ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

মাগুরায় স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষায় ৪৯ লাখ টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ

মাগুরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০৯, ২৬ আগস্ট ২০২২   আপডেট: ২২:৫৫, ২৬ আগস্ট ২০২২
মাগুরায় স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষায় ৪৯ লাখ টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ধুলজোড়া চুড়ারগাতি পিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের চারটি পদে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের বিপরীতে ৪৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে।

আগামীকাল শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ২টায় স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। একাধিক আবেদনকারী জানিয়েছেন, অনেক পরীক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি, যাতে তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারেন। এমনকি চাকরি হবে এমন কয়েকজনকে মাত্র দুইদিন আগে গোপনে গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকাল ৩টায় প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে। আগে থেকেই মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে কারা চাকরি পাবেন নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে বলেও তাদের অভিযোগ।

অভিযোগকারীরা জেলা প্রশাসক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে অবৈধ এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন।  

অফিস সহকারী পদের বিপরীতে প্রার্থী অসিত কুমার বিশ্বাস, স্বপন কুমার বিশ্বাস, সুজন কুমার বিশ্বাস, সোহাগ বিশ্বাস, পরিচ্ছন্নকর্মী পদে প্রার্থী গণেশ বিশ্বাস ও আয়া পদে প্রার্থী ববিতা মন্ডল লিখিত অভিযোগে জানান, এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক স্কুলে চাকরি নিয়োগ বিধিমালা ২০২১-এর গেজেট মোতাবেক যে কোনো ধরনের নিয়োগ পরীক্ষার কমপক্ষে ৩ কর্মদিবস আগে প্রবেশপত্র বিতরণের নিয়ম থাকলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ সে নিয়ম মানেনি। উপরন্তু শনিবার স্কুল বন্ধ থাকাকালীন পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করে মাত্র দুইদিন আগে পছন্দের প্রার্থীদের একটি অংশের বাড়ি গিয়ে প্রবেশপত্র বিতরণ করা হয়েছে।  

এ দিকে পরীক্ষার মাত্র দুইদিন আগে প্রবেশপত্র পেয়ে অনেক চাকরিপ্রার্থী বিপাকে পড়েছেন। আবেদনকারী অধিকাংশ প্রার্থী বাড়িতে থাকেন না। প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন জেলার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় বেসরকারি চাকরি করেন। তারা গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকালে প্রবেশপত্র পেলেও পরদিন শুক্রবার ছুটি থাকায় প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিতে পারেননি। ফলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ তাদের জন্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। 

চাকরিপ্রার্থীরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রসকান্ত বিশ্বাস ও প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাস যৌথভাবে অফিস সহায়ক পদের বিপরীতে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে শঙ্কর বিশ্বাস নামে একজনকে নিয়োগ দিতে চান। এছাড়া ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট পদে সৌরভ রায়কে ১৫ লাখ টাকা, আয়া পদে নিষ্কৃতি বিশ্বাসকে ১০ লাখ টাকা, পরিচ্ছন্নকর্মী পদে মনোজিত বিশ্বাসকে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিতে তারা চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এ বিষয়ে প্রমাণ দেওয়ার মতো কথোপকথনের রেকর্ড তাদের কাছে আছে বলেও অভিযোগকারীরা দাবি করেন। 

বিষয়টি জানতে চাইলে মাগুরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর কবির সাংবাদিকদের জানান, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ডিজির প্রতিনিধি সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রবেশপত্র দেওয়ার বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে নেই।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাস পরীক্ষার দুই দিন আগে পরীক্ষার্থীর বাড়ি গিয়ে প্রবেশপত্র বিতরণ করেছেন স্বীকার করে বলেন, ‘অনেক সময় দিনের দিন প্রবেশপত্র দিয়েও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গেই হবে।’

এ সময় তিনি টাকাপয়সা লেনদেনের খবর সঠিক নয় বলেও উল্লেখ করেন। 
 

শাহীন/তারা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়