ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

রুবেল-বরকতের সম্পদের হিসাব দিলেন মেয়ে রাদিয়া

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ৮ মার্চ ২০২১   আপডেট: ০০:২৩, ৯ মার্চ ২০২১
রুবেল-বরকতের সম্পদের হিসাব দিলেন মেয়ে রাদিয়া

গ্রেপ্তার হওয়া ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ও ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকতের সম্পদের হিসেব দিয়েছে পরিবার।

সোমবার (৮ মার্চ)  রুবেলের মেয়ে যাওয়াতা আফনান রাদিয়ার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সম্পদের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আমার বাবা রুবেল এবং চাচা বরকতের সম্পদ জব্দের হিসাবের যে বিবরণ বিভিন্ন পত্রিকা, ইলেট্রনিক্স মিডিয়ায় যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে কিছু তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে চাই। 

যাওয়াতা আফনান রাদিয়া বলেন, ‘আমার বাবা ও চাচার নামে ৫৭০৬ বিঘা জমি, ১৮৮টি ব্যাংক একাউন্ট ও ৫০টি গাড়ি যার মধ্যে বাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে বলে প্রচার হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে জমির পরিমাণ হবে ১২.৫০০০ একর কিন্তু দুদক যখন এসিল্যান্ড অফিসে জমির পরিমাণ চেয়েছিল তখন দুদকে পাঠানো চিঠিতে জমির পরিমান ভুলে ১২৫০০০ একর উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে আমার বাবা জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে চিঠিও দিয়েছিল।’

‘আমার বাবা ২০০০ সাল থেকে সরকারি ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ফরিদপুর থেকে ৩ বার সেরা করদাতা নির্বাচিত। জমির পরিমাণ ১৫৯ বিঘা, এর মধ্যে চর অঞ্চলে ৩০ বিঘা। চরে জমি প্রতি বিঘা মূল্য ২০ হাজার-২৫ হাজার টাকা। কোম্পানির জন্য ৩টি ড্রাম ট্রাক, দুটি জিপ গাড়ি রয়েছে। কোম্পানির কাজে ব্যবহারের জন্য পে লোডার, রোলার রয়েছে এবং পুরাতন ২টা পানির গাড়ি আছে। ঢাকায় কোনো ফ্ল্যাট বা জমি নেই। এমনকি ফরিদপুর মূল শহরে কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই। আমরা দাদার পৈতৃক ভিটায় থাকি।’

চাচা বরকতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কাকা সাজ্জাদ হোসেন বরকতের নামে ২’শ বিঘা জমি আছে। চর অঞ্চলে ৪’শ বিঘা জমির উপর একটি এগ্রো ফার্ম আছে। চরের জমি বিক্রি করলে ১ থেকে ১.০৭ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে। চাচার নিজ নামে ১০টি টাটা বাস এবং ১০টি বাস লিজিং কোম্পানির নামে রয়েছে। এছাড়া ৫-৭টা ড্রাম ট্রাক আছে। ঢাকায় কোনো ফ্ল্যাট নেই । পৈতৃক বাড়িতে তিনি থাকেন। ক্রয়কৃত জমিতে কিছু সেমি পাকা দোকান রয়েছে। ফরিদপুর থেকে ২ বার সেরা করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। চরের জমি বিক্রি করলে ১ থেকে ১.০৭ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে।’

তার চাচা ও বাবা সম্পূর্ণ আলাদা ব্যবসা করেন জানিয়ে রাদিয়া বলেন, চাচা রাজনীতি করলেও আমার বাবা সেভাবে রাজনীতির সাথে জড়িত নয় এবং তার কোনো পদ পদবীও নাই। বাবা ও চাচাকে হাইব্রিড নেতা বলা হয় এবং বিএনপি এক নেতার সহযোগী ছিল। কেউ কী বলতে পেরেছে যে বিএনপির কোনো মিটিং মিছিলে বা পদে আমার বাবা ও চাচা ছিল? এরপরও তাদের হাইব্রিড বললে কিছু বলার নেই। বাদশাহ মন্ডল নামে বাবার কোনো আপন চাচা নেই এবং আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার নামে আমাদের কোনো আত্মীয় নেই। 

মামলার কিছু বিষয়ে অসঙ্গতি রয়েছে জানিয়ে রুবেলের মেয়ে রাদিয়া বলেন, ‘একই মামলায় সিআইডি করলো ২ হাজার কোটি টাকার মামলা আর দুদক করলো ৭২ কোটি টাকার মামলা। গত ০৭/০৬/২০২০ তারিখে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিং-এ বলেছে বদরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা ৯ জুনের সব পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অথচ অস্ত্রসহ সকল মামলার এজাহারে বলা হয়েছে বাইপাস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

‘২ হাজার কোটি টাকার মামলাকে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। মামলায় বলা হয়েছে আব্বু ও চাচা মিলে ৩৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার বৈধ উৎস পাওয়া গেছে। এটাও সম্পূর্ণ ভুল। আব্বু ও চাচা মিলে প্রায় ১’শ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। এর বেশি না’, বলেন রাদিয়া।  

বাসা ও অফিসে উদ্ধার অভিযানের সময় কোনো সাংবাদিক বা ম্যাজিস্ট্রেটকে না রেখে নিজেদের ইচ্ছামতো জব্দ তালিকা তৈরি করে মামলা সাজানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
 

পারভেজ/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়