‘চুপি চুপি চোখের পানি মোছার দিন শেষ’

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) উইমেন্স উইং আয়োজিত প্রতিবাদী নারী সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ‘আমরা সচেতন হবো। ঘুরে দাঁড়াবো। এখন থেকে নীরবে শুধু কষ্ট সহ্য করব না। সবাইকে সংগঠিত করে নারীদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলব। এ ঐক্য অন্যায়, জুলুম আর শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ঐক্য। এ ঐক্য চোর- ডাকাতদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার ঐক্য। নারীদের চুপি চুপি চোখের পানি মোছার দিন শেষ। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সংগ্রাম শুরু।’

শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে দলীয় কার্যালয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, রিজার্ভ সংকট, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে এবি পার্টির উইমেন্স উইং।

এবি পার্টির উইমেন্স উইংয়ের সমন্বয়ক নাসরীন সুলতানা মিলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন—এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব শ্রমিক নেত্রী বেবী পাঠান। এ সময় এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক জননেতা আনিসুর রহমান কচি, সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু ও যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘একটি দেশে যখন গণতন্ত্র থাকে না; তখন স্বৈর-ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়। অবাধ দুর্নীতি, সীমাহীন স্বেচ্ছাচারিতা ও অনাচারের যাঁতাকলে রাষ্ট্রযন্ত্র এবং এর প্রতিটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যখন ভেঙে পড়ে, তখন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকই জুলুম ও বঞ্চনার শিকার হয়। তবে, আর্থ-সামাজিক কারণে নারীরাই তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। সব মিলিয়ে পরিবারসহ সর্বত্র নারীর প্রতি সহিংসতা ও বিমাতাসুলভ আচরণ হয়ে পড়ে নিয়ন্ত্রণহীন।’

তিনি বলেন, ‘গত দুটি নির্বাচনে আমরা ভোট দিতে পারিনি। জনগণের নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধি সংসদে নেই। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া প্রথাগত নারী নন, এরা পরিবারের উত্তরাধিকার সূত্রে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নেতা। তাই, পুরুষতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণায় এরা রাষ্ট্র চালাচ্ছেন।’

সভাপতির বক্তব্যে নাসরীন সুলতানা মিলি বলেন, ‘আসুন আমরা ঘরে ঘরে গিয়ে মা-বোনদের সচেতন করে তুলি। যে নারী ঘর সামলায়, সে দেশও সামলাতে পারে। যে নারী ভালোবাসা দিতে জানে, সে লাঠি হাতে দুর্বৃত্তদের শায়েস্তাও করতে জানে। এই সরকারের প্রধান একজন নারী। কিন্তু, তার মধ্যে কোনো মাতৃত্বের মমতা নাই। তার প্রত্যেকটা কথা ও কাজ হিংসাত্মক।’

প্রতিবাদি নারী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের নেত্রী রুনা হোসেন, সুলতানা রাজিয়া, ফেরদৌসী আক্তার অপি, আমেনা বেগম, জেসমিন আক্তার মুক্তা, আসমা আক্তার জ্যোতি, রাশিদা আক্তার মিতু, রাখি আক্তার, তানজিনা ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশে সংহতি জানান এবি পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, যুব পার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসেইন, সহকারী সদস্য সচিব এম আমজাদ খান, শ্রমিক নেতা শাহ আব্দুর রহমান, যুবনেতা এম ইলিয়াছ আলী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক শাহজাহান বেপারী, কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন শরিফ প্রমুখ।