ঢাকা     সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

স্বাধীনতা কাপ

ধাক্কাধাক্কির ফাইনালে মোহামেডানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দশ জনের বসুন্ধরা

সাইফুল ইসলাম রিয়াদ, গোপালগঞ্জ থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৭:১৬, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
ধাক্কাধাক্কির ফাইনালে মোহামেডানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দশ জনের বসুন্ধরা

শেষ বাঁশি বাজার মিনিট চারেক বাকি। উপস্থিত কয়েক হাজার দর্শক অতিরিক্ত সময়ে খেলা দেখার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখনি দুই ব্রাজিলিয়ানের ম্যাজিক! মাঝ মাঠের একটু সামনে থেকে আলতো শটে বল বাড়িয়ে দেন মিগুয়েল। ডি বক্সের ডানে থাকা ডোরিয়েলটন জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন মোহেমেডানের জাল। 

এই গোল বসুন্ধরা কিংসের জন্য বিশেষ কিছুই বটে। কেননা দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রফিকের লাল কার্ড হজমে তারা পরিণত হয় ১০ জনের দলে। মিনিট খানেকের মধ্যে পিছিয়ে পড়া আবার সমতা আনা চাট্টিখানি কথা নয়। এরপর অন্তিম সময়ে এসে সাদাকালো শিবিরকে স্তব্ধ করে স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয় বসুন্ধরা কিংস। 

গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে মোহামেডানের বিপক্ষে ২-১ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বসুন্ধরা। বসুন্ধরার হয়ে গোল দুটি করেন রাকিব ও ডরিয়েলটন। আর মোহামেডানের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন সানডে।

প্রথমার্ধে দুই দলের খেলোয়াড়রা বেশ শান্তশিষ্টই ছিলেন। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের পরও গোলের দেখা পায়নি কেউ। বসুন্ধরা পুরো মাঠ দাপিয়ে বেড়ালেও মোহামেডান খেলেছে লং পাসে। সোলেমান দিয়াবাতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও গোলের দেখা পাননি। একই হাল বসুন্ধরারও। রবসনের একটি শট ফিরিয়ে দেন মোহামেডানের গোলরক্ষক। গোলশূন্য সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল। 

প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধ হলো ঠিক বলা যায় মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই উত্তেজনা। বসুন্ধরার লেফট উইঙ্গার রফিক বা দিকে বল ডিফেন্স করতে গিয়ে লাফিয়ে উপরে উঠে যান মোহামেডানের ওমরের কাঁধে। বেজে ওঠে রেফারির বাঁশি। এর আগে বেশ কয়েকবার তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। এবার আর বাঁচতে পারেননি। সরাসরি লাল কার্ড দেখেন। এই নিয়ে মিনিট কয়েক বসুন্ধরার ফুটবলাররা রেফারির সঙ্গে বাদানুবাদ করতে থাকেন। 

দশজনের বসুন্ধরা মিনিট খানেকের মধ্যেই গোল হজম করে বসে। ৫১  মিনিটে বা দিক থেকে মোজাফফরের কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বলে লাফিয়ে উঠে দারুণ হেডে গোল দেন সানডে। কিংসকে স্তব্ধ করে উল্লাসে মেতে ওঠে সাদাকালো শিবির। অবশ্য এই উল্লাস বেশিক্ষণ টেকেনি।

গোল হজম করে তেঁতে ওঠে দশজনের বসুন্ধরা। মিগুয়েল মাঝমাঠের একটু সামনে থেকে বল নিয়ে এগোতে থাকেন ডি বক্সের দিকে। মোহামেডান ডিফেন্ডারদের ব্লকে পড়ে ব্যাকপাসে তিনি বল বাড়িয়ে দেন ডি বক্সে থাকা রবসনের দিকে। রবসন শট নিলে তা আবার ফিরে আসে বাঁ দিকে থাকা রাকিবের পায়ে। বাকি কাজ অনায়াসে সারেন বাংলাদেশী ফরোয়ার্ড।

১-১ গোলে সমতার পর দুই দলের খেলোয়াড়দের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ৬৫ মিনিটের সময় মিগেলের শার্ট ধরে ওমর টান দিলে তিনি বিরক্ত হয়ে যান। এক পর্যায়ে দুই দলের খেলোয়াড়রা ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। মিনিট খানেক পর পরিস্থিতি শান্ত করেন রেফারি। এর মাঝে চলতে থাকে দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ।

১০ জনের বসুন্ধরা একের পর এক আক্রমণে নাজেহাল করে তোলে সাদাকালো শিবিরকে। তবে গোলের দেখা পাচ্ছিল না। ৮৬ মিনিটে দলের ভরসা হয়ে আসেন দুই ব্রাজিলিয়ান মিগুয়েল-ডোরিয়েলটন। মিগুয়েলের আলতো পাসে ডোরিয়েলটনের জোরালো শটে শিরোপার দেখা দেখা পায় ১০ জনের বসুন্ধরা।

শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে দুই দলের ফুটবলারদের মাঝে কয়েকবার হাতাহাতি বেধে যায়। যা চলমান থাকে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পরও। হতাশায় মুষড়ে থাকা মোহামেডান যেন খেই হারিয়ে ফেলে।

ঢাকা/রিয়াদ/বিজয়

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়