ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ভাষা নিয়ে ৪০ বছরের পথচলায় তিননদী পরিষদ

রুবেল মজুমদার, কুমিল্লা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০৫, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  
ভাষা নিয়ে ৪০ বছরের পথচলায় তিননদী পরিষদ

‘তিননদী পরিষদ’ কুমিল্লার সাংস্কৃতিক সংগঠন। ৪০ বছর ধরে তারা নতুন প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের গৌরবোজ্জল ইতিহাস শুনিয়ে আসছে। মঞ্চে নিয়মিত এক সময় কথা বলতেন ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট আহমেদ আলী, অধ্যাপিকা লায়লা নূর, আলী তাহের মজুমদার ও আবদুল জলিলসহ অনেকে।

১৯৮৪ সাল থেকে প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ দিনব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে সংগঠনটি। একুশের চেতনা লালন করে তা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে নগরীর জমতলায় স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিল্পী, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাচ, গান, নাটক, আবৃত্তি ও আলোচনায় একুশের চেতনা তুলে ধরে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে চলছে উদযাপন।

সংগঠনের মূল কারিগর স্থানীয় প্রবীণ সাংবাদিক আবুল হাসানাত বাবুল। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নয়, দুনিয়ার কোথায় ভাষা নিয়ে ২১ দিনব্যাপি এমন আয়োজন আর নেই। আমরা ভাষা আন্দোলন কেন্দ্রিক প্রতি বছর ২১ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান করে থাকি। এছাড়া জেলার সংস্কৃতি চর্চাকে বিকশিত করতে গত ৪০ বছর কাজ করছে এ সংগঠন। আলোচনা, গান, কবিতায় নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে আসছে। তাই কুমিল্লাবাসীর দাবি এ সংগঠনকে একুশে পদকে ভূষিত করা হোক।’

তিননদী পরিষদের তথ্যমতে, প্রজন্মকে ভাষার ইতিহাস জানাতে ১৯৮৩ সালের জানুয়ারি মাসে উদ্যোগ গ্রহণ করেন সাংবাদিক আবুল হাসানাত বাবুল। বিষয়টি নিয়ে আলাপ হয় সৈয়দ আবদুল ওয়াজেদের সঙ্গে। ১৯৮৪ সালের ৭ জুন আবদুল ওয়াজেদের প্রস্তাবে সাংবাদিক প্রদীপ সিংহ রায় মুকুটকে সভাপতি ও সাংবাদিক আবুল হাসানাত বাবুলকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। আর অপর তিন জন সদস্য হলেন বদরুল হুদা জেনু, সৈয়দ আবদুল ওয়াজেদ ও মোহাম্মদ নওশাদ কবীর। প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর কমিটি পেয়ে নতুন মাত্রায় ১৯৮৫ সাল থেকে প্রাণ পায় তিন নদী পরিষদ।

কুসিকের কাউন্সিলর জমিরউদ্দিন খান জম্পি বলেন, ‘তিননদী পরিষদের জামতলা কুমিল্লার মানুষের কণ্ঠস্বর। অনেক শিশু বড় মঞ্চে সুযোগ, সাহস পায় না, তাদের জন্য এ মঞ্চ। শিল্পী আসিফ আকবর এ মঞ্চে গান গেয়েছেন। আমরা নতুন প্রজন্মকে সুযোগ করে দিতে চাই। সবাইকে আহ্বান জানাই তিন নদীর অনুষ্ঠান উপভোগ করার জন্য।’

ইতিহাসবিদ আহসানুল কবীর বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন বা একুশ নিয়ে স্বাধীনতার পর সারা দেশে অনেক কাজ হয়েছে। তবে ব্যতিক্রম তিন নদী পরিষদ। ৪০ বছর ধারাবাহিকভাবে ২১ দিন ভাষা চর্চা, ভাষার ইতিহাস জানা অন্য কোথাও নেই। তাই আমরা চাই এ আয়োজন শতাব্দীর পর শতাব্দী টিকে থাকুক।’

/বকুল/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়