ঢাকা     বুধবার   ০১ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

ট্রেনে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ

হাবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৯, ১৮ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ১৬:০০, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
ট্রেনে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ

সাদা পোশাকে দায়িত্বরত অভিযুক্ত গার্ড

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী ট্রেনের গার্ড দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনে গাইবান্ধা থেকে দিনাজপুরে যাত্রাকালে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মো. রবিউল ইসলাম হাবিপ্রবির ইংরেজি বিভাগের ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি ইদের ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রা করছিলেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রবিউল যাত্রার জন্য দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনের শোভন শ্রেণিতে ঙ-১৯ আসনে সোনাতলা টু দিনাজপুর টিকেট ক্রয় করেন, যার ক্রমিক নম্বর- ০০৯৮৮১। তার সঙ্গে একটি ছোট বাইসাইকেলসহ কিছু মালামাল ছিল। নিজের টিকেটের সঙ্গে বাইসাইকেলের জন্যও টিকেট ক্রয় করেছিলেন তিনি। তবে ৮৫ টাকা মূল্যের টিকেটে উল্লেখ ছিল শিক্ষার্থী নিজ দায়িত্বে বাইসাইকেলটি রাখবেন, যার ক্রমিক নম্বর ১৭৯২৩৮।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মালবাহী বগিতে সাইকেল উঠাতে গেলে ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড নিষেধ করেন। এ নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে ওই গার্ড শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলেন এবং সঙ্গে থাকা ল্যাপটপ ও সাইকেল ট্রেন থেকে ফেলে দেন। মারধরের এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে ওই গার্ড ক্ষিপ্ত হয়ে আবারও মারধর করেন এবং বলেন, ‘তুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হলেও কিছু না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হইছোস, তো কি হইছে?’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমি গাইবান্ধা থেকে দিনাজপুরে যাওয়ার জন্য দোলনচাঁপা এক্সপ্রেসে উঠি। আমার সঙ্গে একটি বাইসাইকেল ছিল। আমি যখন মালবাহী বগিতে বাইসাইকেল উঠাতে যায়, তখন তিনি বাইসাইকেল উঠাতে দেননি। বলেন, ট্রেনে সাইকেল নিয়ে ওঠা যাবে না। কিন্তু আমি বাইসাইকেলের জন্য টিকেট করি। তার আচরণে আমার মনে হয়েছে, কাউন্টারের টিকেট কিনে ভুল করেছি। তার থেকে ব্ল্যাকে টিকেট কিনলে তিনি কালো অর্থ উপার্জনের সুযোগ পেতেন। তিনি কোনোভাবেই আমাকে বাইসাইকেলটি মালবাহী বগিতে তুলতে দেয়নি।

তিনি বলেন, গার্ড এমন আচরণের পর উপস্থিত অন্য যাত্রীরা সাইকেলটি সিটের পাশে রাখার পরামর্শ দেন। পরে মালবাহী বগিতে জায়গা আরও ফাঁকা হলে আমি সেখানে সাইকেলটি রাখি। ঠিক তখনই ওই গার্ড এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বলেন, ‘তোকে আমি এখানে সাইকেল তুলতে নিষেধ করেছি, তুই কেনো সাইকেল তুললি? আমি তোকে ট্রেনে নিব না। দেখি তোর কোন বাপ তোকে ট্রেনে নেয়।’ 

এসব কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি আমাকে মারধর করেন। আমার সঙ্গে থাকা ল্যাপটপ ফেলে দেন। এতে ল্যাপটপটি নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া রেল লাইনের পাশে সাইকেলটিও ফেলে দেন। আবারও ট্রেনের যাত্রীরা আমার ল্যাপটপটি, সাইকেলটি ট্রেনে তুলে দেন।

তিনি আরও বলেন, উপায়ন্তর না দেখে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু-বান্ধব এবং সিনিয়র ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি জানার পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এসময় তিনি ওই গার্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

তবে অভিযুক্ত দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনে দায়িত্বরত ওই গার্ডের নাম জানা যায়নি। এমনকি তার সঙ্গে কথা বলাও সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে হাবিপ্রবি  প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মামুনুর রশিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। বিষয়টি জানা মাত্রই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। তবে প্রত্যাশা থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যেন এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।

উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর একতা এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনে ঢাকা থেকে দিনাজপুর আসার সময় ট্রেনের টিটি কর্তৃক নির্যাতিত হয়েছিল হাবিপ্রবির কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ২১ ব্যাচের আব্দুর রাজ্জাক নামের আরেক শিক্ষার্থী।

/সংগ্রাম/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়