ঢাকা     শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২১ ১৪৩১

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় জাতীয় পতাকার রূপকারের শেষ বিদায়

কুমিল্লা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ২০ এপ্রিল ২০২৪  
শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় জাতীয় পতাকার রূপকারের শেষ বিদায়

শ্রদ্ধায় আর ভালোবাসায় জাতীয় পতাকার রূপকার শিব নারায়ণ দাসের শেষ বিদায় জানানো হয়েছে। আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় নিজ জন্মস্থান কুমিল্লা টাউনহল প্রাঙ্গণে তার মরদেহ রাখা হয়। সেখানে মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ও কুমিল্লার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। 

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ‘উনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও আমার নেতা। এই জাতি একজন উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারিয়েছি। শিবুদার মাঝে রাজনীতি নিয়ে ক্লান্তি ছিল না। উনি আমাদের হাতে পোস্টার বানিয়ে দিতেন। আমরা পুরো শহর সেই পোস্টার বিলিয়ে দিতাম। এমন একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদকে কুমিল্লার মানুষ হারিয়েছে। যত দিন বাংলাদেশের ইতিহাস থাকবে, ততদিন এই জাতি উনাকে স্মরণ করবে।’ 

বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখি বলেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধের সময় শিবুদার সহযোগী ছিলাম। আমরা গর্বিত যে, শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত আমরা তাকে শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছি।’

সাহিত্যিক ও গবেষক ড. আলী হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘তিনি একজন সৎ ও মিশুক মানুষ ছিলেন। এমন মানুষ বিরল। আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে উনাকে বিদায় জানিয়েছি। এই জাতি উনাকে আজীবন স্মরণ রাখবে।’

আবৃত্তিজোট কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, ‘শিব নারায়ণ দাসের নকশা করা পতাকা বাংলার আকাশে প্রথম উড়েছিল। সেই শিব নারায়ণ দাস কুমিল্লার সন্তান। এটা আমাদের কুমিল্লাবাসীর জন্য গৌরবের ও অহংকার। তার শেষ বিদায়ে আমরা যথাযোগ্য মর্যাদায় সহিত তাকে বিদায় জানিয়েছি।’ 

জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘উনি একজন রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পতাকা শিব নারায়ণ দাসের হাতেই হয়েছি। উনি কখনো নিজের জন্য ভাবেননি। উনিই প্রথম কুমিল্লার টাউনহল মাঠে পাকিস্তানের পতাকা পুড়েছিলেন। আমরা সবার পক্ষ দাবি জানাই, শিব নারায়ণ দাসকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হোক।’ 

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শিব নারায়ণ দাসের সহধর্মিনী বীর মুক্তিযোদ্ধা গীতশ্রী চৌধুরী বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে তার সঙ্গে ছিলাম। সেই যুদ্ধের সময়কাল থেকে। এই কুমিল্লা শিব নারায়ণ দাসের প্রাণের কুমিল্লা। শেষ সময় পর্যন্ত কুমিল্লাবাসী শিব নারায়ণ দাসের পাশে ছিলেন। আমরা কৃতজ্ঞ।’  

শিব নারায়ণ দাসের ছেলে আদিত্য অর্নব বলেন, ‘আজকে আমার বাবাকে শ্রদ্ধা জানাতে যারা এখানে এসেছেন, সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমার বাবা সবসময় চাইতেন, দুঃখ ও দূর্দশামুক্ত হয়ে এই দেশ যাতে সামনে এগিয়ে যাই। আমার বাবা দেশের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকতেন। আমি আমার বাবার আদর্শ লালন করে বড় হতে চাই।’  

বাংলাদেশের প্রথম পতাকার অন্যতম নকশাকার জাসদ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৭৮ বছর। 
 

রুবেল/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়