পৌরসভা ফাঁকা রেখে সুন্দরবনে মেয়র-কাউন্সিলররা, নাগরিক সেবা ব্যাহত
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ছবির বাম পাশে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বন্যা
গত চারদিন ধরে সুন্দরবন ভ্রমণে রয়েছেন ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরসহ প্রায় সব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। ফলে পৌরসভার সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আচমকা সেবা বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সেবা গ্রহীতারা।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বন্যা, সব কাউন্সিলর, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন, উপ-প্রকৌশলী শাহিন ইসলাম, যান্ত্রিক প্রকৌশলী, বিদ্যুৎ প্রকৌশলী, হিসাব রক্ষক আরিফ হোসেন প্রধান, হিসাব সহকারী লিটন, বিদ্যুৎ প্রকৌশলী বিউটি বেগমসহ বিভিন্ন স্থরের অধিকাংশ কর্মকর্তা অনুপস্থিত। এদের মধ্যে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ছুটিতে রয়েছেন। মেয়রসহ অন্যরা সুন্দরবন ভ্রমণে রয়েছেন। তারা সুন্দরবনসহ বিভিন্ন স্থানের ভ্রমণের ছবি ফেসবুকে পোষ্ট করছেন। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সেবা বন্ধ থাকার বিষয়ে পূর্বের কোনো নোটিশ না থাকায় সেবা নিতে এসে ঘুরে যেতে দেখা গেছে অনেককেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মচারী বলেন, হঠাৎ করেই সব কর্মকর্তা ঘুরতে যাওয়ায় পৌরসভা জুড়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তারা যাওয়ার আগে আমাদের সেভাবে অবগত করেননি বা কোনো দিক নির্দেশনা দিয়ে যাননি। শুনেছি, কোথাও কারো অনুমতিও তারা নেননি। শুধুমাত্র যাওয়ার ঠিক আগে চিঠি দিয়ে চলে গেছেন।
ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে জানতে পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বন্যা ও প্যানেল মেয়র-১ কাইয়ুম চৌধুরী এবং প্যানেল মেয়র-২ সুদাম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।
পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মানিক নিশ্চিত করেছেন তারা সুন্দরবনসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে গেছেন। নিজেরা চাঁদা দিয়ে এই ভ্রমণের ব্যবস্থা করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, যেহেতু পৌরসভায় আছি, তাদের ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টা জানি। তারা সুন্দরবন ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে সেভাবে অবগত করেনি। যাওয়ার আগে তারা একটি চিঠি দিয়ে গেছেন। সেখানে উল্লেখ রয়েছে যে, তারা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করতে যাবেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক রাম কৃষ্ণ বর্মন বলেন, এই বিষয়টি আমি আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। তারা যাওয়ার আগে আমাকে অবগত করেনি। এভাবে পৌরসভা ফাঁকা করে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঈনুদ্দীন/মাসুদ