‘মায়ের একধার দুধের দাম’ গানের নেপথ্যে কী ছিল?
![‘মায়ের একধার দুধের দাম’ গানের নেপথ্যে কী ছিল? ‘মায়ের একধার দুধের দাম’ গানের নেপথ্যে কী ছিল?](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2021July/Fakir-Alamgir-risingbd-2107240642.jpg)
‘মায়ের একধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চাম/পাপশ বানাইলে ঋণের শোধ হবে না,/এমন দরদি ভবে কেউ হবে না আমার মা গো…’
ফকির আলমগীরের কণ্ঠে হৃদয়স্পর্শী এই গান শ্রোতাপ্রিয় হয়েছে। গানটি সম্পর্কে প্রখ্যাত এই শিল্পীর কাছে একবার জানতে চাওয়া হয়েছিল।
২০১৮ সালের ১৩ মে তিনি রাইজিংবিডির এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন এই গান তাকে কতটা আপ্লুত করেছে।
‘১৯৭৭ সালের ঘটনা। মাকে সঙ্গে নিয়ে গাড়িতে ফরিদপুর যাচ্ছি। আরিচা ঘাটে আমাদের গাড়ি থামে। এই সময় এক অন্ধ বাউলের সঙ্গে দেখা। বাউল দেহতত্ত্বের গান গাইছিল। গানটি শুনেই আমার কানে লেগে যায়। সঙ্গে সঙ্গে রেকর্ডার বের করে রেকর্ড করি। গানটি শুনে খুব আপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম।’ বলেন জাগরণের এই শিল্পী।
তিনি আরো বলেছিলেন, ‘ঢাকা ফিরে নিজের মতো করে গানটি তৈরি করি। এরপর বিটিভির একটি অনুষ্ঠানে গানটি পরিবেশন করি। পরে অজিত রায় গানটি নতুন করে রেকর্ড করান।’
নব্বইয়ের দশকে ফকির আলমগীর ‘সখিনা-২’ অ্যালবামে গানটি যুক্ত করেন। গানটি এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
পরে সিনেমাতেও গানটি ব্যবহৃত হয়েছে। ‘গানটি হিট হলে আলাউদ্দিন আলীর সংগীতায়োজনে ‘অবরোধ’ সিনেমার জন্য নতুন করে রেকর্ডিং করা হয়।' উল্লেখ করে ফকির আলমগীর তখন বলেছিলেন, 'বিভিন্ন সময় শিল্পীরা গানটি গেয়েছেন। মাঝে মাঝে গানটি গাইতে গিয়ে মাকে খুব মনে পড়ে। গানটির কথায় এত দরদ যে, অনেক সময় আমি কেঁদে ফেলি। এমন অনেক বার হয়েছে, আমি যখন সরাসরি কোনো অনুষ্ঠানে গাইছি তখন আমার স্ত্রী টিভিতে গানটি শুনে কেঁদেছেন। আমার কাছে এখন পর্যন্ত মাকে নিয়ে এই গানটিই সেরা মনে হয়।’
শিল্পীর দরাজ কণ্ঠে এই গান শ্রোতা আর শুনতে পারবেন না। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় ফকির আলমগীরের হার্ট অ্যাটাক হয়। রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে তিনি মারা যান। দেশবরেণ্য এই গণসংগীতশিল্পী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
ঢাকা/তারা
আরো পড়ুন