ঢাকা     রোববার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

রায় পক্ষে তবুও ফল প্রকাশে বাধা কিসে: কি বলছে মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএ

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৯, ১ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৫:৪১, ২ জুলাই ২০২১
রায় পক্ষে তবুও ফল প্রকাশে বাধা কিসে: কি বলছে মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএ

রিটকারী আড়াই হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করতে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে আইন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে আর কোনো বাধা নেই বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ)।

গত সোমবার রায় হয়। এরপর দুই একদিনের মধ্যেই ফল প্রকাশও করার কথা থাকলেও এ সপ্তাহের শেষ দিনেও সেটি সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে এনটিআরসিএ সচিব ড. এ টি এম মাহবুব-উল করিম বলেন, আমরা মূলত রায়ের কপির জন্য অপেক্ষা করছি। ওটা হাতে পেলে ফল প্রকাশ করতে পারবো। তার আগে সম্ভব নয়। কপি পেতে আমাদের হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তারপর সেটির বিচার বিশ্লেষণ করে ফল প্রকাশ করা যাবে।

তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রেজাল্ট প্রকাশের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলে বলে জানা গেছে। এমনটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।

গতকাল নিয়োগ প্রত্যাশীরা এনটিআরসিএ অফিসে এসেছিলেন কিন্তু অফিস থেকে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফল প্রকাশ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। চাইলেই প্রকাশ করা সম্ভব না। নিয়োগ প্রত্যাশীরা এসে একটা দাবি করলেই তো আর ফল দিয়ে দেওয়া যায় না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমাদের কঠোর হতে হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (২৯ জুন) শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে পরামর্শ করেন এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত এনটিআরসিএর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘আমরা শিক্ষা উপমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শ করেছি। তিনি ডকুমেন্ট হিসেবে একটি লিখিত আবেদন চেয়েছেন। আবেদনে উপমন্ত্রী যেদিনই অনুমোদন দেবেন সেদিনই ফল প্রকাশ করা হবে।  এক্ষেত্রে ৩-৪ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছিলেন ওই কর্মকর্তা। 

কিন্তু বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সচিব জানিয়েছেন ফল প্রকাশ সম্ভব হচ্ছে না। রায়ের কপি পেতে আরো সময় লাগবে। সেটি পেলে বিচার বিশ্লেষণ করে ফল প্রকাশ করতে চায় এনটিআরসিএ।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আপিল বিভাগের রায় দেওয়ার পর চূড়ান্ত ফলাফল দেওয়া আগে আইনগত আরও কোন জটিলতা আছে কি তা যাচাই করার জন্য আইনজীবী প্যানেলকে বলা হয়েছে। তারা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ফল দেওয়া হবে।

তবে ফল প্রকাশে আর কোনো কালক্ষেপণ কিংবা অজুহাত শুনতে চান না নিয়োগ প্রত্যাশীরা।  তারা বলছেন, আমরা এসব অজুহাত ধরে ফেলছি। একবার বলে রায় আসলে রেজাল্ট। আরেকবার বলে শিক্ষা সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে রেজাল্ট। এরপর বলে শিক্ষা উপমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে রেজাল্ট। এখন বলছে রায়ের সার্টিফাইড কপি পেলে রেজাল্ট। এটা আমরা মানি না।

তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি শান্ত আহমেদ বলেন, আমরা চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমাদের সামনে আসেন না। ফল প্রকাশে কোন প্রকার কালবিলম্ব কিংবা টালবাহানা আমরা দেখতে চাই না।  প্রিলিমিনারি রিটেন ভাইভা দিয়ে আমরা নিবন্ধিত হয়েছি। আপিল বিভাগের রায়ে ও আমাদের পক্ষে এসেছে। তাহলে ফল প্রকাশে এত বাধা কোথায়।

তিনি বলেন, আমাদের শঙ্কা হচ্ছে কিছু অসাধু ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আর সংঘবদ্ধ চক্র ফলাফল প্রকাশ না করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।  বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি ও বেকারত্বের কথা চিন্তা করে এই গণবিজ্ঞপ্তির ফল দ্রুত প্রকাশ করা সময়ের দাবি।

ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল্লাহ রাজু বলেন, কোন কথা ও অজুহাত চলবে না আর। দ্রুত রেজাল্ট না হলে হাজারো নিবন্ধনধারী এনটিআরসিএ অফিসের সামনে হাজির হবে। অধিকার ছিনিয়ে নিতে বাধ্য হবে তারা।

ঢাকা/ইয়ামিন/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়