ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ভুয়া কাবিননামা তৈরি, কনেসহ জেল হাজতে ৬

জয়পুরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ২৩ জুন ২০২২   আপডেট: ১১:০০, ২৩ জুন ২০২২
ভুয়া কাবিননামা তৈরি, কনেসহ জেল হাজতে ৬

ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে সেই স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক, নারী নির্যাতন ও মোটা অঙ্কের মোহরানার দাবীতে মামলা করে জেল খাটানোর পর তা ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় কথিত কনে ও তার ৫ সহযোগীকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। 

বুধবার (২২ জুন) বিকেলে ওই আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন এ আদেশ দেওয়ার পর কথিত কনেসহ ৬ জনকে সন্ধ্যায় জেল হাজাতে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্ত ৬ জন হলেন- দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত রুবেল শেখের মেয়ে রিনী আক্তার (২৮), একই গ্রামের উত্তর পাড়ার এবারত আলীর ছেলে ইসরাইল শেখ (ইছা),  একই উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের  মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে আবু সাঈদ, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার উত্তর গোপালপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সোহেল রানা, একই উপজেলার রতনপুর গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে পারভেজ আলী ও বগুড়া সদর উপজেলার আটাপাড়া গ্রামের মৃত ইমান আলী সরদারের ছেলে রবিউল ইসলাম।

মামলা সূত্রে জানায়,  রিনী আক্তার ব্যবসার সুবাদে প্রায়ই বগুড়া জেলা শহরে যাতায়াত করতেন। রিনী তার মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনে বগুড়া সদর ডাক অফিসের সরকারি কর্মকর্তা আল আমিনের সঙ্গে পরিচয় হয়। রিনী জানতে পারেন আল আমিন মোটা বেতনের একজন সরকারি চাকরিজীবী। অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল হিসেবে প্রথমে তার ব্যবসায় পুঁজি বিনিয়োগ করতে আল আমিনকে প্রলুব্ধ করেন।

আল আমিন এতে রাজী না হলে রিনী আক্তার তার সহযোগীদের স্বাক্ষী করে জয়পুরহাট জেলা শহরের পাটারপাড়া এলাকার মৃত  কাজী নূরুল ইসলামকে বিয়ের কাজী দেখিয়ে বিয়ের ভুয়া রেজিষ্ট্রি ও ৫ লাখ টাকার দেন মোহরের কাবিন নামা তৈরি করেন।  পরে ২০২১ সালের ২২ আগস্ট রিনী দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। একই বছর ১৯ অক্টোবর সেই মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত আল আমিনকে দিনাজপুরের জেল হাজতে পাঠানো হয় ও গত ৩১ অক্টোবর তিনি জামিনে মুক্ত হন।

এ দিকে সেই ভূয়া কাবিননামা চ্যালেঞ্জ করে আল আমিন গত বছর ৯ আগস্ট জয়পুরহাট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিনীসহ তার সহযোগীদের (কাবিননামার স্বাক্ষী) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এতে আদালত তদন্তের জন্য জেলা সাব রেজিস্টারের কাছে নির্দেশ দিলে সদর সাব রেজিস্টার দোস্ত মোহাম্মদ গত বছর ১১ অক্টোবর আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। ওই তদন্ত রিপোর্টে রিনী ও আল আমিনের বিয়ের কাবিননামা ভুয়া প্রমাণিত হয়।

বুধবার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মানিক হোসেন ও আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম আশফাকুল আলম রাজু’র যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে ভুয়া তথ্য দিয়ে আল আমিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় রিনীসহ তার ৬ সহযোগীকে জেল হাজাতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক আব্দুল্লাহ্ আল মামুন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম আশফাকুল আলম রাজু বলেন, এ আদেশের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন।

জয়পুরহাট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল লতীফ খান জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে আসামিদের সন্ধ্যায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

শামীম কাদির/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়