ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

পলিথিন নয়, মানুষের হাতে থাকবে সোনালী ব্যাগ: পাটমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৫, ৩ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ১৬:২৫, ৩ এপ্রিল ২০২৪
পলিথিন নয়, মানুষের হাতে থাকবে সোনালী ব্যাগ: পাটমন্ত্রী

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, সোনালী ব্যাগের জন্য প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা বড় বাধা হলেও আমরা জয়ী হব। পলিথিন নয় মানুষের হাতে থাকবে সোনালী ব্যাগ। এজন্য দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। জুলাইয়ে ১০০ কোটি টাকা অর্থ ছাড় হলে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হবে। এজন্য বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে।

বুধবার (৩ এপ্রিল) লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস প্রাঙ্গণে ড. মোবারক আহমদ খান উদ্ভাবিত সোনালী ব্যাগ উৎপাদন কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, বিজেএমসির চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মদ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা  উপস্থিত ছিলেন।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্লাস্টিক বা পলিথিনের অতি ব্যবহারের কারণে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি বিপদসংকুল পরিবেশে পতিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমদ খানকে সার্বিক সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছেন। প্লাস্টিক বা পলিথিনের বিকল্প হিসেবে আমরা পাট থেকে প্রস্তুত করা এ সোনালী ব্যাগ  ব্যবহার করব। ড. মোবারক আহমদ খানের এ সোনালী ব্যাগ প্রকল্প কোন পর্যায়ে আছে আমরা তা আজ স্বচক্ষে দেখতে এসেছি। আমি মনে করি বাঙালি জাতি অনেক সৃষ্টিশীল। আমরা এ জায়গায় অনেক এগিয়ে যাব।

ড. মোবারক একজন কেমিস্ট হয়েও নিজেই কাস্টমাইজড করে মেশিনারিজ তৈরি করায় মন্ত্রী তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে প্রয়োজনীয় পুঁজিসহ প্রায় ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প দিয়েছেন। এ ব্যাপারে যত রকম সহযোগিতা দরকার আমরা করব। আমরা সামনে পলিথিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে যে অভিযান পরিচালনা করব তার আগে জনসাধারণের হাতে বিকল্প তুলে দিতে হবে। এ লক্ষ্য সামনে রেখেই আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি পলিথিনের বিকল্প সোনালী ব্যাগ উৎপাদনে এনে ব্যাপকভাবে মানুষের হাতে তুলে দিতে।

ঈদের পর কোনো পাট কল চালু হচ্ছে কি না সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ঠিক ঈদের পরেই চালু হবে এমনটি নয় তবে মিলগুলো তৈরি হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে চালু হবে আশা করি।

এ সময় ড. মোবারক আহমদ খান বলেন, সোনালী ব্যাগ এমন একটি পণ্য যাতে প্লাস্টিক নেই। আপনারা জানেন বায়োডিগ্রেডেবল যে প্লাস্টিক ব্যাগ পাওয়া যায় সেগুলো গত বছরের ২৮ মে প্রতিবেশী দেশ ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কানাডাতেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেননা সেগুলো শতভাগ পরিবেশবান্ধব নয়। আমাদের এ সোনালী ব্যাগ বায়ো-ডিগ্রেডেবল এবং শতভাগ পরিবেশবান্ধব। এটি কার্বন নেগেটিভ পণ্য।

পানিতে গলে যাবে কি না এরকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী এটি বানাতে পারি। যেমন শপিং ব্যাগ ৮ ঘণ্টায় পানিতে মিশে যায়। এটিকে ৬ মাস মেয়াদী করতে পারি। ড. মোবারক জানান, এখন প্রতিদিন ২৫০ কেজি পরিমাণ উৎপাদন করছি। আমাদের যে সক্ষমতা আছে তাতে আমরা এখনই ১ টন উৎপাদন করতে পারব। ১ কেজিতে গড়ে ১০০ ব্যাগ করা যায়।

প্লাস্টিক বাধার সৃষ্টি করলেও সোনালী ব্যাগ মানুষ গ্রহণ করবে বলে ড. মোবারক আহমদ আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভালো যে কোনো কিছু মানুষ গ্রহণ করে। আপনারা দেখবেন এখন একজন রিকশাওয়ালাও মোবাইল ব্যবহার করে, মিনারেল ওয়াটার কিনে খায়। মানুষের সচেতনতা যখন বাড়বে, মানুষ যখন ভালোবোধ করবে, তখন প্লাস্টিকের বাধা অতিক্রম করা যাবে। তবে, অন্যান্য দেশের মতো প্লাস্টিক ও পলিথিন নিষিদ্ধ করে সরকারকে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

আসাদ/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়