ঢাকা     শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ ||  শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

নারী শিক্ষা ও নারীর প্রতি সম্মান একটি রীতিতে পরিণত করেছিলেন খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা

রাশেদা কে চৌধূরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৪:৫৭, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
নারী শিক্ষা ও নারীর প্রতি সম্মান একটি রীতিতে পরিণত করেছিলেন খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা

হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) ছিলেন সমাজের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ। তিনি চাইলে সুখ শান্তি আর আড়ম্বর জীবন কাটাতে পারতেন। কিন্তু আড়ম্বর জীবন না কাটিয়ে মানব সেবায় ব্রত হয়েছিলেন। শিক্ষায় তার অবদান ছিল অনবদ্য। শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করেছিলেন আহ্ছানউল্লা। তৎকালীন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ ছিলেন মুসলমান। এই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়েছিলেন এবং বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

নারী শিক্ষার জন্যেও হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। নিজ পরিবারেও তিনি নারী শিক্ষার চর্চা করেছেন। তারই পুত্রবধূ ফজিলতুন্নেসা জোহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম নারী শিক্ষার্থী ছিলেন। পরিবার থেকে নারী শিক্ষা উৎসাহের এক অনবদ্য উদাহরণ ছিল তার পরিবার। আমরা এখনও দেখি সমাজে অনেক কূপমন্ডুক আছেন। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) নীতি নৈতিকতা ও মূল্যবোধে ছিলেন অতুলনীয়। ঘরে বাইরে যে চর্চাটি সবসময় তিনি করতেন তা হলো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেওয়া। বর্তমান সমাজে নীতি নৈতিকতার অবক্ষয় আমরা লক্ষ্য করে থাকি। আমাদের তরুণ প্রজন্ম তার জীবন-দর্শন থেকে যদি কিছু বুঝতে ও শিখতে পারে, অনুশীলন করতে পারে তাহলে আমাদের সমাজের অনেক উন্নতি হবে।

বর্তমানে আমাদের সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয় অনেক বেশি। আমাদের নতুন প্রজন্ম বিপথগামী হয়ে যাচ্ছে। তারা লেখাপড়া শিখছে। কিন্তু শিক্ষাকে সম্মান দিচ্ছে না, পরিবারের সদস্যদের সম্মান দিচ্ছে না। 

পরিবারে নারীর প্রতি সম্মান, এই দর্শনটি আমরা খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) জীবন দর্শন থেকে নিতে পারি। তিনি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে নারী শিক্ষা ও নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনকে একটি রীতিতে পরিণত করেছিলেন। আমাদের উচিত বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই রোল মডেলের জীবনদর্শন তুলে ধরা।

হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এর ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার জীবনের আলোখ্য তুলে ধরতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন যে উদ্যোগটা নিয়েছে এর জন্য তাদেরকে স্বাগত জানাই। এবং তার অবদান, জীবনচর্চা ও দর্শন যদি নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়, তাহলে তরুন প্রজন্ম তার সম্পর্কে জানতে পারবে। আশা করব তারা যেন নতুন প্রজন্মের কাছে এই রোল মডেলের জীবন দর্শন, অবদান, নিবেদন বা যা করে গেছেন পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য, তা তুলে ধরবে। এবং তার এই মূল্যবোধ যেন নতুন প্রজন্ম ধারণ করে সেই লক্ষ্যে কাজ করে। 

আমাদের উচিৎ খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এর জীবন দর্শন ও অবদান সকল যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া। আমাদের নতুন প্রজন্ম রোল মডেল খুঁজে পায় না। কিন্তু তিনি একজন রোল মডেল হিসেবে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। 

লেখক: রাশেদা কে চৌধূরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
নির্বাহী পরিচালক, গণসাক্ষরতা অভিযান।

/স্বরলিপি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়