ঢাকা     রোববার   ১৯ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

৩০০ বিঘা জমিতে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, ভোগান্তিতে চাষিরা

মোসলেম উদ্দিন, দিনাজপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৭:৩৪, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
৩০০ বিঘা জমিতে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, ভোগান্তিতে চাষিরা

দিনাজপুরের হিলিকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় এনেছে সরকার। অথচ এই উপজেলার কোকতারা গ্রামের ৩০০ বিঘা কৃষি জমিতে থাকা গভীর নলকূপে নেই কোনো বিদ্যুৎসংযোগ। ফলে বিগত পাঁচ বছর ধরে ডিজেল চালিত মেশিন দিয়ে জমিতে পানি সেচ দিয়ে আসছেন কৃষকরা। এতে কয়েকগুণ বাড়তি খরচ হচ্ছে তাদের। বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ক্ষুদ্ধ কৃষকরা। 

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কোকতারা গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩০০ বিঘা জমিতে রয়েছে একটি গভীর নলকূপ। এই নলকূপের পাশ দিয়ে রয়েছে বিদ্যুতের পোলসহ সংযোগ। কিন্তু, জমির নলকূপের সঙ্গে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। ডিজেল চালিত মেশিন দিয়ে বিঘা বিঘা জমিতে সেচ দিয়ে ফসল ফলাচ্ছেন কৃষকরা। এজন্য বিঘাপ্রতি পানির মূল্য দিতে হচ্ছে চাষিদের প্রায় ৪ হাজার টাকা। অথচ বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে জমি সেচ দিতে বিঘাপ্রতি তাদের খরচ হতো ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। ফলে বছরে তিনটি ফসল ফলাতে লোকসানের সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে দাবি কৃষকদের। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৪ সালে প্রথম বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে কোকতারা গ্রামে চালু হয় গভীর নলকূপ। ২০১৮ সাল পর্যন্ত কৃষকরা নলকূপ থেকে পানি পেয়েছেন। কিন্তু, কাদের নামের এক প্রভাবশালী নলকূপটিকে নিজের বলে দাবি করেন। তিনি প্রভাব খাটিয়ে নলকূপটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। 

কোকতারা গ্রামের কৃষক মহির উদ্দিন, আলম হোসেন, জহুরুল ইসলামসহ কয়েকজন রাইজিংবিডিকে বলেন, সরকার আমাদের উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় এনেছে। অথচ আজ আমরা কৃষি কাজে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন। গত ৫ বছর ধরে বিদ্যুৎ না পেয়ে জমি চাষাবাদে আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

তারা আরও বলেন, বছরে আমরা তিনটি ফসল ফলায় জমিতে। ডিজেল দিয়ে আবাদ করতে আমাদের কয়েকগুণ বাড়তি খরচ হয়। একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন। অভিযোগ দিয়েও আমাদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কাদেরের মোবাইল নম্বরে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। 

হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুর রেজা শাহিন বলেন, আমি বিষয়টি জানি। গত ৫ বছর ধরে বিদ্যুৎ নেই, আগে সংযোগটি ছিল। কাদের নামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তার প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন। এতো জমিতে ডিজেল চালিত মেশিন দিয়ে পানি সেচ দিতে চাষিরা হিমশিম খাচ্ছেন। আমি সরকার এবং জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ করছি দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে এই ৩০০ বিঘা জমিতে ফসল ফলাতে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অমিত রায় বলেন, কোকতারা গ্রামের গভীর নলকূপের বিষয়টি অবগত আছি। কয়েক দিনের মধ্যে গ্রামবাসীসহ দুই পক্ষকে নিয়ে বসবো। এর একটা সমাধান করবো।

দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর হিলি শাখার এজিএম বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, এটা পুরাতন বিষয়। আমাকে ফাইল দেখতে হবে। আপনি অফিসে এসে তথ্য জেনে যান।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ