ঢাকা     সোমবার   ১৭ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ৩ ১৪৩১

জলাধার নষ্ট করে দালান-কোঠা করা যাবে না: প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৮, ২৫ মে ২০২৪   আপডেট: ১৫:৩০, ২৫ মে ২০২৪
জলাধার নষ্ট করে দালান-কোঠা করা যাবে না: প্রধানমন্ত্রী

রাজধানী ঢাকার জলাধার সংরক্ষণ এবং পার্কগুলোর যত্ন নিয়ে সেখানে সবুজ অরণ্য গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র গাছ লাগানোরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (২৫ মে) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে বঙ্গবাজারে এক সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

চার প্রকল্প হলো- বঙ্গবাজারে ‘বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতান’, পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইসগেট গেট পর্যন্ত আট লেনের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণি (ইনার সার্কুলার রিং রোড)’, ধানমন্ডি হ্রদে ‘নজরুল সরোবর’ এবং শাহবাগে ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান’ আধুনিকীকরণ।

এ সময় প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আর্কিটেক্টদের একটা খামখেয়ালিপনা আছে। পুকুর দেখলেই দালান করার প্রবণতা আছে তাদের। অথচ এই ঢাকা শহর পুকুর খালে ভরপুর ছিল। বেশিরভাগ খাল বন্ধ, নয় বন্ধ করে দালান-কোঠা করা হয়েছে। পুকুরগুলো বন্ধ। খালগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। দয়া করে যেখানেই পরিকল্পনা নেন, জলাধার সংরক্ষণ রাখবেন। জলাধার সংরক্ষণ রাখলে বাতাসও পরিচ্ছন্ন থাকে, এত গরম হয় না। সেদিকে সবাইকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। যায়গা পেলেই যেখানে সেখানে পরিকল্পনা ছাড়া নির্মাণ কাজ করা যাবে না।

রাজধানীর পার্ক ও খেলার মাঠ সংরক্ষণে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, যখন পার্কগুলো করা হয় খুব সুন্দর থাকে। কিছুদিন পর দেখা যায়, পার্কে বাচ্চাদের খেলার জিনিস নষ্ট, ময়লা আবর্জনা অথবা মাদক সেবনের যায়গা হয়ে যায়। এখানে ওয়ার্ড কমিশনার, সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় লোক সবাই আছেন। আপনাদের এলাকা আপনাদেরই দেখতে হবে। পার্কগুলো যেন যথেচ্ছ ব্যবহার না হয়, মাদক সেবনের যায়গা না হয়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যার যার ওয়ার্ডের সৌন্দর্য বর্ধন ও পরিচ্ছন্নতা কিন্তু আপনাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। মনে রাখতে হবে, জনগণ ভোট দিয়ে আপনাদের নির্বাচিত করেছে। এই কাজগুলো করার দায়িত্ব আপনাদেরই। সে ক্ষেত্রে সরকার ও সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবেন।

পরিবেশ রক্ষায় গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ছাদে, বারান্দায় বা বাসার সামনে ফুলের বা ফলের গাছ লাগান। যাদের গ্রামে বাড়ি আছে, তারা সেখানেও গাছ লাগান। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে এটা খুব প্রয়োজন।

পুরান ঢাকার সঙ্গে নিজের আত্মিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, পুরান ঢাকার সঙ্গে আমাদের একটা সম্পর্ক রয়েছে। বাবাকে গ্রেপ্তারের পর আমরা দীর্ঘদিন নাজিরা বাজার প্রয়াত মেয়র হানিফের বাড়িতে ছিলাম। পরে বন্যা হলে সেখানে থেকে আরমানিটোলার বাঘওয়ালা বাড়িতে ছিলাম। আমার ছোটবোন রেহানার জন্ম কিন্তু মিটফোর্ড হাসপাতালে হয়েছে। সে কিন্তু পুরোই পুরান ঢাকার লোক। কাজেই পুরান ঢাকার সঙ্গে আমাদের আলাদা একটা নাড়ির টান আছে।

তিনি বলেন, পুরান ঢাকার মানুষ ভালো থাকুক, সেটাই আমার লক্ষ্য। সেই চিন্তা করে জনগণ যাতে যথাযথভাবে সেবা পায়, তাই ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে দুইভাগে ভাগ করি। যেগুলো ইউনিয়ন ছিল, সেগুলোকেও সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনা হয়েছে, সেখানেও উন্নয়নের নানা প্রকল্প নিয়েছি। বাস্তবায়ন হচ্ছে।

রাজধানীতে পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, এই ঢাকায় পানির হাহাকার ছিল। পানির জন্য বিএনপির একজন এমপি ধাওয়া খেয়ে দৌড়ে পালিয়েছেন। আমরা এসে সেই সংকট দূর করেছি।

তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার আগে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ছিল না। আমরা এসে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করেছি। আপনারা বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন। রুমে না থাকলে ফ্যান বন্ধ রাখবেন। লাইট অফ রাখবেন। মোবাইল চার্জ দেওয়া শেষ হলে সুইচটা অফ করে রাখবেন। চার্জারের লাইটেও বিদ্যুৎ টানে। এগুলোর দিকে খেয়াল রাখবেন। পানি ব্যবহারেও সাশ্রয়ী হতে হবে।

এ সময় আসন্ন ঈদুল আজহায় যত্রতত্র পশু কোরবানি না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক যায়গায় আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ব্যবস্থা রাখতে হবে।

পারভেজ/কেআই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়