ঢাকা     শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ ||  শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী, স্বস্তি মুরগিতে

আমিরুল ইসলাম, রংপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১২, ২ জুন ২০২৩   আপডেট: ১৫:৩৫, ২ জুন ২০২৩
সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী, স্বস্তি মুরগিতে

রংপুরে ক্রমাগতভাবে দাম বেড়েই চলছে সবজির। দুই একটি সবজির দাম কিছুটা কমলেও বাকিগুলোর দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে অনেক সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তবে মুরগি দাম কিছুটা কমেছে।

এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা। বিশেষ করে বেকায়দায় পড়েছেন সমাজের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষরা। 

এদিকে, মাছ, মাংস, ডিম, চাল, ডাল ও তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে রংপুরের বাজারগুলোতে।

শুক্রবার (২ জুন) রংপুর সিটিসহ নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি শসায় দ্বিগুণ দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। আর গাজরে ৩০-৪০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৬০-১৭০ টাকা। টমেটো কেজি প্রতি ২০-৩০ টাকা বেড়ে এখন ৭০-৮০ টাকা, করলা ২০-২৫ টাকা বেড়ে ৬০-৬৫ টাকা, ঝিংগা ৫ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকা, পটল ১০ টাকা বেড়ে ৫৫-৬০ টাকা, কচুর মুখী ২০-৩০ টাকা বেড়ে ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাউ আকার ভেদে ৫০-৬০ টাকা, প্রতি আঁটি শাক ১০-২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এছাড়াও সিটি বাজারে খুচরা দরে চায়না রসুন ২০০ টাকা আর দেশি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেতে দেখা গেছে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। আর পেঁয়াজ কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৭০-৭৫ টাকা, আদা ৬০-৮০ টাকা বেড়ে ২২০-২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিটি বাজারে সবজি ক্রয় করতে গিয়ে কথা হয় আনসার আলী নামের এক ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তির সাথে। সবজির দামের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে আক্ষেপ করে আনসার বলেন, সবজির দাম আর এই জনমে কমের সংবাদ পাওয়া যাবেনা বাড়তি ছাড়া! আমরা গরীব মানুষ, কম কম করে কিনলাম। আদা ২৪০ টাকায় কেজি দরে- এক পোয়া‌, পেঁয়াজ হাফ কেজি, ঝিংগা বরবটি আর শাক কিনেছি প্রয়োজনেরও কম। এতেই আমার সপ্তাহের বাজেটের টাকা শেষ। মাছ-মাংসের হাটের দিকে তো যাওয়া আমাদের মত গরিব মানুষের এখন দুঃস্বপ্ন।

দুলু মিয়া নামের আর এক বেসরকারি চাকরিজীবী বাজার করতে করতে জানান, সপ্তাহে একদিন আমরা বাজার করি। শুক্রবারের দিনটি আমাদের মতো ছোট চাকরিজীবীদের জন্য উত্তম তাই আজ এসেছি। কিন্তু এই দিন বাজারে প্রচুর ভিড় দেখা যায়। এতে ব্যবসায়ীরাও দাম বৃদ্ধির মওকা নেয়। তা নাহলে গত সপ্তাহে শসা কিনেছি ৩০ টাকা কেজি দরে সেটি আজ ৬০ টাকায় কিনতে হলো। এমনি করে প্রতিটি সবজির দাম এখন নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয় ক্ষমতার অনেকটা বাইরে চলে গেছে। তারপরেও কম কম করে নিরুপায় হয়ে কিনতে হচ্ছে।

সিটি বাজারের সবজি ব্যবসায়ী জামিল মিয়া বলেন, 'গত ২-৩ সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজ রসুনের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। আর গত সপ্তাহ থেকে গাজর, টমেটো, শসাসহ কয়েকটি সবজির দাম বেড়েছে। গরম আবহাওয়ার কারণে ফসলি জমিতে সবজির ফলন কম হয়েছে বিধায় সেখান থেকেই আমাদেরকে বেশি দামে কিনতে হয়। এছাড়াও আড়তে এখন সবজির দাম আগের তুলনায় বেশি তাই কেনার সাথে সামঞ্জস্য রেখেই বিক্রি করছি।'

এদিকে সবজির দাম রংপুরের বাজারগুলোতে উর্ধ্বমুখী থাকলেও গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে সব ধরনের মুরগির দামে। সিটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে পাকিস্তানি মুরগি কেজিতে ৫০-৬০ টাকা কমে ২৬০-২৭০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়াও ব্রয়লার মুরগি ২০-৩০ টাকা কমে ১৭০-১৮০ টাকা, সোনালী মুরগিও ২০-৩০ টাকা কমে ২৭০-২৮০  টাকা, দেশি ২০-৩০ টাকা কমে ৫৪০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  এতে ক্রেতারা কিছুটা দামে সাশ্রয়ী হলেও গরম হওয়ার কারণেই দিন দিন মুরগির দাম কমে যাচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

রংপুর সিটি বাজারের সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বৈশ্বিক বাজারে ডলারের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাবে আমাদের দেশে আমদানি নির্ভর পণ্য যেমন, আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া অনাবৃষ্টির কারণে চাষিদের ফসল মরে যাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে। বিধায় সব ধরনের সবজিতে কিছুটা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

মুরগির দামের বিষয়ে মনির বলেন, গত কয়েকদিন থেকে মুরগি দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। এটিরও মূল কারণ হচ্ছে তীব্র গরম আবহাওয়ার প্রভাব।

 

/টিপু/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়