ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

পীরের নির্দেশে ঘরের ভেতর বানিয়েছেন কবর, সেখানেই দাফনের অসিয়ত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১০, ১৪ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৩:১১, ১৪ মার্চ ২০২৪
পীরের নির্দেশে ঘরের ভেতর বানিয়েছেন কবর, সেখানেই দাফনের অসিয়ত

পীরের নির্দেশে মৃত্যুর আগেই কবর তৈরি করে পাকা করেছেন ভাজন আলী ও অবিরন নেছা দম্পতি। মৃত্যুর পর সেখানেই দাফনের অসিয়ত (আদেশ) করেছেন পরিবারের সদস্যদের। কবর তৈরির পাশাপাশি সেখানে সুসজ্জিত পাকা মাজার তৈরি করেছেন। ১২ বছর ধরে কবর সংলগ্ন ঘর বসবাস করছেন তারা।

ভাজন আলী পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভাটিয়াপাড়া গ্রামের মৃত ঈমান আলী ফকিরের ছেলে। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী এই বৃদ্ধের বয়স ১০১ হলেও ভাজন আলীর দাবি, তার বয়স আরও বেশি। তার স্ত্রী অবিরনের বয়স ৮০ বছর।

ভাজন আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর আগে ময়মনসিংহ জেলার শম্ভুগঞ্জের ছাইফুদ্দীন এনায়েতপুরীর কাছে বাইয়্যাত নেন তিনি। পীরের আদেশেই মৃত্যুর আগে কবর বানিয়েছেন।

রাইজিংবিডির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বাবা মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, তার কবরের পাশেই যেন আমার ও আমার স্ত্রীর কবর হয়। সে হিসেবে জায়গা নির্ধারণ করা আগে থেকেই। পরে শম্ভুগঞ্জের পীরের নির্দেশে মৃত্যুর আগেই মাটি খুঁড়ে কবর বানিয়ে রেখেছি। মৃত্যুর পরে আমাদের যেন এখানেই দাফন করা হয়, পরিবারের সদস্যদের সেই অসিয়ত করা আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাজন আলীর তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় এক ছেলের। ভাজন আলীর ছেলে আব্দুল জলিল বলেন, আমার দাদার একমাত্র সন্তান ছিলেন আমার বাবা। তিনি আমার মা-বাবাকে বলে গেছেন, মৃত্যুর পরেও তোমরা আমার সঙ্গে থাকিও। এজন্য আমার বাবা দুটি করে রেখেছেন। যাতে মৃত্যুর পর তাদের আমরা অন্য কোথাও কবর না দিই।

ভাজন আলীর স্ত্রী অবিরন নেছা বলেন, আমার শ্বশুর এনায়েতপুরের পীরের ভক্ত ছিলেন। আমাকে সবসময় মা বলে ডাকতেন। একদিন বললেন, তুমি তো আমার মা হও, আমাকে বুকে নিয়ে থাকবা তুমি। আমি জিজ্ঞেস করলাম কেমনে বাবা? এরপর তিনি বললেন, আমার কবরের পাশে তোমার কবর হবে। আর তোমার কবরের পাশে আমার ছেলের কবর হবে। পরে শম্ভুগঞ্জের পীর সাহেবের নির্দেশে আমরা শ্বশুরের কবরের পাশে আমাদের কবরও বানিয়ে রেখেছি।

ভাজন আলী বলেন, আমরা আল্লাহ-রসূলের কাজ করি। আমার বাবা মৃত্যুর আগে তার কবরের জায়গা নির্ধারণ করে দিয়ে গেছিলেন, আমরা সেখানেই তাকে দাফন করেছি। তিনি বলে গেছেন, এখানে আমার মাজার হবে। তোমরা সঠিকভাবে কাজ করবা আর পরিবারকে আমার মাজারের কাছে রাখবা, তাহলে মনে ভয় থাকবে না।

এদিকে, ঘরের ভেতর কবর বানানোর বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই কবর দেখতে ভাজন আলীর বাড়িতে ভিড় করছেন।

নাঈম/কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়