ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নাক ডাকার তিন কারণ

এস এম ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২১, ৯ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৬:২৩, ৯ জানুয়ারি ২০২২
নাক ডাকার তিন কারণ

পরিবার থেকে ঘুমের মধ্যে আপনার নাক ডাকার অভিযোগ শুনেছেন? তাহলে জেনে রাখুন, আপনি একা নন। আপনার মতো আরো অনেকেই ঘুমের সময় নাক ডাকেন।

নাক, মুখ ও গলার টিস্যু দ্বারা শ্বাসনালী বাধাগ্রস্ত হলে এবং যথাযথ শ্বাসপ্রশ্বাস না হলে শ্বাসনালীর টিস্যুসমূহ স্পন্দিত হতে থাকে। এর ফলে নাক ডাকা শুরু হয়। নাক ডাকার পেছনে সাধারণ কারণ যেমন রয়েছে, তেমনি বিপজ্জনক কারণও রয়েছে। এখানে নাক ডাকার তিনটি কারণ সম্পর্কে বলা হলো।

চিৎ হয়ে ঘুমানো

চিৎ হয়ে ঘুমালে মাধ্যাকর্ষণ শ্বাসনালীর টিস্যুকে নিচের দিকে টানতে থাকে, যা শ্বাসনালীকে সংকীর্ণ করে ফেলে। এর ফলে নাক ডাকতে থাকে। কিন্তু যারা চিৎ হয়ে ঘুমান তাদের প্রত্যেকের নাক ডাকে না। ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার অধ্যাপক ও ঘুম বিশেষজ্ঞ ইন্দিরা গুরুবাগবাতুলের মতে, চিৎ হয়ে ঘুমালে তিন ধরনের লোকদের নাক ডাকে-

* যাদের শ্বাসনালী সংকীর্ণ হয়ে গেছে, হতে পারে ওজন বেড়ে যাওয়াতে ফ্যাটি টিস্যু সৃষ্টি হয়েছে অথবা শ্বাসনালী প্রকৃতিগতভাবে ছোট।

* যাদের জিহ্বা অসামঞ্জস্যভাবে বড় এবং গলায় প্রচুর স্থান দখল করে আছে।

* যাদের উপরিস্থ শ্বাসনালীর পেশিসমূহ ও জিহ্বা ঘুমের সময় প্রচুর রিলাক্সে থাকে।

যদি পরিবার থেকে আপনার নাক ডাকার অভিযোগ আসে, তাহলে চিৎ হয়ে না ঘুমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন, যেমন- কাতে শুয়ে সামনে ও পিছনে বালিশ রাখতে পারেন। যদি চিৎ হয়েই শুতে চান, তাহলে ওয়েজ বালিশ ব্যবহার করতে পারেন। এতে নাক ডাকার প্রবণতা কমবে।

ঘুমের ঘাটতি

অনেক মানুষই নিয়মিত ঠিকমতো ঘুমান না। যতটুকু ঘুমানো দরকার, তার প্রতি সচেতন নন। এর ফলে তাদের ঘুমের অভাব হয়। ডিভাইসের ব্যবহার ও অন্যান্য অযৌক্তিক ব্যস্ততার কারণে ঘুমের মানও কমে যায়। ঘুমের ঘাটতি পূরণের জন্য আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে বেশিক্ষণ ‘ডিপ স্লিপ’ স্টেজে রাখতে চায়।

ডিপ স্লিপ হলো ঘুমের এমন একটা পর্যায়, যখন গলা-মুখ-জিহ্বার পেশীসমূহ সবচেয়ে বেশি রিলাক্সে থাকে এবং মস্তিষ্কের তরঙ্গ সবচেয়ে বেশি ধীর হয়। একারণে ডিপ স্লিপ স্টেজে নাক ডাকার প্রবণতা বেড়ে যায়, জানান ডা. গুরুবাগবাতুল। নাক ডাকা এড়াতে বা কমাতে আমেরিকান একাডেমি অব স্লিপ মেডিসিনের পরামর্শ স্মরণে রাখতে পারেন- প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিরাতে কমপক্ষে সাত ঘন্টা ঘুমানো উচিত।

স্লিপ এপনিয়া

ঘুমের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত একটি সমস্যা হলো স্লিপ এপনিয়া। এই সমস্যার সবচেয়ে প্রচলিত উপসর্গ হলো নাক ডাকা। এক্ষেত্রে নাক ডাকার সময় শ্বাস নেওয়া কিছু মুহূর্তের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ও পুনরায় শুরু হয়। রাতে অনেক বার এমন ঘটনা ঘটতে পারে, যার ফলে আপনার ঘুম সামান্য সময়ের জন্য বারবার ভেঙে যেতে পারে। স্লিপ এপনিয়া একটি বিপজ্জনক সমস্যা। এটা ঘুমের মান কমিয়ে দেয় এবং শরীরকে অক্সিজেনের অভাবে ভোগায়।

আপনার স্লিপ এপনিয়া আছে কিনা যাচাই করতে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। হালকা স্লিপ এপনিয়ার ক্ষেত্রে জীবনযাপনে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হতে পারে। যেমন- সিগারেট ছেড়ে দিতে হবে এবং পর্যাপ্ত শরীরচর্চা করতে হবে।তীব্র স্লিপ এপনিয়ার ক্ষেত্রে ঘুমের সময় শ্বাসনালী খোলা রাখতে সিপিএপি মেশিন ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে।

ঢাকা/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়