ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে ছাত্রদল নেতা!
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
নব-গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সদস্য আবির মোহাম্মদ সোহাগকে ছাত্রদল থেকে ‘বহিষ্কার’ করা হয়েছে।
বুধবার (৩ নভেম্বর) সকালে জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আবির মোহাম্মদ সোহাগ কসবা উপজেলার ৭ নং পশ্চিম ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এদিকে সোহাগকে বহিষ্কার সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
সত্যতা নিশ্চিত করতে সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর ৩৪৯ সদস্য বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটি অনুমোদন দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। পরদিন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে এই কমিটি প্রকাশ করা হয়।
কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে ৯০ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ১১ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ১১ জন, উপ-সম্পাদক ১৩৬, সহ-সম্পাদক ৫৯ জন ও সদস্য ৪০ জন স্থান পায়। কমিটিতে জেলা সদর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার বেশ কয়েকজন নেতার নাম রয়েছে।
এর আগে ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা ছাত্রলীগের ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। সম্মেলনের প্রায় ৪৫ মাস পর ৩৪৯ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পরই শুরু হয় বিতর্ক। এই ‘ঢাউস’ কমিটি নিয়ে ফেসবুকে বইছে সমালোচনার ঝড়। অভিযোগ রয়েছে- অছাত্র, বিবাহিত, জুতার দোকানের কারিগর, মাদক মামলার আসামি, আপন দুই ভাই, ছাত্রদল কর্মী কমিটিতে স্থান পেয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বিকেলে এই কমিটি সংশোধনের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এর মধ্যেই বুধবার জেলা ছাত্রলীগের সদস্য সোহাগকে ছাত্রদল থেকে ‘বহিষ্কারের’ ঘটনায় শহরে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আবির মোহাম্মদ সোহাগ ২০০৪ সালে অনুমোদিত কসবা পশ্চিম ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছাত্রদলের হয়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিতেন।
এমন অভিযোগ অস্বীকার করে সোহাগ বলেন, ‘ছাত্রলীগ দিয়েই আমার রাজনীতি শুরু। আমি বিএনপির কর্মকাণ্ডে কখনোই আমি ছিলাম না। কেন্দ্র, জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতাদের স্বাক্ষরে আমি বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে আসীন হই। এখন আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।’
তবে জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আবির ছাত্রলীগ করে বলে আমাদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ আসছিলো। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফুজায়েল চৌধুরী বলেন, প্রেস বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে অবহিত হয়েছি। আবির কোন কমিটির সময় ছাত্রদল করতো তা জানতে দপ্তর সম্পাদককে ডাকা হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন বলেন, আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রুবেল/এনএইচ