ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, ৪০ একর তরমুজ চারা নষ্টের শঙ্কা 

পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি   || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪০, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  
খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, ৪০ একর তরমুজ চারা নষ্টের শঙ্কা 

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের বড় বালিয়াতলী গ্রামের কৃষক হাাবিবুল্লাহ প্যাদা (৪০)। এবছর তিনি আড়াই একর জমিতে তরমুজের চারা রোপণ করেছেন। কিন্তু পানির অভাবে নষ্ট হচ্ছে তার সেই স্বপ্নের ক্ষেত। চারা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেলে এই কৃষকের প্রায় ৩ লাখ টাকা লোকসান হবে। 

শুধু হাবিবুল্লাহ একাই নন ওই গ্রামের প্রায় ৪০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করছেন আনোয়ার, জলিল মাতুব্বর ও খলিল হাওলাদারসহ প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষক। কিন্তু পানির অভাবে জমি সেচ দিতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাদের সবাই। 

মূলত বড় বালিয়াতলী গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হাক্কার খাল বন্দোবস্ত নিয়ে কাশেম ও নাসির নামের দুই ব্যক্তি বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় পানির অভাবে পরেছেন কৃষকরা। সঠিক সময়ে পানি না পাওয়ায় জমিতে সেচ দিতে পারছেন না তারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বড় বালিয়াতলী গ্রামের হাক্কার খাল থেকে পানি সংগ্রহ করে যুগ যুগ ধরে রবি মৌসুমে বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদন করেন কৃষকরা। কিন্তু ওই খালটি স্থানীয় প্রভাবশালী কাশেম ও নাসির নামের দুই ব্যক্তি সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে বাঁধ দিয়েছেন। তারা সেখানে মাছ চাষ করছেন। একই সঙ্গে তারা ওই খাল থেকে পানি সংগ্রহে কৃষকদের বাধা দিচ্ছেন। এমনকি পানি সংগ্রহ করতে গেলে তারা কৃষকদের মারধরের হুমকিও দিচ্ছেন। বর্তমানে পানির অভাবে মরে যাচ্ছে রোপণকৃত তরমুজ চারা। ফলে কৃষকরা ওই খালের বন্দোবস্ত বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।  

কৃষক হাবিুল্লাহ বলেন, ‘গত বছর আমি জমিতে তরমুজ চাষ করে প্রায় ৫ লাখ টাকা আয় করেছি। কিন্তু এ বছর অনেক খাটা খাটনি করে চারা রোপণ করেছি জমিতে। পানির অভাবে ইতোমধ্যে অনেক চারা মরে গেছে। বাকিগুলোর অবস্থাও খারাপ। হাক্কার খাল থেকে পানি সংগ্রহ করতে গেলেই আমাদের মারধরের হুমকি দেয়।’ 

কৃষক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমরা ইউএনওর কাছে দরখাস্ত করেছি। কিন্তু তারপরও খাল থেকে পানি সংগ্রহ করতে পারছি না। এখন আমরা লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছি।’ 

এবিষয়ে জানতে খাল বন্দোবস্ত নেওয়া কাশেম ও নাসিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘কৃষকদের পানির অভাবের বিষয়টি শুনেছি। তারা যাতে পানি ব্যবহার করতে পারেন সে জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। ওই খালটি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে এবং তাদের নামে রেকর্ডও হয়ে গেছে। কিন্তু এটা রেকর্ড কিভাবে হলো সেটাই বুঝে পাচ্ছি না। তারপরও যারা খাল বন্দোবস্ত পেয়েছেন তাদের মাছ ধরে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং কৃষকরা যাতে জমিতে সেচ দিতে পারেন সে ব্যবস্থা করে দিতে বলেছি।’  

ইমরান/ মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়