ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কুল চাষে প্রবাসী রুবেলের ভাগ্য বদল

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১২, ১০ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১২:১৩, ১০ জানুয়ারি ২০২৩
কুল চাষে প্রবাসী রুবেলের ভাগ্য বদল

পরিকল্পনা মাফিক চেষ্টায় ও পরিশ্রমে সফল হওয়া যায়, ভাগ্যবদল হয়। কুল চাষে সফলতার মাধ্যমে তার প্রমাণ দেখালেন হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গাদিশাল গ্রামের বাসিন্দা হারুনুর রশিদ রুবেল। বাড়ির পাশের ৬০ শতক জমিতে এই ফল চাষ করে চলতি বছর তিন চার লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।

রুবেল তার ভাগ্য বদলে প্রথমে পাড়ি জমিয়েছিলেন আরব আমিরাতে। সেখানে কিছুদিন থেকে দেশে ফিরে আসেন তিনি। এরপর থেকেই বেকার ছিলেন। বেকারত্ব থেকে বাঁচতে তাই ফল চাষের উদ্যেগ গ্রহন করেন রুবেল। তবে কিভাবে বাগান শুরু করবেন সেটি তিনি বুঝতে পারছিলেন না। পরে স্থানীয় কৃষিবিদদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ৬০ শতক জমিতে শুরু করেন কুল চাষ।

আরো পড়ুন:

বন্ধুদের আশ্বাস ও কৃষিবিদদের পরামর্শে রংপুর থেকে সিডলেস কুল, অস্ট্রেলিয়ান বল সুন্দরী, কাশ্মিরি আপেল কুলের চারা সংগ্রহ করেন রুবেল। ২০২১ সালের মার্চ মাসে বাড়ির পাশের ওই জমিতে রোপণ করেন প্রায় ২৫০টি সিডলেস কুল, অস্ট্রেলিয়ান বল সুন্দরী, কাশ্মিরী আপেল কুল গাছের চারা। প্রায় ৭ মাস যেতেই গাছে আসতে শুরু করে কুল। গাছ রোপণের রোপণের প্রথম বছর প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করে  ৪ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। চলতি বছর এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। এবারও তিনি চার লাখ টাকা লাভ করবেন বলে আশা করছেন।

আলাপকালে রুবেল বলেন, ‌সঠিক পরিচর্যা করায় গাছে গাছে ফল এসেছে। প্রতিটি গাছেই ফল রয়েছে। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর থেকে কুল বিক্রি শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ টাকার কুল বিক্রি হয়েছে। বাকি সময়ে আরো ৩ লাখ টাকার কুল বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টাকা।  

এর আগে রোপণের পর প্রথম বছর ২০২১-২০২২ সালে কুল চাষে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফল বিক্রি করি। কুল চাষে সামান্য পরিমাণে সার প্রয়োগ করতে হয়েছে। অধিক পরিমাণে প্রয়োগ করা হয়েছে গোবর। নেটের জাল দিয়ে পুরো জমি ঢেকে রাখা হয়েছে। পোকা দমনে ব্যবহার করা হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ। কোনো প্রকারের বিষ প্রয়োগ করতে হচ্ছে না। বিষমুক্ত চাষ করায় ক্রেতাদের কাছে এ কুলের চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় লোকজন আমার কাছ থেকে  কুল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। 

তিনি আরও বলেন, কুল চাষে স্থানীয় কৃষিবিদের পরামর্শের পাশাপাশি সার্বিকভাবে সহযোগিতা পেয়েছি গাজীউর রহমান রাসেলসহ অন্য বন্ধুদের। কুলে সাফলতা পাওয়ায় এখন আর বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। আগামীতে কুল চাষ সম্প্রসারণের ইচ্ছা রয়েছে আমার।

হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ দাশ বলেন, পুষ্টিগুণের দিক থেকেও কুলের কোনো জবাব নেই। ১০০ গ্রাম কুলে ৭৯ গ্রাম ক্যালোরি, ১ গ্রাম প্রোটিন, ২০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ১০ গ্রাম ফাইবার থাকে। এছাড়া ৭৭ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ৫ শতাংশ পটাসিয়াম পাওয়া যায় ফলটি থেকে।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়