এই হলো রানুর ঘর-সংসার
শরীয়তপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
![এই হলো রানুর ঘর-সংসার এই হলো রানুর ঘর-সংসার](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2024March/Ranu-2403050910.jpg)
কলাগাছের ঝোপের পাশে পলিথিনের ছাপড়া ঘরে বসবাস করেন ৬৬ বছরের বৃদ্ধা রানু বেগম। এক সময় ঘর,সংসার, স্বামী, সন্তান নিয়ে সুখের সংসার ছিল রানুর। স্বামী মরে গেছে, ভিটে-মাটি ভেঙে নিয়েছে নদী; সন্তানেরা কেউ কাছে নেই। সঙ্গী হয়েছে খাদ্য সংকট, অসুস্থতা, আর দুশ্চিন্তা। রানু বেগমের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের পূর্ব নলতা এলাকায়।
রানু বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একাধিকবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সবশেষ ১০ বছর আগে সহায়সম্বল সব হারিয়ে স্বামী সন্তানদের সঙ্গে রাজধানীতে চলে যান।সন্তানেরা কেউ রিকশার চালায়, কেউ দিনমজুরের কাজ করে। তবে তাদের সংসারে বেশিদিন জায়গা হয়নি রানু বেগমের। ৪ বছর আগে ফিরে আসতে হয়েছে বাবার বাড়ি পূর্ব নলতায়।
রানু বেগম বলেন, মানুষের বাড়িতে কাম কইরা-চাইয়া-চিন্তা খাই। যখন ঝড়-তুফান আহে তখন এই খুপরি ঘরে বইয়া বইয়া ভিজি। পাড়া-প্রতিবেশীরা কেউ দিলে খাইতে পারি, না দিলে না খাইয়া থাকি।
নিজের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন রানু বেগম।
তিনি বলেন, অনেকদিন ধইরা আমি অসুস্থ তাই কাম করতেও পারি না। ভাইয়েরা একটু জায়গা দিছে, এইহানে আছি। তাগো অবস্থাও ভালো না। এই শীতে অনেক কষ্ট হইছে আমার। একজন আমারে একটা ছিঁড়া কাঁথা দিছিলো, তাই দিয়াই শীত পার করছি। সরকার যদি আমাকে যদি একটু সাহায্য করতো তাহলে হয়তো একটু ভালো থাকতে পারতাম।
এ বিষয়ে রানু বেগমের ভাই নুর হক ছৈয়াল রাইজিং বিডিকে বলেন, এক সময় বইনে আমার কাছে থাকতো। পরে আমাগো কষ্ট দেইখা নিজেই রাস্তার ধারে খুপরি ঘর বানাইয়া থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. বিল্লাল আকন বলেন, রানু বেগম অনেক দিন ধরে রাস্তার ধারে বসবাস করছেন। সরকার যদি তাকে একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দিতো- তাইলে অনেক ভালো হতো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ফারুক বলেন, রানু বেগমের বিষয়টি আমাদের কাছে কেউ বলেনি। এখন জানতে পেরলাম। আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করবো।
রানু বেগমের অসহায়ত্বের কথা শুনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন নড়িয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. পারভেজ। তিনি বলেন, খুব শিগগির তার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ ছাড়া বয়স্ক ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।
/সাইফুল/লিপি
আরো পড়ুন