ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘সবাই এগিয়ে এলে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
‘সবাই এগিয়ে এলে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব’

দুর্যোগে সব স্তরের মানুষ এগিয়ে আসলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, আগে দেশে প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস হতো। কিন্তু এখন সেই অবস্থা নেই। এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমে এসেছে। তবে দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব না, প্রাণহানি সহনীয় কিংবা প্রতিরোধ বা ক্ষতি কমানো সম্ভব। তবে যেকোনো দুর্যোগ সরকারের একার পক্ষে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, এজন্য সব স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি।

বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণে কর্মকাঠামো এবং প্রাইভেট সেক্টর ওয়ার্কিং গ্রুপের কর্মপরিধি শীর্ষক ওই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের ডিজি বলেন, আমাদের উন্নয়নকাজ চলবে। দুর্যোগে উন্নয়নকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বলে সমালোচনা বা থেমে থাকলে হবে না। আর সব সরকার করে দেবে না। ব্যবসায় লাভবান হবেন, কিন্তু দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা রাখবেন না তা হবে না। নিজে সচেতন হই, শিখি, নিজের ঘরে স্ত্রী-সন্তানকে শেখাই। দুর্যোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি, নিরাপত্তা সরঞ্জাম ক্রয় করে ঘরে রাখি।

ভূমিকম্প ও বজ্রপাতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে শুধুমাত্র বজ্রপাতে তিন শতাধিক মানুষ মারা যাচ্ছে। তবে এই হার শহরের চেয়ে গ্রামেই বেশি। কারণ শহরে টাওয়ার বা আর্থিং থাকায় এটি কম ঘটে। বজ্রটি টাওয়ার বা আর্থিংয়ে গিয়ে পড়ে। কিন্তু গ্রামে লোকজন মাঠে-ঘাটে কাজ করে। সেখানেই বেশি ঘটছে। আর একটি অত্যাধুনিক যন্ত্র আছে, সেটি এই বজ্রপাত কোন কোন এলাকায় হবে, তা শনাক্ত করে। কিন্তু যন্ত্রটি সবখানে বসানো সম্ভব নয়, একটি যন্ত্রের দাম ১০ লাখ টাকা। কিন্তু সেটি মাত্র ১০০ মিটারের মধ্যে কাজ করে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তালগাছ আসলে বজ্রপাত নিরোধ করে, এটা বৈজ্ঞানিকভাবে কোথাও প্রমাণিত হয়নি। তবে হাওর অঞ্চলে এ ঘটনাগুলো বেশি ঘটছে। আগে মানুষ এত বাইরে বের হতো না। এখন মানুষ এগ্রেসিভ, ফলে তারা বাইরে ‍যাচ্ছে। এখন যে যন্ত্রটি আবিষ্কার হয়েছে, সেটি ৩০ মিনিট আগে মেসেজ দিতে সক্ষম। ফলে আমরা যদি ওইসব এলাকায় আগেভাগে মোবাইলে মেসেজ দেই যে, বজ্রপাত ঘটতে পারে- এমন মেসেজ দিয়ে সচেতন করতে পারি, তবে মৃত্যু অনেকাংশে কমে আসবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও বজ্রপাতের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে।

সাম্প্রতিককালে রাজধানীর কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা একটু সচেতন হলেই বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতো। অনেক ব্যবসায়ী নগদ টাকা, ভাউচার রেখে গেছেন। সব পুড়ে ছাই হয়েছে। কোটিপতি ব্যবসায়ী আজ ফকির হয়েছেন। অথচ একটু সচেতনতাই আমাদের নিরাপদ করতে পারত।

সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বড় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আগে অল্প খরচ আর সচেতনতাতেই সম্ভব যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করা। অস্ত্র থাকলেই তো হবে না, প্রশিক্ষণ লাগবে। ফায়ার অ্যালার্ম চালানো, পানির রিজার্ভ বাড়ানো ও হাইড্রেন্ট ব্যবস্থা ও চালানো, অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞানও অর্জন করতে হবে। আমাদের অনেক বড় ভবনে ইমার্জেন্সি সিঁড়ি নেই। ভবনে ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখা, নিয়মিত বৈদ্যুতিক লাইন চেক করা। ভেজা কাপড় দিয়েই প্রাথমিকভাবে ফাইট করা যায়। কমন (প্রচলিত) কিছু জ্ঞান প্রয়োগেই আগুন প্রাথমিক পর্যায়েই প্রতিরোধ করতে পারি। তবে সতর্কতা জরুরি।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন অধিদফতরের পরিচালক (এমআইএম) নিতাই চন্দ্র দে সরকার। তিনি বলেন, ১০৯০ নম্বরকে আমরা প্রমোট করছি। আগে টোল ছিল, সেটা ফ্রি করা হয়েছে। যে কেউ এখন খুব সহজেই এই নম্বরে ডায়াল করে দুর্যোগ ও আবহাওয়া সম্পর্কে জানতে পারছে।

/মাকসুদ/এসবি/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়