ঢাকা     বুধবার   ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৭ ১৪৩১

বোলিং আক্রমণে স্বপ্নের পালে হাওয়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩১, ১৯ জুন ২০২৪   আপডেট: ২০:৩৪, ১৯ জুন ২০২৪
বোলিং আক্রমণে স্বপ্নের পালে হাওয়া

৪৭ উইকেট নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু করা সাকিব আল হাসান শুরুর তিন ম্যাচে উইকেটশূন্য। বিস্ময়কর বটে! প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নিষ্প্রভ থাকার পর তৃতীয় ম্যাচে ফিফটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। কিন্তু সেদিনও বোলিংয়ে সাকিব উইকেটশূন্য। শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যও এমন কিছু আশ্চর্যজনক।

তাতে র‌্যাংকিংয়েও পড়ে প্রভাব। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার এক নম্বরে থেকে বিশ্বকাপ শুরু করেন। প্রথম সপ্তাহে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না করায় সাকিবকে নেমে যেতে হয় পাঁচ নম্বরে। তবে শেষ দুই ম্যাচে রান এবং শেষ ম্যাচে ২ উইকেট নিয়ে সাকিব এই সপ্তাহে দুই ধাপ এগিয়েছেন। বাংলাদেশ সুপার এইটে উঠেছে সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ছাড়াই! অথচ একটা সময়ে বৈশ্বিক ক্রিকেটে সাকিব হাসলেই হাসত বাংলাদেশ।

এবার ব্যাটসম্যানদের ব্যাটেও রান নেই। টপ অর্ডার প্রতিদিনই ব্যর্থ হচ্ছে। ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের লড়াই শুরু হয় মিডল অর্ডার থেকে। তাহলে কোথায় ভালো করছে বাংলাদেশ? উত্তর একটাই, বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ দলকে সাফল্যে ভাসাচ্ছে। যেখানে পেসাররা আগুনে পারফরম্যান্স করছেন। স্পিনে ভেল্কি দেখাচ্ছেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। মাঠে এই চতুষ্টয়ের পারফরম্যান্সে বাংলাদেশে গেছে সুপার এইটে। চার ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ৩টি। একটিতে একেবারে খুব কাছে গিয়েও জিততে পারেনি। বলে রাখা ভালো, এই পেস আক্রমণে ছিলেন না ইনজুরিতে পড়া শরিফুল ইসলাম।

আরো পড়ুন:

চোট থেকে প্রায় সেরে উঠা শরিফুল ফিট হলে কোথায় খেলবেন সেটাও এখন বিরাট প্রশ্ন। বিশ্বকাপে তাসকিন আহমেদের থেকে যে প্রত্যাশা ছিল তা পূরণ করছেন ঠিকঠাকভাবেই। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই তিনি ছিলেন অ্যাভেইলেভেল। ৪ ম্যাচে ডানহাতি পেসার পেয়েছেন ৭ উইকেট। যেখানে তার বোলিং গড় ১৪.৫৭। আর ইকোনমি ৬.৮০। নতুন বলে উইকেট আদায়ের কাজটা বেশ ভালোভাবে করছেন তাসকিন। সঙ্গে মিডল ওভারগুলোতে তার সারাশি আক্রমন বরাবরের মতোই উজ্জ্বল। 

শরিফুল সুস্থ থাকলে তানজিম খেলতেন কিনা তা বলা মুশকিল। অথচ যুব বিশ্বকাজয়ী এই পেসারই দেখিয়ে দিচ্ছে কত ধানে কত চাল। গ্রুপ পর্বে ৪ ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৯ উইকেট পেয়েছেন তানজিম। যেখানে তার বোলিং গড় কেবল ৮। ইকোনমি ৪.৮০। নেপালের বিপক্ষে ২৪ বলের ২১টিই ডট দিয়ে বিশ্বকাপের ম্যাচে সর্বোচ্চ ডট বল দেওয়ার রেকর্ডও গড়েছিলেন তানজিম। ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে দলকে সুপার এইটের টিকিট নিশ্চিত করেন এই পেসারই।

মোস্তাফিজ এবারের প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত দুর্বোধ্য। উইকেট একেবারেই তার জন্য মানানসই। একটু ধীরে বল আসা। বল গ্রিপ করা। অসমান বাউন্স। সবকিছুই মোস্তাফিজের পক্ষে গেছে। কন্ডিশনের পুরোপুরি ব্যবহার করে মোস্তাফিজ দেখিয়েছেন কারিশমা। ৪ ম্যাচে ৭ উইকেট পেয়েছেন। যেখানে তার বোলিং গড় ৭.৭১, ইকোনমি ৩.৩৭। ডেথ ওভারে বিশেষ পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। স্লোয়ার ও কাটারে বিভ্রান্ত করে ব্যাটসম্যানদের রীতিমত খাবি খাওয়াচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার করা শেষ ওভারে মাত্র ৪ রান, নেপালের বিপক্ষে ১৯তম ওভার উইকেট মেডেন, ১৭তম ওভারে মাত্র ১ রান, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯তম ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে ম্যাচ বাংলাদেশের পক্ষে নিয়ে আসেন বাঁহাতি পেসার।

রিশাদ হোসেন এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রাপ্তি। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর নায়ক তিনি। চার বলের ব্যবধানে তিন উইকেট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শ্রীলঙ্কার থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে আনেন রিশাদ। ৭ উইকেট পেয়েছেন রিশাদও। যেখানে তার বোলিং গড় ১৪.৫৭। ইকানোমি ৬.৮০। বিশ্বকাপে লো স্কোরিং ম্যাচে বোলারদের মুখে হাসি ফুটেছে। বাংলাদেশের পেস আক্রমণও সমানতালে লড়ে যাচ্ছে। বিশ্বমঞ্চে বোলারদের এই দাপট অব্যাহত থাকলে সুপার এইটেও বড় চমক দেখাতে পারে বলার অপেক্ষা রাখে না। এই পেস আক্রমণে শরিফুল যুক্ত হলে ধার আরও বেড়ে যাবে। কিন্তু তার জায়গা কোথায় সেটাই এখন বিরাট বড় প্রশ্ন।

ইয়াসিন/আমিনুল


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়