বাকৃবি ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের এগ্রোফার্মে একদিন
মো. লিখন ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম
![বাকৃবি ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের এগ্রোফার্মে একদিন বাকৃবি ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের এগ্রোফার্মে একদিন](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2023December/Agro-Farm-1-2312031223.jpg)
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষা কারিকুলামে তাত্ত্বিকের পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। যাতে শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কক্ষে যে বিষয়ে জ্ঞান লাভ করছে তার ব্যবহারিক প্রয়োগ উপলব্ধি করতে পারে। এজন্য কারিকুলামের অন্তর্ভুক্ত প্রায় প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গে রয়েছে ব্যবহারিক ক্লাস, ল্যাব এবং মাঠ পর্যায়ের কাজ।
সম্প্রতি আমরা বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্যারাসাইটোলজি (পরজীবীবিদ্যা) বিভাগের বাহ্যিক পরজীবী ও পতঙ্গবিদ্যা কোর্সের অংশ হিসেবে শিক্ষা সফরে বিভিন্ন ফার্ম ভ্রমণ করি। যেখানে আমরা লেয়ার মুরগি, পোল্ট্রি মুরগি ও বিভিন্ন জাতের গরু লালন-পালন পদ্ধতি ও পরজীবী ঘটিত রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতি হাতে কলমে দেখি। শিক্ষা সফরটি আয়োজন করে বাকৃবি ভেটেরিনারি অনুষদের প্যারাসাইটোলজি বিভাগ।
শরৎ এর কাশফুলের মত শুভ্র আকাশের কোনো এক রৌদ্রজ্জ্বল দিনে আমরা ভেটেরিনারি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের প্রায় ১৬০ শিক্ষার্থী যাত্রা শুরু করি এগ্রোফার্ম ভ্রমণের জন্য। বাকৃবি ক্যাম্পাস থেকে চারটি বাসে করে আমরা যাত্রা শুরু নেত্রকোণা সদরে অবস্থিত কৃষি ফার্মের উদ্দেশ্যে। গন্তব্য বেশি দূরে নয়, অল্প সময়ের যাত্রা। তবুও বাসের মধ্যে হইহুল্লোড়, নাচানাচি, খুনশুটি করে কেটে যায় পুরোটা সময়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যায় আমাদের প্রথম গন্তব্য নেত্রকোনা জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে। সেখানে কর্মরত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও বাকৃবির সাবেক শিক্ষার্থী আমাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা দিয়ে বরণ করে নেন। অল্প সময় পরেই আমরা দ্বিতীয় গন্তব্য পাঁচ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত মো. মানিক মিয়ার লেয়ার মুরগির ফার্মে পৌঁছে যায়।
ছোট পরিসরের মানিক মিয়ার এগ্রোফার্মটিতে ডিম উৎপাদন করার লক্ষ্যে লেয়ার মুরগি পালন করা হয়। ফার্মে বর্তমানে প্রায় ৮০০ ডিমের মুরগি রয়েছে। খাঁচা সিস্টেমে মুরগিগুলো পালন করা হয়। প্রতিটি খাঁচায় চারটি করে মুরগি রাখা হয়েছিলো। পরজীবী ঘটিত রোগ ও বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ এড়াতে খাঁচাগুলো মাটি থেকে কিছুটা উপরে নির্মাণ করা হয়। এই মুরগিগুলোকে খাঁচার মধ্যেই খাবার, পানি দেওয়া হয় ও নির্দিষ্ট সময়ে ভ্যাকসিনসহ কৃমিনাশক প্রদান করা হয়। খামারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় প্রতিদিন এই খামার থেকে প্রায় ৭২০টি ডিম উৎপাদিত হয়। তিনি আরও জানান কোনো অঘটন না ঘটলে মাসে ৭০-৮০ হাজারের মত লাভ থাকে তার।
তার পাশেই চার শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত ইসতিয়াক আহমেদের লেয়ার ও পোল্ট্রি ফার্ম। এখানে প্রতি মাসে প্রায় ১৫০০ ব্রয়লার মুরগি লালন পালন করে বাজারজাত করা হয়। একই সঙ্গে লেয়ার পালন করা হয়, যেখানে ৭৬১টি মুরগি আছে। সেখান থেকে দৈনিক ৬৮০-৭০০ ডিম পান তিনি।
এরপরে আমরা গেলাম ব্রাদার্স মাল্টি ফার্মার্স এগ্রোফার্মে। এই ফার্মে দুগ্ধ উৎপাদনকারী গরু, তার পাশে পুকুর ও লেয়ার মুরগির ফার্ম ছিলো। এখানে মাছ, মুরগি ও গরুর পালনের মধ্যে একটা সুন্দর সম্পর্ক দেখা যায়।
এভাবেই হাসি-আনন্দের মাঝে শেষ হয় আমাদের শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে বিভিন্ন ফার্মে কাটানো একটি স্মরণীয় দিন।
/মেহেদী/
আরো পড়ুন