মসিক নির্বাচন
মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ৭ মেয়র প্রার্থী
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
নিজের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মেয়র নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান মসিকের সাবেক মেয়র ইকরামুল হক
উৎসবমুখর পরিবেশে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মনোনয়ন জমাদানের শেষদিনে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থীরা তাদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র হতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের ছয়জন এবং জাতীয় পার্টির একজন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এছাড়া, ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬৪ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শেখ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, সকাল থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মেয়র পদে সাতজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬৪জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সদ্য সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এহতেশামূল আলম, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিলু, নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট ফারমার্জ আল নূর রাজীব, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ড. মো.রেজাউল হক এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল।
দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একাংশ নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে সদ্য সাবেক মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, বিগত পাঁচটি বছর জনগণের পাশে থেকে কাজ করেছি। চেষ্টা করেছি নগরীকে সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য। কিন্তু, করোনাভাইরাসের কারণে প্রত্যাশীত উন্নয়ন করতে পারিনি। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমাদের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। গত নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলাম। এবার অনেকেই প্রার্থী হয়েছেন। যার কারণে ভোট উৎসবমুখর হবে। আশাকরি জনগণ আগামী ৯ মার্চ আমার কাজের মূল্যায়ন ভোটের মাধ্যমে করবেন।
মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে মেয়র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলম বলেন, গত পাঁচ বছর নগরবাসীর আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেনি। মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছে। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে আমি মেয়র প্রার্থী হয়েছি। মেয়র নির্বাচিত হলে নগরীতে দীর্ঘদিনের যানজট, জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবো।
শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু বলেন, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী আমার সঙ্গে রয়েছেন। আমার বড় শক্তি ইমেজ। শহরে আমার ভালো একটি ইমেজ রয়েছে। এবার পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। আশা করি সাধারণ ভোটাররা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।
জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র প্রার্থী শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল বলেন, ময়মনসিংহে জাতীয় পার্টির একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে। যেহেতু, এখানে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন সেহেতু জনগণ জাতীয় পার্টিকেই বেঁচে নেবেন। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। জয়ী হলে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অবহেলিত ময়মনসিংহ নগরীকে ঢেলে সাজাবো।
১৫৭ বছরের পুরনো ময়মনসিংহ পৌরসভা ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর সিটি করপোরেশনে উন্নীত হয়। ২০১৯ সালের ৫ মে এই সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তখন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইকরামুল হক টিটু মেয়র নির্বাচিত হন। ৯১ দশমিক ৩১৫ বর্গকিলোমিটারের আয়তনের এই নগরীতে ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭২ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১৫ জন রয়েছেন। এখানে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৯জন।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ ফেব্রুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ ফেব্রুয়ারি। আগামী ৯ মার্চ ইভিএম-এ এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মিলন/মাসুদ