ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বিএনপি আন্দোলনে সফল না ব্যর্থ: সংশ্লিষ্টদের ভাবনা 

মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৪, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
বিএনপি আন্দোলনে সফল না ব্যর্থ: সংশ্লিষ্টদের ভাবনা 

১৫ বছরের বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে  বিএনপি। সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েও তার ফল ভোগ করতে পারেনি দলটি। গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে যখন বিএনপির আন্দোলন তুঙ্গে, তখন ২৮ অক্টোবর দলটির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে পণ্ড হয়ে যায় সেদিনের মহাসমাবেশ। এর পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ হাজারো নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হন। পালিয়ে বেড়ান লাখো নেতাকর্মী।

এতকিছুর মধ্যেও এ বছরের ৭ জানুয়ারি নির্বিঘ্নে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে ফেলে সরকার। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসন, জাতীয় পার্টি ১১টি, জাসদ ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, কল্যাণ পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসন পেয়েছেন। অন্যদিকে, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নারী আসনের ৫০টির মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৮টি, জাতীয় পার্টি ২টি ও স্বতন্ত্ররা ১০টি আসন পাচ্ছেন।

দেশজুড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের একাংশ দলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশ। দলের পুনর্গঠনে কাউকে ‘অতিমূল্যায়ন’ আবার কাউকে ‘অবমূল্যায়ন’ নিয়েও দলের মধ্যে আছে অসন্তোষ ও জটিলতা। বিএনপি চেয়ারপার্সন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে। তারা দুজনই বিভিন্ন মামলায় দণ্ডিত। মূল দলের স্থায়ী কমিটিসহ অঙ্গ সংগঠনগুলোর কমিটি-নেতৃত্ব নিয়েও দলে আছে অসন্তোষ। সব মিলিয়ে অনেকটা নড়বড়ে অবস্থা বিএনপির। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঠেকানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আশার বীজ ছিল। তবে, সরকার নির্বাচন করে ফেলেছে। এটাকে বিএনপির কৌশলগত ব্যর্থতা বলে মনে করছেন দলের একাংশসহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বিভিন্ন রকম তথ্য। দলীয় পদ-পদবি হারানো শঙ্কায় তারা নাম প্রকাশ করতে চান না। দায়িত্বশীল বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ বিষয়গুলো পরোক্ষভাবে স্বীকারও করেছেন। তারা বলছেন, সরকার ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে উস্কানিমূলক আচরণের মাধ্যমে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে জড়িয়ে ফেলে। একটা সফল, চলমান আন্দোলনকে রীতিমতো ‘নাই’ করে ফেলে সরকার। এটা বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলের হার।

বিএনপি নেতারা বলছেন, পুরো বিষয়টিকে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ‘ক্যাশ’ করেছে সরকার। নেতাকর্মীদের একটা বড় অংশ এ সময় গ্রেপ্তার হয় এবং বাকিরা পালিয়ে বেড়ায়। এ সুযোগে অনেকটা ফাঁকা মাঠে গোল করার মতো সরকার নির্বাচনটা সেরে ফেলে। বর্তমানে নেতাকর্মীদের একটা অংশ জামিন নিয়ে বেরিয়ে এসেছে। সরকারের দমন নীতির কারণে দলের সাংগঠনিক সমস্যা হলেও নেতৃত্ব নিয়ে দলের মধ্যে কোনো সঙ্কট নেই বলে মনে করেন অনেক নেতা।

বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আন্দোলনে দল সফল না ব্যর্থ, চূড়ান্তভাবে এটা বলার সময় এখনও আসেনি। তবে এটা সত্যি যে, সাংগঠনিকভাবে দলে কয়েকটি সমস্যা ক্রমে প্রকট আকার ধারণ করছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য পদ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় কমিটির বেশকিছু পদ শূন্য রেখেই চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ মাসে সর্বশেষ কাউন্সিল হয়। তিন বছর পর কাউন্সিল করার কথা থাকলেও এখনো তা হয়নি। 

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, আমাদের আন্দোলন তো চলমান। এখনই দলের আন্দোলন সফল না ব্যর্থ, তা বলার সময় হয়নি। লাখো নেতাকর্মী জেলে। হাজারো মামলার পরও রাজপথে আমরা সক্রিয় আছি। এটা সত্যি, দলে বিভিন্ন রকম সমস্যা রয়েছে। তবে, সব সমস্যার পরও আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে। আমরা দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেও বিভিন্ন কারণে তা সম্পন্ন করতে পারিনি। একটি ভালো সময়ের অপেক্ষা করছি।

বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলোর মধ্যে শক্তিশালী ছাত্রদলের অবস্থা তেমন সুবিধার নয়। শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও হাবিব-উন নবী খান সোহেলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের যে কমিটি গঠন হয়েছিল, ওই কমিটি ছিল ছাত্রদলের সবশেষ ‘মানসম্মত’ কমিটি। তারপর থেকে সংগঠনটির নেতৃত্বে যারা এসেছেন, তারা নেতাকর্মী বা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেভাবে আকৃষ্ট করতে পারেননি। নতুন করে ছাত্রদল থেকে মূল দলে তেমন নেতারা উঠে না আসাও দলের জন্য একটা বড় ধরনের ব্যর্থতা বলে মনে করছেন বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ।

ছাত্ররাজনীতি বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ছাত্ররাজনীতি থেকেই তো মূল দলের রাজনীতিবিদের জন্ম হয়। ছাত্ররাজনীতি থেকে কয়জন ছাত্রনেতা জাতীয় পর্যায়ে এসেছে? পদ পেলেই তো নেতা হওয়া যায় না। নেতা হতে বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকা লাগে। সেদিক থেকে কেবল বিএনপি নয়, দেশের পুরো রাজনৈতিক অঙ্গনে নেতৃত্বে ভাটা পড়েছে। রাজনীতি করতে করতে ওপরে উঠেছে, এরকম নেতার এখন বড় বেশি সঙ্কট।

রাজপথে, আন্দোলনে বর্তমানে যুবদলের সার্বিক কর্মকাণ্ড তেমন জোরালো নয়, মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ১৯৮৭ সালের ২৩ মার্চ যুবদলের কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হন মির্জা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কমিটি যুবদলের সর্বকালের সেরা কমিটি বলে মনে করি। যুবদলের বর্তমান সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না চেষ্টা করেও যুবদলকে তেমন গোছাতে বা সক্রিয় করতে পারেননি। এটাও দলের একরকমের ব্যর্থতা বলে মনে করি।

রাজনীতি বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন বলেন, সাধারণ মানুষদের একটা বড় অংশ বিভিন্ন কারণে রাজনীতিবিমুখ হওয়ার কারণে বিএনপি তাদের সেভাবে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। তাছাড়া, এ মুহূর্তে বিএনপি দলীয়ভাবে নিজেরাও কিছুটা অসংগঠিত। আন্দোলনের নতুন কোনো নীতি-কৌশল সেভাবে তারা নির্ধারণ করতে পারেনি বলেই মনে হচ্ছে। ফলে, এমন অবস্থায় তারা সরকারের জন্য বড় কোনো চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারছে না। যদিও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ আছে। অর্থনীতি নিয়ে সরকারও বেকায়দায় আছে। ফলে, এসব বিষয়কে ইস্যু করে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করলে বিএনপির আন্দোলনে সফলতা আসতে পারে।

তবে, আন্দোলনে বিএনপি শতভাগ সফল বলে মনে করেন শরীয়তপুর-২ আসনের একসময়ের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ইয়াকুব রানা। তিনি বলেন, আন্দোলনে অবশ্যই সফল বিএনপি। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে বিএনপি। সারা দেশের মানুষ গত তিনটি টার্মে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। সর্বস্তরের মানুষের দাবি আর বিএনপির দাবি এক হয়েছিল বলেই মানুষ স্বতষ্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমেছে। যার ফলে গত ৭ জানুয়ারির ভোট ছিল ভোটারবিহীন, ডামি ভোট। মানুষ ভোট বর্জন করেছে। দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ অনেক দেশ বলেছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন। আমি মনে করি, এটাই বিএনপির আন্দোলনের সবচেয়ে বড় সফলতা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, দেড় দশক ধরে বর্তমান সরকার ক্রমাগতভাবে ভিন্নমত বাধাগ্রস্ত করে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। আমাদের জেলা কাউন্সিলগুলো করার চেষ্টা অনেকবার করা হলেও আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের যোগসাজশে প্রকাশ্যে তা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে, কিছুটা শূন্যতা-অসন্তোষ নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। তবে, মনে রাখতে হবে—দেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যে আন্দোলনে আমরা রাজপথে রয়েছি, তাতে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের জয়ী হতেই হবে। তাতেই আসবে আন্দোলনের প্রকৃত সফলতা।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোনো হতাশা-নিরাশা নেই। ঢাকাসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা থাকলেও বিএনপির কর্মসূচিতে হাজার হাজার নেতাকর্মী বিভিন্ন জেলায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে। এটাই প্রমাণ করে বিএনপির রাজনৈতিক সফলতা। সারা দেশে আমাদের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত আছে, আন্দোলনে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার, ক্ষমতার অপব্যবহার করছে সরকার। তবে, যা-ই করুক, সরকার বিএনপিকে রাস্তায় ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। রাষ্ট্রযন্ত্র নিরপেক্ষতা বজায় রাখুক, তখনই দেখা যাবে বিএনপির আন্দোলনের সফলতা কাকে বলে। 

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপির করা তুমুল আন্দোলনের মধ্যেও সরকার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে ফেলেছে। এমনকি, আওয়ামী লীগ দ্রুততম সময়ে সরকার গঠনের পাশাপাশি মন্ত্রিসভা করেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম আধিবেশনও করেছে। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চাপ ছিল সরকারের ওপর। তাছাড়া রাজপথে বিএনপির উত্তাল আন্দোলনও সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারেনি বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, গণমানুষের যে দাবি এবং আশা-আকাঙ্ক্ষা, সেটার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। সেই আন্দোলন তথা রাজপথ থেকে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এসব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। কারণ, এই কর্মসূচি জারি থাকা মানে হচ্ছে মানুষের সঙ্গে থাকা, মানুষের দাবির পাশে থাকা। এটাকে কি আপনি সফলতা বলবেন না? একটা বিষয় পরিষ্কার, আমাদের দাবি জনগণের দাবি এবং ন্যায্য দাবি। সেটা আজকে হোক কিংবা কালকে হোক অর্জিত হবেই। আন্দোলনে সফলতাও আসবে।

ঢাকার পর রয়েছে চট্টগ্রাম বিএনপি। একসময় চাঙ্গা থাকলেও বেশ কিছুদিন ধরে তেমন চাঙ্গা নয় তারা। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও শাহাদাত হোসেনের কমিটির পরে আজ পর্যন্ত যে কমিটি হয়েছে, তারা সংগঠনকে সেভাবে চাঙা করতে পারেনি বলে মনে করেন অনেকে। এ প্রসঙ্গে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়া, সঠিক নেতৃত্বের অভাবে একটু ঝিমিয়ে পড়লেও খুব শিগগিরই চট্টগ্রাম বিএনপি চাঙ্গা হবে বলে আশা করছি। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। রাজপথে গণদাবির পক্ষে আমাদের আন্দোলন সফল হবেই। সফল হওয়ার বিকল্পও নেই আমাদের। 

অপরদিকে, বিএনপির মূল দল ছাড়া জাতীয়তাবাদী কৃষক দল, শ্রমিক দল, স্বচ্ছাসেবক দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস), তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, ঢাবি সাদা দল, ইউট্যাব, আইনজীবী ফোরামসহ অঙ্গসংগঠনের অনেকগুলোর অবস্থাই তেমন ভালো নয়। এর বাইরেও দুই গ্রুপের কোন্দলে সম্প্রতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

সঠিক নেতৃত্বের অভাব, দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা, মামলা-হামলা-কারাদণ্ডের কারণে অঙ্গসংগঠনগুলো অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। এর ফলে আন্দোলনের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে, নতুন নেতৃত্বের পাশাপাশি এসব সংগঠনের নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রের একাধিক নেতা।

দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়াকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে ধরা হয়। বিএনপি অধ্যুষিত সেই এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি নড়বড়ে। সেখানে বিএনপির নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কখনো ভিপি সাইফুল, কখনো জিএম সিরাজ, কখনো হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বগুড়ার মতো ঘাঁটিতে বর্তমানে বিএনপির যে রাজনৈতিক অবস্থা, তার একটা প্রভাব সারা দেশে পড়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লষকরা। 

বৃহত্তর নোয়াখালী (নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী) অঞ্চলকেও বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে দেখা হয়। এ অঞ্চলগুলোতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জিয়াউল হক জিয়াদের মতো নেতৃত্ব বিএনপি তৈরি করতে পারেনি। এ কারণে বর্তমানে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের গাইড করা হচ্ছে না। নেতাকর্মীরাও সঠিক দিকনির্দেশনা না পেয়ে অনেকটা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তাছাড়া, মামলা-জেলের ভয়ে অনেকে রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়ছেন দিন দিন। এসবকে বিএনপির সুদূরপ্রসারী ব্যর্থতা মনে করছেন অনেকে।

মেয়া/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়