ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

লাইফ জ্যাকেট পেয়ে খুশি বাগেরহাটের জেলেরা

আলী আকবর টুটুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ১০ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লাইফ জ্যাকেট পেয়ে খুশি বাগেরহাটের জেলেরা

বাগেরহাট সংবাদদাতা : লাইফ জ্যাকেট পেয়ে খুব খুশি বাগেরহাট উপকূলের ২৫০ জেলে। তারা এখন গহীন সমুদ্রে মাছ শিকারে ভরসা পাচ্ছেন।

বঙ্গোপসাগরের অবস্থান কাছাকাছি হওয়ায় সাগরে মাছ শিকার বাগেরহাটের জেলেদের অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।

বাগেরহাটের ইতিহাসে দেখা যায় এখানকার প্রথম বাসিন্দাদের মধ্যে একশ্রেণির জেলেরাও ছিলেন। হয়তোবা সেই সূত্র ধরেই বাগেরহাটের উপকূলীয় অনেকস্থানেই জেলে পল্লী দেখতে পাওয়া যায়। জেলে পল্লীগুলোতে গেলে শুনতে পাওয়া যায় বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গিয়ে জেলেদের নানা অভিজ্ঞতার গল্প। যারমধ্যে ঝড়ের কবলে পড়ে দুর্ঘটনার গল্পই সিংহভাগ।

ঝড়ের কবলে পড়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন জেলে পল্লীতে এমন পরিবারের সংখ্যা অনেক। মাছ শিকারে গিয়ে স্বজন চির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় অনেক পরিবারই বুকে কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছেন।

ঝড়-ঝঞ্ঝার কবলে পড়ে ছোট-খাটো অঘটনের যেন শেষ নেই। তবে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে সুন্দরবন উপকূলের বঙ্গোপসাগরে ভয়াবহ ঝড়ে একযোগে অনেক জেলের প্রাণ হারানোর ঘটনা ঘটে। এতে ডুবে যায় অর্ধশত ট্রলার। মাত্র ৭৬ জেলেকে জীবিত উদ্ধার সম্ভব হলেও ৮টি জেলে পল্লীর ৭৫ জেলে নিখোঁজ হয়ে যায়। উদ্ধার হয় দুই জেলের লাশ । বাগেরহাটের জেলে পল্লী কচুয়ার বগা, বাধাল, মাদারতলা, আলীপুর, বিশখালী, উমাজুড়ি, মোড়েলগঞ্জের শোলখারী, চিতলমারীর কেষ্টনগর হয়ে ওঠে শোকের পল্লী।
 


বেঁচে আসা জেলেরা জানান, বঙ্গোপসাগরের ১ নং ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় শতশত জেলেরা ট্রলার নিয়ে মাছ ধরছিলো। এসময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঝড়ো হওয়া ও বৃষ্টি উচু ঢেউয়ে অনেক ট্রলার সাগরে ডুবে যায়। এ সময়ে জেলেরা সাঁতরে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করে।

এসব জেলে পল্লীর পরিবারগুলো আতঙ্ক শেষ হয়ে যায়নি। এখনো ঝড়-ঝঞ্ঝায় জেলে পরিবারগুলো ভয়ে কুকড়ে থাকে। সংসারের উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে। জেলেদের মনে সাহস জোগাতে বাগেরহাটের উপকূলীয় পাচঁ উপজেলার ২৫০ জন জেলেকে লাইফ জ্যাকেট প্রদান করা হয়েছে। সোমবার কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মোরেলগঞ্জ স্টেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইফ জ্যাকেট গুলো জেলেদের হাতে তুলে দেন নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন এম মিনারুল হক।

কোস্ট গার্ড মোরেলগঞ্জ কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. ফরিদ আহম্মেদের সভাপতিত্বে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিয়াউল হায়দার চৌধুরী, কোস্টগার্ড মোংলা স্টেশন কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোস্তফা কামাল, মোরেলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার বিশ্বাস, মোংলা কোস্ট গার্ডের অপারেশন অফিসার লে. হায়াত ইবনে সিদ্দিক, পেটি অফিসার আলমগীর কবিরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

সমুদ্রে মাছ ধরার সময় দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে মোংলা, শরণখোলা, বাগেরহাট, কচুয়া ও মোরেলগঞ্জের ৫ নারী জেলেসহ ২৫০জন প্রান্তিক জেলেকে এ জ্যাকেট প্রদান করা হয়।



রাইজিংবিডি/বাগেরহাট/১০ জানুয়ারি ২০১৮/আলী আকবর টুটুল/শাহ মতিন টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়