ঢাকা     শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ ||  শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

সরকার পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই: মির্জা ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৮, ১৬ মে ২০২৪  
সরকার পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই: মির্জা ফখরুল

সরকার পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

ভাসানী অনুসারি পরিষদের উদ্যোগে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ফারাক্কা লং মার্চ দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে মাওলানা ভাসানী রাজশাহী থেকে ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখে লং মার্চ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প পথ নেই। বাংলাদেশকে যদি আমরা রক্ষা করতে চাই, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব যদি আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই, বাংলাদেশের জনগণকে যদি আমরা রক্ষা করতে চাই, যে উন্নয়ন আকাঙ্খা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের আকাঙ্খা তা যদি আমরা রক্ষা করতে চাই তাহলে সবাইকে দলমত নির্বিশেষে সব ভেদাভেদ ভুলে, এই ভয়াবহ দানবীয়  সরকারকে সরাতে হবে। এই সরকারের একমাত্র কাজ হচ্ছে, তাদের নিজেদের বৃত্ত তৈরি করা, অন্য দেশের যে প্রভুত্ব সেটা মেনে নিয়ে তাদের যে স্বার্থ তা রক্ষা করা। তাই, আমাদের স্বার্থে, আমাদের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদেরকে কেউ করে দিয়ে যাবে না, আমাদের নিজেদের সেটা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ভারত সবসময় বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে তাদের সব কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। শুধু ফারাক্কা বাঁধ নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি অভিন্ন নদীর পানিবন্টনের ক্ষেত্রে ভারত সবসময়ই গড়িমসি করেছে। তারা এই সমস্যার সমাধান করেনি, করছে না, করবেও না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, দীর্ঘকাল ধরে তিস্তা নদীর পানি বন্টন নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে- এই হয়ে যাবে, এখন ভালো অবস্থায় আছে, এই করে করে এই সরকার সময় পার করেছে। এই যে ব্যর্থতা, এর মূল কারণ হচ্ছে, বর্তমানে যে সরকার আছে, তারা পুরোপুরিভাবে একটি নতজানু সরকার। তারা কখনোই জনগণের স্বার্থে একটা স্ট্যান্ড নেয় না।’

তিনি বলেন, ‘আমি সেজন্য বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষকে অধিকার আদায়ের জন্য তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হারিয়ে ফেলেছি, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি। আমরা সব রাজনৈতিক দলগুলো সংগ্রাম করছি- গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই সরকার আজ হোক কাল হোক বদলাবেই। কেউ কেউ মনে করেন যে, শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছর কেউ কিছু করতে পারবে না, আবার কেউ কেউ বলেন, যতদিন জীবিত আছেন তাকে নড়াতে পারবেন না। আমি দেখি সরকার এমনিই নড়ছে। কারণ রিজার্ভ নাই। সরকার ভয়াবহ রকমের একটা অর্থনৈতিক সংকটে আছে।’

সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘নিজেদের স্বদেশী হত্যা হচ্ছে তার উপযুক্ত প্রতিবাদ পর্যন্ত হয় না। আমার এখানে লাশ ফেরত পাব কি না তার জন্য পতাকা বৈঠক হয়। এটা খুব লজ্জার, দুঃখের এবং অপমানের।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমাদের দেশের পররাষ্ট্রনীতি বলে কিছু নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কোনো কাজ নেই। দিল্লী আছে আমরা আছি, আমেরিকার দিল্লিকে দরকার, দিল্লিরও আমেরিকাকে দরকার। দিল্লি আছে, আমরা আছি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ওবায়দুল কাদের সাহেব পরিষ্কার করে ঘোষণা করে দিয়েছেন।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে  ও সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির তানিয়া রব, ভাসানী অনুসারী পরিষদের বাবুল বিশ্বাস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বক্তব্য রাখেন।

 

এমএ/শাহেদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়