সালে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম ছিল ২৭ হাজার টাকা। আমরা ইন্টারনেটের দাম সাশ্রয়ী করতে তা মাত্র ২৪০ টাকায় নামিয়ে এনেছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বিনামাশুলে ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে তৎকালীন সরকার বাংলাদেশকে ১৪ বছর তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়া থেকে পিছিয়ে রাখে। ২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির হাত ধরে সেই পশ্চাদপদতা অতিক্রমই কেবল করিনি, বরং হাওর, দ্বীপ, চরাঞ্চল ও দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলসহ দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’ 

তিনি বলেন, ‘দেশে ২০০৮ সালে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো এবং ব্যবহারকারী ছিল মাত্র ৭ লাখ। বর্তমানে দেশে ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে এবং ৩৮৪০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি এককভাবেই ২৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করছে। অবশিষ্ট ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করছে ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল কোম্পানিগুলো (আইটিসি)।’

বাংলাদেশের জন্য তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযুক্তি ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ায় বাংলাদেশের আরও একটি ঐতিহাসিক অর্জন বলে উল্লেখ করেন কম্পিউটারে বাংলা ভাষার এই প্রবর্তক। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ, ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু এবং তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগে নির্বাচনী ইশতেহারে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সফলতা তুলে ধরেন মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ২০১৯ সালে আমরা কাজ শুরু করেছি।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘২০২৫ সাল নাগাদ দেশে ৬০০০ জিবিপিএসের বেশি আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথের প্রয়োজন হতে পারে। আমাদের নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পরও হাতে যথেষ্ট পরিমাণ ব‌্যান্ডউইথ আছে ও থাকবে। দেশে নেটওয়ার্কের বর্ধিত চাহিদা মিটিয়ে ফ্রান্স, সৌদি আরব ও ভারতের ত্রিপুরায় ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করা হচ্ছে। ভুটান ও নেপাল এবং ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করার বিষয়ে প্রক্রিয়া চলছে। তৃতীয় সাবমেরিন সংযোগ সম্পন্ন হলে ২০২৫ সালে অতিরিক্ত আরও প্রায় ১৩২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সংযুক্ত হবে। এছাড়া, প্রথম সাবমেরিন ক‌্যাবলে আরও ৩৮০০ জিবিপিএস ব‌্যান্ডউইথ সংযুক্ত হচ্ছে অর্থাৎ বর্তমানে বিদ‌্যমান ক‌্যাপাসিটির চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি।’

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ইন্টারনেটকে ডিজিটাল বাংলাদেশের মহাসড়ক আখ‌্যায়িত করে দেশের মানুষের ডিজিটাল জীবনধারা নিশ্চিত করতে প্রতিটি অঞ্চলে নেটওয়ার্ক সুবিধা পৌঁছে দিতে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সাবমেরিন কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান, বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ এবং টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমানসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ সাবমেরিন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজম আলী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

হাসান/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়