ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ডিসির আশ্বাসের ঘর পেল ফুটবলার সোনালীর পরিবার

পঞ্চগড় প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ১৫ নভেম্বর ২০২৫   আপডেট: ২৩:১৫, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ডিসির আশ্বাসের ঘর পেল ফুটবলার সোনালীর পরিবার

জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমে সংবাদ প্রকাশের পর জাতীয় নারী ফুটবল দলের গোলরক্ষক ফেরদৌসী আক্তার সোনালীর পরিবারকে পাকা ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক।

বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন দৃষ্টিনন্দন পাকা ঘর করে দেওয়ার সেই আশ্বাস রূপ নিয়েছে বাস্তবে। শুরু হয়েছে নতুন ঘর নির্মাণের কাজ।

আরো পড়ুন:

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়ন বনগ্রামে সোনালীর বাড়িতে গিয়ে নতুন ঘরের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সাবেত আলী।

চা বাগান শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে টেকসই আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ঘরটি করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সমাজসেবা অফিস যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছেন প্রকল্পটি।

ঘরের নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা লায়লা আঞ্জুমান, হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর-ই-আলম, উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, হাড়িভাসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলিউল ইসলাম প্রমুখ।

এর আগে, গত ১৬ আগস্ট রাইজিংবিডি ডটকমে ‘আমি ভ্যান চালাই, আমার মেয়ে বিমানে চড়ে বিদেশে খেলতে যায়’ শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। সেখানে ফেরদৌসি আক্তার সোনালী ও তার বাবার সংগ্রামী জীবনের গল্প তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি নজরে এলে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী তাদের খোঁজ নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেন।

পরে ২৫ আগস্ট তার বাড়িতে পরিদর্শনে এসে দৃষ্টিনন্দন একটি পাকা ঘর এবং তার বাবাকে উপার্জনের জন্য ভ্যানের বদলে নতুন ইজিবাইক কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী। এ সময় তার বাড়ির সামনের কাঁচা সড়কটিও পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

ফুটবলার ফেরদৌসী আক্তার সোনালী বনগ্রাম এলাকার ফারুক ইসলাম ও মেরিনা বেগম দম্পতির মেয়ে। তিনি হাড়িভাসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন, অনুশীলন করতেন পঞ্চগড় টুকু ফুটবল একাডেমিতে। বর্তমান বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তিনি।

সোনালীর বাবা ফারুক ইসলাম বলেন, “আমার মেয়ের সফলতার কারণে আমি নতুন ঘর পেতে যাচ্ছি। উপার্জনের জন্য একটি ইজিবাইক পেয়েছি। আমি গর্বিত এবং জেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।”

হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর-ই-আলম বলেন, “আমাদর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র পরিবারের মেয়ে সোনালী ফুটবলে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করেছে- এটা আমাদের জন্য গর্বের। জেলা প্রশাসক তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সোনালীর বাড়িতে আজ ঘর নির্মাণের উদ্বোধন করলেন। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায় বলেন, “জাতীয় নারী ফুটবল দলের হয়ে সোনালী বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তার বাড়িতে গৃহ নির্মাণ কাজের অংশি হতে পেরে গর্ববোধ করছি। সোনালী ফুটবলে ভালো কিছু করবে এই প্রত্যাশা করছি।”

জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, “গণমাধ্যমের খবরে জানতে সোনালীর পরিবারটি অত্যন্ত দরিদ্র। পরে আমি তার বাড়িতে এসে খোঁজ নিয়ে পরিবারটির আর্থিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করি এবং প্রতিশ্রুতি দেই- তার বাবার উপার্জনের জন্য একটি ইজিবাইক কিনে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সেটি দেয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা তাকে গৃহনির্মাণ করে দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছিলাম, সেটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হলো। আমি কথা দিয়েছিলাম- তার বাড়িতে রাস্তাটি পাঁকা করা হবে। আশা করছি, শীঘ্রই সেটি বাস্তবায়ন হবে।”

সোনালী তার দক্ষতা ও নৈপুণ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফুটবলকে ভালো কিছু উপহার দেবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেলা প্রশাসক।

ঢাকা/নাঈম/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়