ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই হাঁটছে দেশ: প্রধানমন্ত্রী

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদক  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৪, ২১ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৬:১১, ২১ মার্চ ২০২১
বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই হাঁটছে দেশ: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে যে পথ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখিয়েছিলেন, সেই পথ ধরেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ‌্যাভিনিউয়ে  বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো এদেশের ভাগ‌্যনিপীড়িত মানুষের ভাগ‌্য তিনি পরিবর্তন করবেন। ইংরেজরা এদেশের সবচেয়ে বেশি যেটা চেষ্টা করেছিলো এদেশের মানুষের আত্মগরিমাটা ভেঙে দেওয়া, আত্মসম্মানবোধটা ভেঙে দেওয়া, তাদের একেবারে গরীব করে দেয়া। সেটা তারা করেছিলো। সেই জায়গা থেকে আজকে বাংলাদেশ স্বাধীন করে তার স্বপ্ন ছিলো এই দেশকে তিনি এমনভাবে গড়ে তুলবেন যাতে বিশ্বে বাংলাদেশ মাথা উচু করতে চলতে পারে। ক্ষুধা দারিদ্র্য থেকে এদেশের মানুষ মুক্তি পেতে পারে। এদেশের মানুষ উন্নত সুন্দর জীবন পেতে পারে।’

‘সেই লক্ষ‌্য নিয়ে তিনি যে কর্মসূচিগুলো দিয়ে গেছেন মাত্র সাড়ে ৩ বছর তিনি সময় পেলেন।  এই সময়ের মধ‌্যে তিনি যা করে দিয়ে গেছেন শুধু সেগুলো অনুসরণ করলেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। এ কথা আজ প্রমাণিত সত‌্য।  কারণ আমরা তাই-ই করছি। যে পথ জাতির পিতা দেখিয়ে গেছেন সেই পথ ধরেই আমরা এগোচ্ছি।  তিনি যা করতে চেয়েচিলেন আমরা সেটা করতে চেষ্টা করে যাচ্ছি।  এর সুফল পাচ্ছে দেশের জনগণ।”

এ সময় উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে যেতে এবং ৪১ সালের মধ‌্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে সবাইকে কাজ করে যাওয়া আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্বে মর্যাদা সম্মান পেতাম না, একটা রাষ্ট্র পেতাম না একটা দেশ পেতাম না, লাল সবুজ পতাকা পেতাম না। প্রতিটি সংগ্রাম তিনি কৌশলের সঙ্গে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়েছেন। সেই ৪৮ সাল থেকে তার প্রতিটি পদক্ষেপই ছিলো ধীরে ধীরে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাওয়া।’

 ‘দেশ স্বাধীন করতে দিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন, অত‌্যাচারিত হয়েছেন, জেলে খেটেছেন, তারপরও তিনি আদর্শ নিয়ে চলেছেন, মাথা নিচু করেননি। তার মতো বলিষ্ঠ নেতা ছিলো বলেই আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি।”

শৈশব থেকে বঙ্গবন্ধুর জীবন, আন্দোলন সম্পর্কে এদেশের মানুষের জানা উচিত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দুই বোন যতটুকু পারি জানাবো।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে তাকে হত‌্যা করা হলো, ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হলো। স্বাধীনতার ঘোষক বানানো হলো আরেকজনকে।  এমনও হলো তার নাম পর্যন্ত নেওয়া যাবে না নিষিদ্ধ ছিলো।  স্বাধীন বাংলাদেশ ৭৫ পরবর্তীতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো যে মুক্তিযোদ্ধারা বলতে ভয় পাচ্ছিল যে তারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে।’

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উদযাপন করতে পারায় বাংলাদেশের মানুষ এবং তার দলের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকীতে তাকে নিয়ে বিশ্বনেতাদের মুল‌্যায়ণের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজ বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে পেলা যাবে না। মিথ‌্যাভাবে ঘোষক তৈরি করা হয়েছিলো, তা আর থাকবে না। আজ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ নিজেরাই প্রচার করছে অনেক জায়গায় রেজুলেশন হচ্ছে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন।’

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে অর্থাৎ ওয়ার্ড পর্যন্ত কর্মসূচি হাতে নিতে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অব‌্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

এ সময় বিশ্বব‌্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ার বিষয়টি উল্লেক করে সবাইকে স্বাস্থ‌্যসুরক্ষা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আবার এর প্রাদুর্ভাব সারাবিশ্ব দেখা দিয়েছে। সবাইকে স্বাস্থ‌্যসুরক্ষা  মেনে চলতে হবে।  একইভাবে যাতে অর্থনৈতিকভাবে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’

করোনার সেকেন্ড ওয়েবে বিশ্বজুড়ে খাদ‌্য সংকট তৈরি হতে পারে আশঙ্কা করে দেশে যাতে খাদ‌্য সংকট দেখা না দেয় উৎপাদন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

এ সময় শস‌্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুকে গিনেস বুকে নাম লেখাতে  আয়োজকদের ধন‌্যবাদ জানান তিনি। ধন‌্যবাদ জানান সেই কৃষককে যে নিজের জমিতে বঙ্গবন্ধুর অবয়ব তৈরি করে সর্বপ্রথম পথ দেখিয়েছেন।

পারভেজ/ইভা/সাইফ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়