ঢাকা     সোমবার   ১৭ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ৩ ১৪৩১

গোপালগঞ্জে জমজমাট ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫০, ২৫ মে ২০২৪   আপডেট: ১৫:৫৬, ২৫ মে ২০২৪
গোপালগঞ্জে জমজমাট ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা

একসময় গ্রামের নির্মল মানুষের চিত্ত বিনোদনের সুযোগ করে দিতো ঘোড়দৌঁড় প্রতিযোগিতা। কিন্তু এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। তাই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে গোপালগঞ্জে জমজমাট ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলো। আর এ ঘোড়দৌড় দেখতে ঢল নেমেছিল মানুষের।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের মাইঝকান্দি গ্রামবাসী এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নগদ অর্থ।

শুক্রবার (২৪ মে) বিকালে সাহাপুর ইউনিয়নের মাইঝকান্দি মাঠে আয়োজিত প্রতিযোগীতায় নড়াইল, মাদারীপুর, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে ৭টি ঘোড়া অংশ নেয়। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা কয়েক রাউন্ডে ঘোড়াগুলো প্রায় চার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। দৌঁড় শুরু হবার সাথে সাথে মাঠের চারদিকে হাজারো দর্শকের উচ্ছ্বসিত আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। হর্ষধ্বনি আর করতালি দিয়ে এ প্রতিযোগীতার অনাবিল আনন্দ উপভোগ করেন তারা। এ যেনো চিরায়ত বাঙালির চিরচেনা মিলনমেলা।

এ ঘোড়দৌড় দেখতে তীব্র গরম উপেক্ষা করে দুপুর থেকেই মাঠে ভিড় করেন নানা বয়সের দর্শনার্থী। গোপালগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার হাজার হাজার দর্শনার্থী পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে আসেন। উপভোগ করেন ঘোড়দৌঁড় ও গ্রামীণ মেলা। মেলায় নানা ধরনের পন্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা।

ঘোড়দৌঁড় প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নব নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যন শিপন বিশ্বাস সুশীল। এ প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণকারী সকল ঘোড়ার মালিকের হাতে নগদ অর্থ তুলে দিনে তিনি।

ঘোড়দৌঁড়ে অংশ নেওয়া ঘোড়ার মালিক দিবাকর ভৌমিক বলেন, ঘোড়দৌড় হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগীতা। আমি এখানে নিজের ঘোড়া নিয়ে প্রতিযোগিতায় এসেছি। অংশ নিতে পেরে খুব ভাল লাগছে।

ঘোড়দৌঁড় দেখতে আসা স্বপন বিশ্বাস (৬০) বলেন, আগের যে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা হতো তা ছিল দেখার মতো। এখন আগের মত তেমন একটা হয় না। তারপরেও এখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, দেখে খুব ভালো লাগলো।

স্কুল ছাত্রী রুপা বল ও কলেজ শিক্ষার্থী রোজ বল বলেন, এবারই প্রথম ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখলাম। মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখতে এসেছি। দেখে খুব ভাল লেগেছে। আগামীতেও এমন আয়োজন দেখতে চাই।

দর্শনার্থী গোবিন্দ চন্দ্র বল বলেন, ঘোড়দৌড় বাংলার একটি ঐতিহ্য, এটা ধরে রাখা দরকার। এজন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগীতা প্রয়োজন। আমি চাই প্রতি বছর যেনো এখানে ঘোড়া দৌঁড় প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হোক। 

ঘোড় দৌঁড় দেখতে আসা অশোক পোদ্দার বলেন, এমন আয়োজন করায় আমি আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানাই। এখন এসব প্রতিযোগিতা হারিয়ে যাচ্ছে। আশা করি আগামীতেও এমন আয়োজন থাকবে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নব নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যন শিপন বিশ্বাস বলেন, ক্রমেই আমাদের দেশ থেকে ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। মনের শান্তি ও প্রশান্তির জন্য এসব খেলাগুলো ধরে রাখা উচিত। আমরা চাই গ্রাম বাংলায় এসব ঐতিহ্য আবারো ফিরে আসুক। 

বাদল/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়