ঢাকা     শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ ||  শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

চব্বিশে বাংলাদেশের ১৪ টেস্ট, এতো টেস্ট কখনো খেলেনি আগে

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০৪, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৯:০৫, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
চব্বিশে বাংলাদেশের ১৪ টেস্ট, এতো টেস্ট কখনো খেলেনি আগে

১০৬৯। বাংলাদেশের মাটিতে সবচেয়ে অল্প বলের টেস্ট হওয়ার রেকর্ড এটি। স্মৃতি এখনো তরতাজা। শনিবার শেষ হওয়া বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ড মিরপুর টেস্ট হয়েছে মাত্র ১০৬৯ বল। ফল হওয়া ম্যাচে সবচেয়ে অল্প বলের টেস্ট এটি। 

৩৬ উইকেটের খেলায় শেষ হাসিটা হেসেছে নিউ জিল্যান্ড। অথচ তাদেরকে আটকাতে ধীর গতির স্পিন উইকেট তৈরি করে নিজেদের পাতা ফাঁদে নিজেরা আটকা পড়ে বাংলাদেশ। এই ম্যাচটা জিতলে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার এই ফরম্যাটে সেরা বছর কাটানোর সুযোগ ছিল। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের দীর্ঘ ২৩ বছরের পথচলায় ফি বছর তিনটির বেশি ম্যাচ কখনো জেতেনি বাংলাদেশ। এক বছরে তিনটিই জয়ই সর্বোচ্চ অর্জন।

২০১৪ এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশ তিনটি করে ম্যাচ জিতেছিল। সুযোগ ছিল আরও বেশি ম্যাচ জেতার। কিন্তু পারেনি। এবার সেই গেরো ছুটানোর বড় সুযোগ ছিল। আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটে জিতেছিল। ঢাকায় জিততে পারলেই সবকিছুকে ছাড়িয়ে যেত বাংলাদেশ।

সঙ্গে ২০০০ সালে টেস্ট অভিষেকে পর প্রতি বছর একটি হলেও টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ। ঢাকা টেস্ট না হারলে ইতিহাস বদলাতে পারতো। কিন্তু হতশ্রী ক্রিকেটে বাংলাদেশ নিজেদের পক্ষে ফল টানতে পারেনি।

সামনে বাংলাদেশের লম্বা টেস্ট সফর। ২০২৪ সালে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ১৪ টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট আছে। এই ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ কেমন করবে সেটা বিরাট প্রশ্নের।

সাকিব ও লিটনের পরিবর্তে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে অধিনায়কত্ব করা নাজমুল হোসেন শান্ত সাফ জানিয়েছেন, এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ এখন উন্নতি নয় জিততে চায়। কিন্তু জেতার জন্য এই ফরম্যাটে যে ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলার প্রয়োজন তা কখনো পারেনি। হয়নি বলে যে হবে না- শান্ত তা বিশ্বাস করতে রাজি নন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ভালো টেস্ট দল হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে বিশ্বাস তার, ‘ভবিষ্যতে যদি আমরা এই দলটা নিয়ে এগোতে পারি তাহলে আশা করছি যে টেস্ট দলটা আরও ভালো জায়গায় যাবে।’

শান্ত জোর দিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেট পরিকল্পনামাফিক খেলার। দেশে যেমন উইকেটে বাংলাদেশ খেলে তেমন উইকেটে খেলা। বিদেশে যেমন উইকেট পায় তেমন উইকেটে খেলা। কোনটা স্পিন, ধীর গতির। কোনোটা পেস, বাউন্সি, সবুজে ঘেরা। জাতীয় ক্রিকেট লিগ ও বিসিএল দিয়ে লম্বা সময়ের প্রস্তুতি চান শান্ত, ‘আমরা যখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলি, সেখানে আমরা ভালো উইকেটে বা এমন কন্ডিশন বানিয়ে অনুশীলন করতে পারি। যখন আমরা হোমে খেলব আমরা এনসিএলে এমন উইকেটে খেললাম। আবার অ্যাওয়ের জন্য দুই তিনটা উইকেট আমরা এভাবে বানালাম।’

প্রশ্ন হচ্ছে, তিন ফরম্যাটে যারা নিয়মিত জাতীয় দলে খেলছেন তাদের আন্তর্জাতিক ব্যস্ততা শেষ হয় না। নিয়মিত ম্যাচ খেলার পর তাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। নিজেদের যত্ন করার প্রয়োজন হয়। পুনর্বাসনেরও প্রয়োজন হয়। সঙ্গে ছোট-খাটো ইনজুরি বা নিগল তো থাকেই। এছাড়া পারিবারিক ব্যস্ততা থাকে। যে কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটে তাদের অংশগ্রহণ থাকে একেবারেই সামান্য। খেললেও বিরতি দিয়ে এক দুই ম্যাচ। ফলে লাল বলের ক্রিকেটে যে প্রস্তুতির প্রয়োজন, মাঠে নামার আগে যে পরীক্ষার প্রয়োজন, ভুল-ভ্রান্তি ঝালাইয়ের প্রয়োজন তা অসম্পূর্ণ থাকে। মাঠে ক্রিকেটে সেই চিত্র ফুটে উঠে প্রবলভাবে। শান্ত যে সমাধান দিলেন তা কি যথেষ্ট?

‘যারা তিন ফরম্যাট খেলে তাদের জন্য কঠিন। কিন্তু কিছু করার নেই। তারা যারা তিন ফরম্যাটে খেলে, তাদের ওভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে, নেটে হতে পারে। কিন্তু যে খেলোয়াড়রা কেবল টেস্টেই খেলছেন, তাদের ওই সময়টা থাকে। এমন না যে এখানে ১০-১৫টা খেলোয়াড় থাকে, এমন অনেক খেলোয়াড় আছে ভবিষ্যতে যাদের টেস্ট ম্যাচে সুযোগ আসবে। তাদের জন্য সুযোগ আছে স্পিনিং উইকেট বা ভালো উইকেটে খেলে অনুশীলন করে, ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এখানে আসার।’

বাংলাদেশ ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ১০ টেস্ট খেলেছিল। জিতেছিল কেবল ১ টেস্ট। ২০২৪ সাল বাংলাদেশ ক্রিকেট নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। নতুন এক চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জে শান্ত অ্যান্ড কোংরা কেমন করে সেটাই দেখার।

ইয়াসিন/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়