ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

অভাবের সংসারে আলোর শিখা ‘মারুফা’

সাইফুল ইসলাম রিয়াদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ২৩ জুলাই ২০২৩   আপডেট: ১৩:০০, ২৩ জুলাই ২০২৩
অভাবের সংসারে আলোর শিখা ‘মারুফা’

এক সময় বাবার সঙ্গে জমিতে মই টেনেছেন। সহায়তা করেছেন কৃষি কাজে৷ সময় বদেলেছে। মারুফা আক্তারের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ক্যামেরার ফোকাস যেন এখন তাকেই খুঁজে বেড়ায়। তাইতো ভারতের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যম সামলাতে সামলাতে হয়রান মারুফা চলে যান আইস বাথে।

সূর্য ডুবে শের-ই-বাংলার বুকে অন্ধকার নামে, মারুফার কথামালা যেন শেষ হয় না। সিরিজ টাইয়ে অবিস্মরণীয় অর্জনের পর ড্রেসিংরুমের সামনে রাইজিংবিডি মারুফার গল্প শুনেছে। সেই গল্পের চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:

আরো পড়ুন:

শেষ ওভারে বোলিংয়ের সময় ভাবনা কি ছিল?
মারুফা আক্তার:
আমি যখন শেষ ওভারে বোলিং পেয়েছি, তখন রান প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩। আমার একটা ওভারই ছিল। ওই সময় নিজের উপর বিশ্বাস রেখেছি, আমি পারবো, আমি একজন ভালো বোলার, বাংলাদেশ দলের একজন পেস বোলার। ২/৩ রান কোনো ব্যাপার না।

আপনার বোলিংয়ে সেরা অস্ত্র কোনটি 
মারুফা আক্তার:
ইনসুইং। এটা অনেক ব্যাটার বুঝতে পারে না শুরুতে। না বুঝে আউট হয়ে যায়। পরে ভালোভাবে খেলার জন্য চেষ্টা করে। যেমন শেফালি ভার্মা সে আমার বল সামনে এসে খেলতে চায়। তখন আমি আরও সামনে ফেলি (হাসি)।

বোলিংয়ে উন্নতির জন্য কী কাজ করছেন? 
মারুফা আক্তার:
এখন যেহেতু খেলার উপরই আছি বোলিং নিয়ে তেমন কিছু করছি না। এরকম কাজ বলতে হচ্ছে না। স্যারেরা বলে যেটা আমার ন্যাচারাল আছে যে ইনসুইংটা ধরে রাখার জন্য। মাঝে মধ্যে স্লোয়ার-ইয়র্কার এগুলো করার চেষ্টা করি।

ইনসুইং কি আপনাকে অনুশীলনে শিখতে হয়েছে? 
মারুফা আক্তার:
না। এটা আমার একদম ন্যাচারাল। এমনিতেই হয়ে যায়।

মান্ধানা আপনাকে নিয়ে অনেক প্রশংসা করেছে। তার সঙ্গে আপনার কী কথা হয়েছে? 
মারুফা আক্তার:
উনি আমার সাথে এসে প্রথমে হ্যান্ডশেক করেছেন। তারপর চলে গিয়ে আবার আসছেন কাছে, তখন বলে বেস্ট অব লাক। তুমি অনেক ভালো ফিল্ডিং করো, তোমার এনার্জি অনেক ভালো, তুমি অনেক কুইক, বোলিং অনেক ভালো। তুমি এগুলো সব ধরে রাখো, সামনের দিকে অনেকদূর যেতে পারবা।

তারা তো ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলে, আপনাকে কিছু বলেছে কী না 
মারুফা আক্তার:
না এখানে শুধু ম্যাচ নিয়ে কথা হইছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে আমাকে কিছু বলেনি।

জীবনের যে বাক বদল, সেটাকে কিভাবে দেখছেন? 
মারুফা আক্তার:
অবশ্যই এটা অনেক ভালো লাগার। আমি খারাপ অবস্থান থেকে উঠে এসেছি। এখন অনেক ভালো লাগে। আগেতো এমন খেলার সুযোগ ছিল না। গ্রাম এলাকায় খেলতাম, এখন আমাকে সবাই দেখে, সবাই চিনে।

ছোট বেলায় নাকি ফুটবল খেলতেন?
মারুফা আক্তার:
ছোটবেলায় তো দৌড়াদোড়ির মধ্যেই ছিলাম আরকি। ছোট বেলায় তো অনেক ফুটবল খেলতাম গ্রামের স্কুলে। আর এমনি ছোট থেকেই আমি এই রকম (দুরন্ত)।

ফুটবল থেকে ক্রিকেটে কিভাবে?
মারুফা আক্তার:
আমার ভাই বলেছে ফুটবল খেলাতে গেলে অনেক ঝুঁকি আছে। এইজন্য যখন ক্লাস সিক্স-সেভেনে উঠি তখন ভাইয়াদের সঙ্গে আস্তে আস্তে টেপ টেনিস খেলি। তো ওইখান থেকে এখন পেশাদার ক্রিকেটার হয়ে গেছি।

খেলার জন্য যা যা প্রয়োজন এখন সব আছে?
মারুফা আক্তার:
হ্যাঁ। এখন আমার কোনো অভাব নেই। আলহামদুলিল্লাহ।

সিরিজ শেষ এখন কী করবেন?
মারুফা আক্তার:
আগামীকাল বাড়িতে যাবো। বিকেলের দিকে। টিকিট কাটা হয়েছে।

কিভাবে যাবেন? 
মারুফা আক্তার:
ট্রেনে যাবো। আমার ভাইয়েরা আছে, এক সঙ্গে যাবো।

কী পরিকল্পনা ছুটিতে?
মারুফা আক্তার:
আমি বিকেএসপি যাচ্ছি না। শারীরিক কিছু সমস্যা আছে। ডাক্তার দেখাবো। এ জন্য ছুটি নিয়েছি।

ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়