অনেকেই জানেন না এটা ভাষা শহিদ রফিকের মায়ের কবর
জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম
![অনেকেই জানেন না এটা ভাষা শহিদ রফিকের মায়ের কবর অনেকেই জানেন না এটা ভাষা শহিদ রফিকের মায়ের কবর](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2024February/rofeza-2402210431.jpg)
ব্যস্ত সড়কের পাশে ভাষা শহিদ রফিকের মা রোফেজা খাতুনের কবর
মানিকগঞ্জের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের মাঠের দক্ষিণ পাশে রাস্তার সঙ্গেই একটি কবর। কলেজ শিক্ষার্থীসহ একাধিক পথচারীকে কবরটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন এই প্রতিবেদক। তবে তাদের বেশিরভাগই জানেন না, কবরটি কার। অথচ এটা ভাষা শহিদ রফিকের মায়ের কবর।
১৯৮৯ সালে ৮৪ বছর বয়সে শহিদ রফিকের মা মারা যান। সর্বস্তরের মানুষ সহজে যেন শ্রদ্ধা জানাতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে গ্রামের বাড়ি সিংগাইরে মরদেহ না নিয়ে দেবেন্দ্র কলেজের মাঠের দক্ষিণ পাশে সমাহিত করা হয়।
কিন্তু বর্তমানে শ্রদ্ধা জানানো তো দূরের কথা, অনেকে জানেনও না কবরটি কার। কবরের পাশে জরাজীর্ণ পরিবেশ, নেই কোনো সাইনবোর্ড।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে নিহত শহিদ রফিকের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পাড়িল গ্রামে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এই গ্রামে নানা আয়োজনে পালন করা হয়। স্মৃতিচারণ করা হয় শহিদ রফিকের। কিন্তু দীর্ঘ ৭২ বছরেও তার কবর শনাক্ত করা যায়নি। আর তার মা রোফেজা খাতুনের কবর শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকলেও অনেকেই তা জানেন না।
সানজিদা আলীম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, কলেজে আসা-যাওয়ার পথে কবরটি নজরে পড়ে। তবে এটি কার তা জানি না। দেখে বুঝারও উপায় নেই কবরটি কার।
আরিফুল ইসলাম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, দেবেন্দ্র কলেজে লেখাপড়া করছি। এই রাস্তা দিয়েই চলাফেরা করি। কিন্তু এটা যে ভাষা শহিদ রফিকের মায়ের কবর তা জানতাম না। আর জানব কি করে? এখানে নেই কোনো সাইনবোর্ড বা ম্যুরাল।
আদিতা খান নামে একজন বলেন, কবরটি দেখে বুঝার উপায় নেই, এটা শহিদ রফিকের মায়ের কবর। পরিবেশও জরাজীর্ণ। এখানে কেউ কখনো শ্রদ্ধা জানাতেও আসে না।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শহিদ রফিক আমাদের গর্ব। তার কবর এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তবে তার মায়ের কবর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। তারপরও কবরটির আশেপাশের পরিবেশ জরাজীর্ণ। দ্রুত এটি সংস্কারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বলেন, শহিদ রফিকের মায়ের কবর হিসেবে যে পরিমাণ সংস্কার বা কবরটি সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত তা নেওয়া হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষ এখানে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগটুকু পাচ্ছেন না। দ্রুত সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।
পৌর মেয়র রমজান আলী বলেন, শহিদ রফিকের বাড়ি সিংগাইরের পাড়িলে। তারপরও সর্বস্তরের মানুষ যাতে শহিদ রফিককে স্মরণ করে তার মায়ের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে পারে সেজন্য শহরের প্রাণকেন্দ্রে সমাহিত করা হয়েছে। দ্রুত কবরটি সংস্কার করা হবে।
কেআই
আরো পড়ুন