ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘নদী দখলের মনোভাব থেকে পিছিয়ে আসতে হবে’

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৯, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১০:২৩, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘নদী দখলের মনোভাব থেকে পিছিয়ে আসতে হবে’

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই ইছামতি নদী নিয়ে ভেবেছে। কিন্তু কেন সেই ভাবনা বাস্তবায়ন হয়নি সেটি বলতে চাই না। তবে সবার চিন্তা-চেতনা, চাওয়া-পাওয়া মিলিয়ে ইছামতি নদী উদ্ধার ও খনন করে সবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এতে সবার স্বার্থ সংরক্ষণ হবে। এজন্য দখলদারী মনোভাব থেকে পিছিয়ে আসতে হবে।‘

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পাবনা জেলা পরিষদের রশিদ হল মিলনায়তনে পাবনার সুধীসমাজের প্রতিনিধি কর্তৃক আয়োজিত ইছামতি নদী পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

শামসুল হক টুকু বলেন, ‘নদীর নাব্যতা ফেরাতে, সৌন্দর্য বর্ধন করতে হবে। কর্মসংস্থানের খাত সৃষ্টি করতে হবে। যুগ যুগ ধরে নেতৃত্বের ব্যর্থতা, প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে ইছামতির নদীর আজ এ অবস্থা। ক্ষতিগ্রস্থরা এগিয়ে আসবেন, আমরা যাবো। ইছামতি নদী প্রবাহমান দেখতে চাই। সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। ভবিষ্যত পরিকল্পনা করে কাজ করতে হবে। বিভেদ করে পাবনার উন্নয়ন পিছিয়ে গেছে।’

পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, পাবনা ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান সুজন, পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সমাজ হিতৈষী মুসতাক আহমেদ সুইট প্রমুখ। 

সভায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে ইছামতি নদী ঘিরে উন্নয়ন পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন পাউবো পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান সুজন ও মুস্তাক আহমেদ সুইট।

মতবিনিময় সভায় পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন, ‘পদ্মা নদীতে সেতু হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে যেভাবে পূনর্বাসন করা হয়েছে। তেমনিভাবে ইছামতি নদী ঘিরে সরকারি উদ্যোগ নেয়া গেলে আমরা সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখতে পারি। ক্ষতিগ্রস্থদের নিয়ে সবার সম্মিলিতভাবে ইছামতি নদীকে সুন্দর করা সম্ভব।’ 

স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু বলেন, ‘ইছামতি নদী যদি পরিষ্কার করে পাবনাবাসীর জন্য চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থা করতে তাহলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে। আর সরকারি উদ্যোগ থাকতে হবে। তাহলে পাবনাবাসীকে সুন্দর একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নদী উপহার দেওয়া যাবে। ইছামতি নদী যতটুকু আছে ততটুকু নিয়েই সুন্দর করে তোলা সম্ভব। এটা নিয়ে ভাঙা গড়ার খেলা আর দেখতে চাই না আমরা।’ 

পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান সুজন বলেন, ‘ইছামতি নদী উচ্ছেদ কার্যক্রমের অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ আর খনন কাজে অগ্রগতি ২০ শতাংশ। এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনার মধ্যে এ পর্যন্ত ৬০১টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ঠিকাদাররা আর মেয়াদ বৃদ্ধি করেননি। তাদের বারবার চিঠি দেওয়া হলেও তারা কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করছে না। তার কারণ হিসেবে ঠিকাদাররা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে তারা কাজ করতে পারছেন না। আশার কথা, ইছামতি নদী বাঁচানোর জন্য ৩৬ কিলোমিটার নদী ঘিরে ৮৭ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রস্তুত করা হয়েছে। ইছামতি নদী নিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণাগার স্থাপনেরও প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

শাহীন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়