ঢাকা     শুক্রবার   ১৭ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

বগুড়ার শাহ সুলতান কলেজে ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় মামলা

বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৯, ২০ আগস্ট ২০২৩  
বগুড়ার শাহ সুলতান কলেজে ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় মামলা

বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক শিক্ষার্থী। রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মামলার তিন আসামিকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এর আগে, গতকাল শনিবার কলেজের তিন কর্মচারীকে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

মামলায় গ্রেপ্তার তিন জন হলেন- শাজাহানপুর উপজেলার লতিফপুর দক্ষিণপাড়ার হারুনুর রশিদ (৪০), বগুড়া সদর উপজেলার জিগাতলার আমিনুর রহমান (৪৫) ও ইসলামপুর হরিগাড়ীর আব্দুল হান্নান (৪৫)। এরা সবাই শাহ সুলতান কলেজের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত। 

এ মামলায় অপর এজাহার নামীয় আসামি শাজাহানপুরের ওমরদীঘি চন্দ্রহাটা গ্রামের কাওছার আলী (২৪)। এছাড়া আরও ৫ জনকে নাম না জানা আসামি করা হয়েছে মামলায়। কাওছার শাহ সুলতান কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি নিজেকে কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী ও অফিস স্টাফ পরিচয় দিতেন।

মামলার বাদী শাজাহানপুরের শ্মশানকান্দী এলাকার রাশাদুল ইসলাম। তাকে এইচএসসিতে ভর্তির কথা বলে ৫০ হাজার টাকা ও মার্কশিট নিয়েছিলেন হারুন। 

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১ নম্বর আসামি হারুনের সহায়তায় অন্য আসামিরা রাশাদুল ইসলামের মতো একইভাবে হাবিবা আক্তার ও সাব্বির হোসেনের কাছ থেকে ২০ হাজার এবং মিলনের কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা নেন। এছাড়া তাদের মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন, প্রশংসাপত্র নিয়ে রাখেন হারুন। এই টাকা নেওয়ার পর ভুক্তভোগীদের রোল নম্বর দেওয়া হয়। সেই সুবাদে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষাগুলো দিয়েছেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য প্রত্যেকের কাছে ৫ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন অভিযুক্তরা। কিন্তু পরীক্ষার প্রবেশপত্র তারা দিতে পারেননি। প্রবেশপত্র চাইলে বিভিন্ন অজুহাত দেখানো হতো ওই শিক্ষার্থীদের। 

গত ১৬ আগস্ট এইচএসসি পরীক্ষার দিনে শিক্ষার্থীরা কলেজে গিয়ে হারুন ও অন্যদের কাছে গিয়ে প্রবেশপত্রের জন্য চাপ দেন। তখন কলেজের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন তাদেরকে দেওয়া রোল নম্বরগুলো ভুয়া। কাগজে তাদের ভর্তির কোনো নথি নেই।  

ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রচারের পর কলেজ কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। তারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পাশপাশি রাজশাহী বোর্ড থেকে চার সদস্যের একটি টিম শনিবার কলেজে আসে তদন্তের জন্য। তদন্ত চলাকালে এক পর্যায়ে বিকেলে আমিনুর রহমান ও হারুনকে র্যাব আটক করে নিয়ে যায়। আর আব্দুল হান্নানকে আটক করে শাজাহানপুর থানা পুলিশ। পরে রাতে মামলা হলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

মামলার ৪ নম্বর আসামি কাওছারের বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন বলেন, কাওছার আমার আপন ফুফাতো ভাই। সে নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী, অফিস স্টাফ পরিচয় দিতো। আমার কাছে টাকা ও মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন কার্ড কাওছারই নিয়েছিল। এরপর আর তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি। ফোন ধরে না, ফেসবুকে ব্লক করে রেখেছে। 

শাহ সুলতান কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান বলেন, কাওছার এই কলেজে এইচএসসি শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের কেউ না। এখন তো  কলেজের শিক্ষার্থীও না। তিনি একজন প্রতারক।

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, গতকাল রাতে মামলাটি হয়েছে। মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামিকে আজ দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। কাওছার নামে একজন পলাতক রয়েছেন।

এনাম/ মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়