ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘ঠান্ডায় কাবু হইছি বাহে’

আমিরুল ইসলাম, রংপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৯, ৩০ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ০৮:৫২, ৩০ জানুয়ারি ২০২২
‘ঠান্ডায় কাবু হইছি বাহে’

আজগর আলী। ছবি: রাইজিংবিডি

‘কয়েকদিন থেকে যেভাবে শীত আর ঠান্ডা যাচ্ছে, তাতে হামরা কাবু হয়া গেছি বাহে। ঠান্ডার সাথে যুদ্ধ করিয়া সকাল হইলেই কাজে বের হতে হয়। ঠান্ডায় কাজে যেতেই হামার অবস্থা খুব খারাপ। জানিনা এই আবহাওয়া আর কতদিন থাকবে।’

রোববার (৩০ জানুয়ারি) সকালে রংপুর নগরীর তাজহাট এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে বের হন শ্রমিক আজগর আলী। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।

শুধু আজগর আলীই নন, শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় কাঁপছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।আবহাওয়া অফিস বলছে, দুই-একদিনের মধ্যে আবহাওয়ার উন্নতি হবে।

আজ (৩০ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় আবহাওয়া অফিসের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকালের চেয়ে ১ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। কুড়িগ্রাম রাজারহাট আর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস বলেছে, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এদিকে, কুয়াশা আর জেঁকে বসা হিমেল হাওয়ায় জবুথবু জনজীবন। এরপরও বসে নেই দিনমজুর ও কৃষক-শ্রমিকরা। জীবিকার তাগিদে মাঠে নেমেছেন তারা। এছাড়া ছিন্নমূল মানুষরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

নগরীর মডার্ন মোড়, পার্ক মোড়, তাজহাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ঘন কুয়াশা। মর্ডান এলাকায় কথা হয় এরশাদ আলী নামে এক মটর শ্রমিকের সঙ্গে।  তিনি  বলেন, ‘আজ সকালে কুয়াশা অনেক বেশি। পরিবহনে কাজ করি তাই সকাল ৬টায় বাসা থেকে বের হয়েছি। এখন হাত পা ঠান্ডায় অবসের মতো হয়ে আসছে। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা খুব কষ্টকর হয়ে গেছে এবারের ঠান্ডায়।’

খামার মোড় এলাকায় রুপালী রানী বলেন, ঠান্ডায় গরুর অবস্থা খুব খারাপ।   তাই চটের বস্তা দিয়ে কিছুটা শীত নিবারণের চেষ্টা করেছি।

এদিকে, এবারের শৈত্যপ্রবাহে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে দিন দিন বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডাক্তার মো. ফখরুল আলম বলেন, ‘শীত বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে শুরু করেছে শীতজনিত রোগী। শীতে ডায়রিয়া, নিউমেনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে  হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। গত এক সপ্তাহে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে সাড়ে তিনশ শিশু।’

অন্যান্য বছর ডিসেম্বরের শুরু থেকে এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়লেও এ বছর শীত নেমেছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে এখন তা অনেকটা মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে গত পাচ দিন ধরে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশা এ অঞ্চলের মানুষকে কাহিল করে দিয়েছে। 

আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, রংপুরে তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। কুয়াশা বেশি থাকছে। শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই-একদিন থাকতে পারে। এরপর আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হবে।

/আমিরুল/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়