ঢাকা     রোববার   ১৯ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

ফেনীতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে

ফেনী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ১১ জানুয়ারি ২০২৪  
ফেনীতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে

ফেনীতে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগে রোগীর সংখ্যা। ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার তিন থেকে চার গুণ বেশি রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে। এদের অধিকাংশই শিশু।

ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট কিংবা নিউমোনিয়ায় অসুস্থ শিশুদের নিয়ে স্বজনেরা ভিড় করছেন হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে। এতে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

গত তিন দিনেই জেলায় শুধু ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে সাড়ে ১১ শ’ শিশু রোগী। তবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, সঠিকভাবে যত্ন নিলেই বাচ্চাদের এই ধরণের সমস্যা কমবে।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. আসিফ ইকবাল বলেন, গত এক সপ্তাহে আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে ৫ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ শিশুই ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত।

সরেজমিনে হাসপাতালটিতে দেখা যায়, শুধু শহর থেকে নয়, রোগী আসছে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেও। বিপুল সংখ্যক রোগীর উপস্থিতিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

হাসপাতালের শিশু বিভাগের নার্স সুমাইয়া খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার শিশু ওয়ার্ডে ২৬ বেডের বিপরীতে ৪৪জন রোগী ভর্তি রয়েছে। রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রোগী বেড়ে যাওয়ায় বেডে জায়গা না পেয়ে অনেকে মেঝেতে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। 

হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নার্স শ্যামলী রানী বলেন, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৭ বেডের বিপরীতে ৪৮জন রোগী ভর্তি আছে। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। বিশেষ করে শিশু রোগীদের যত্নের সাথে দেখতে হয়। এরপরেও আমরা রোগীদের সাধ্যমত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। 

সদর উপজেলার লেমুয়া এলাকা থেকে ছয় মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে এসেছেন শাহিন আলম। তিনি বলেন, গত তিনদিন শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া সমস্যায় ভুগছে তার শিশুটি। পরিবারের প্রথম সন্তান তাই চরম দুঃশ্চিন্তার মধ্যে আছেন তিনি।

শর্শদি থেকে আসা মিতালী জানান, তার মেয়ের বয়স দেড় মাস। দুই দিন হলো ঠাণ্ডা ও কাশির সমস্যায় ভুগছে শিশুটি। সন্তানের চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারেন না। তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।

ফাহমিদা জানান, শীতে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছে শিশুরা। তার দুই ছেলে নিয়ে বেডে জায়গা না পেয়ে মেঝেতে এক বিছানায় চিকিৎসা দিচ্ছে।
তাদের মতো অনেকেই দূরদুরান্ত থেকে তাদের প্রিয় সন্তানটিকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।

তবে শিশুদের এমন সমস্যা নিয়ে আতঙ্কিত না হবার পরামর্শ দিয়ে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবাল বলেন, আমরা রোগীর স্বজনদের পরামর্শ দিচ্ছি শিশুদের প্রতি আরও বেশি যত্নবান হতে। বিশেষ করে গরম কাপড় পরানো, উষ্ণ গরম পানি পান করানো, শিশুদের বেশি বেশি বুকের দুধ খাওয়াতে বলছি।

ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, শীতের কারণে শিশু রোগীর চাপ বেড়েছে। ঠান্ডায় বিশেষ করে শিশু রোগীর সংখ্যা হসপিটালে বৃদ্ধি পায়। আমরা ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি রোগীদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য। রোগীদের সেবার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধ দিয়ে যাচ্ছি। সামান্য কিছু ওষুধ রোগীদের বাহির থেকে কিনতে হয়। সেগুলো যেন বাইরে থেকে কিনতে না হয় সেজন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

তবে এই সময়ে আতঙ্কের কারণ নেই, সময়মত বাচ্চাদের যত্ন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে স্বজনদের আহ্বান জানান তিনি।

 

সাহাব/ফয়সাল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়